স্বামীকে ধরে এনে খালপাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে রাজাকাররা ট্রাইব্যুনাল তদন্ত দলকে স্ত্রী
স্বামীকে বাজার থেকে ধরে এনে মঘিয়া খালপাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে রাজাকাররা। কার্ফু জারি থাকা সত্ত্বেও পরদিন ঘটনাস্থলে যান তিনি। সেখানে স্বামীর লাশ দেখেছেন কিন্তু রাজাকারদের ভয়ে লাশ বাড়ি নিতে পারেননি।
সেখানেই পচে গলে মাটির সঙ্গে মিশে যায় তার স্বামীর মৃতদেহ। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার জন্য শুধু তাঁর স্বামীকে নয়, আরও ১৪ সংখ্যালঘু হিন্দুকে এখানে গুলি করে লাশ ফেলে রেখে যায় রাজাকাররা। বুধবার দুপরে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত দলের সরেজমিন তদন্তকালে কচুয়ার মঘিয়া বধ্যভূমির পাশে দাঁড়িয়ে কচুয়া উপজেলার মঘিয়ার মৃত হরষিত হালদারের স্ত্রী দুলালী হালদার এভাবে স্বামীর নিহত হওয়ার বর্ণনা দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তদন্ত সংস্থার প্রধান আব্দুল হান্নান খান ও তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ হেলাল উদ্দিন।আব্দুল হান্নান খান জানান, তাঁরা রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা মাওঃ একেএম ইউসুফ আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্তে এসেছেন। মঙ্গলবার সকালে তাঁরা বাগেরহাটে আসেন। বুধবার জেলার কচুয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের অফিসে বসে এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এরপর দুপুরে মঘিয়া ও বিকেলে শাখারিকাঠী বধ্যভূমির পাশে দাঁড়িয়ে অনেকের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
এদিকে, মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাট সার্কিট হাউসে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের নির্বাচনে নিষিদ্ধ করা উচিত। চিহ্নিতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য জেলায় জেলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার ইউনিট স্থাপন করে যথাশীঘ্র বিচার সম্পন্ন করা প্রয়োজন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তদন্ত সংস্থার সমন্বকারী মুহাম্মদ আব্দুল হান্নান খান বলেন, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ও জামায়াত নেতা মাওলানা এককেএম ইউসুফের নেতৃত্বে খুলনা অঞ্চলে প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠন করে মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা, লুণ্ঠন ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ নৃশংস কর্মকা- পরিচালনা করে। ওই বাহিনীর সদস্যরা ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে এই অঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষকে হত্যা করেছে।
No comments