এশিয়া এনার্জির কয়লাখনি উন্নয়ন প্রস্তাবটি আমলযোগ্য ছিল না by ড. এম শামসুল আলম
গত ২২ অক্টোবর প্রায় সব পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে দেখা গেল, বিশেষজ্ঞ কমিটি উন্মুক্ত খনির পক্ষে সুপারিশ করেছে। ১৪ ও ৩১ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারীকৃত দুটি প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, ফুলবাড়ী খনি এলাকায় দুই বছর ধরে নির্বিঘ্নে যেন এশিয়া এনার্জি জরিপকাজ চালাতে পারে, সে জন্য স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন সহায়তা দেবে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব গ্রহণের শুরু থেকেই উন্মুক্ত খনির পক্ষে প্রচার চালাতে থাকেন এবং ১০ নভেম্বর দিনাজপুরসহ পাশের কয়েকটি অঞ্চল চার দিনব্যাপী তিনি সফর করেন। পাশাপাশি এশিয়া এনার্জির তৎপরতা নতুনভাবে চোখ পড়ে এবং উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন প্রস্তাব নিয়ে এশিয়া এনার্জি মাঠে নামে। ফলে উন্মুক্ত খনি ও এশিয়া এনার্জিবিরোধী আন্দোলন আবারও বেগবান হয়। এ প্রেক্ষাপটেই আজকের এ লেখা।
বিধান অনুযায়ী, পূর্ণাঙ্গ কয়লাখনি খনন পরিকল্পনা (Exploration Scheme) প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য লিজ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালকের কাছে দাখিল করতে হবে। ওই পরিকল্পনার সঙ্গে যেসব দলিলপত্র ও প্রমাণাদি দাখিল করতে হবে এর মধ্যে অন্যতম : (১) প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৩ শতাংশ ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল করা বাধ্যতামূলক। (২) সেই সঙ্গে পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে এবং তদনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও পরিকল্পনা প্রস্তাবের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। (৩) এ ছাড়া সামাজিক প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদনও সেই সঙ্গে থাকতে হবে। এসব শর্ত পূরণ হলেই প্রস্তাবটি আমলে নেওয়া যায়। অতঃপর অনুমোদনের লক্ষ্যে তার মূল্যায়নসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু এশিয়া এনার্জি এসব শর্ত পূরণ না করলেও ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলে নেওয়া হয়েছে এবং তা অনুমোদনের লক্ষ্যে তার মূল্যায়নসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে এশিয়া এনার্জির প্রতি সরকারের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং সরকার ও এশিয়া এনার্জি গণপ্রতিরোধের শিকার হয়। এ পরিস্থিতি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আলোচ্য প্রেক্ষাপটে গত ২৩ নভেম্বর আন্দোলনকারীরা ফুলবাড়ীতে ১৪৪ ধারা ভেঙেছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ ২০০৬ সালে ২৬ আগস্ট সম্পাদিত ফুলবাড়ী চুক্তিতে দেশ থেকে এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার, এশিয়া এনার্জির চুক্তি বাতিল ও উন্মুক্ত খনি না করার ব্যাপারে সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবিতে তারা ফুলবাড়ীতে সভা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পরে ফুলবাড়ীতে হরতাল ও অবরোধ অব্যাহত থাকে। ফলে স্থানীয় প্রশাসন সরকারের পক্ষ থেকে গত ২৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন অকার্যকর এবং ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়। তাতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত হয়। অতঃপর ভবিষ্যতে ফুলবাড়ী চুক্তি কিভাবে বাস্তবায়ন হয়, দেশবাসী তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। এর পরও এশিয়া এনার্জি নিয়ে হয়তো কথা শেষ হবে না। তাই এশিয়া এনার্জির খনি উন্নয়ন ওই প্রস্তাব নিয়ে এ লেখা।
এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাবের পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হয়। তদনুযায়ী ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২১৯৫ নম্বর স্মারক আদেশে পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অতঃপর এশিয়া এনার্জি ওই ছাড়পত্রসহ ফুলবাড়ী খনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। ওই পরিকল্পনা প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ১১ সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি ২০০৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওই বিভাগের সচিবের কাছে তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এশিয়া এনার্জির ওই খনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব নিম্নবর্ণিত কারণে ছিল অসম্পূর্ণ এবং আইনের দৃষ্টিতে তা উপযুক্ত ও আমলযোগ্য ছিল না :
১. পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদনে দেখা যায়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের ফলে Acid mine drainage material (AMD) management-এর কোনো ব্যবস্থা এ প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। পক্ষান্তরে পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লিখিত শর্তাদিতেও তা উল্লেখ করা হয়নি। এমতাবস্থায় পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হওয়া এবং পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া আইনগত কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়ে এবং তার আর কার্যকারিতা থাকে না।
২. পর্যবেক্ষণে এ-ও দেখা যায়, এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগসহ সর্বমোট প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ১২.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক গ্যারান্টির পরিমাণ ৩৭৩.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এ ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান না করেই এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। আইনের বিধান অনুযায়ী, এই ব্যাংক গ্যারান্টি না দেওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণের অনুপযুক্ত ঘোষণা করতে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালক বাধ্য। কিন্তু তা না করে আইনি বিধান লঙ্ঘন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ওই আবেদন আমলে নিয়ে তা মূল্যায়নের জন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। তদনুযায়ী এ কমিটি ওই প্রস্তাবটি মূল্যায়ন করে এবং সে মূল্যায়ন প্রতিবেদন ওই বিভাগে দাখিল করে।
৩. এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, AMD ও পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার শর্তাদি পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লেখ না থাকায় আইনি বিবেচনায় এ ছাড়পত্র ওই উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই আমলযোগ্য ছিল না। এ কারণে ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলযোগ্য নয় অভিহিত করে তাৎক্ষণিক এশিয়া এনার্জিকে এ অভিমত জানাতে কর্তৃপক্ষ আইনগত দিক দিয়ে বাধ্য ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালক আইনি কর্তৃত্ব অনুযায়ী সাড়া দেওয়ার সুযোগ পাননি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃত্ব-বহির্ভূতভাবে এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব নিজ বিবেচনায় আমলে নেয় এবং নির্ধারিত ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই অনুমোদনের লক্ষ্যে তা প্রক্রিয়াকরণ করে।
আলোচ্য প্রেক্ষাপটে ৩৭৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক গ্যারান্টি না নেওয়াসহ ওই বেআইনি কার্যকলাপের দায়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ী না করার কোনো সুযোগ নেই বলে ধারণা করা যায়। এ ছাড়া ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পের ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণের ঘোরতর আপত্তি রয়েছে এবং সে আপত্তি বিভিন্নভাবে এশিয়া এনার্জিসহ বিভিন্ন মহলকে দীর্ঘদিন ধরে অবহিত করা সত্ত্বেও সেসব তথ্য সামাজিক প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আড়াল করা হয়েছে। যার পরিণতিতে পরিশেষে সেখানকার সাধারণ জনগণকে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট বুলেটের আঘাতে প্রাণ দিতে হয়েছে এবং আহত হতে হয়েছে বহু মানুষকে। সামাজিক প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদনে এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে স্থানীয় জনসাধারণের মনোভাব বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় এ প্রতিবেদন আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ ছিল না। সে বিবেচনায়ও ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন ছিল আইনগত কারণে আমলের অযোগ্য।
যেহেতু আইনের দৃষ্টিতে এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব ওপরে উল্লিখিত কারণে আমলের অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা আমলে নেওয়া হয়েছে এবং তা অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে, সেহেতু ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব বাতিলের জন্য চলমান আন্দোলন আরো বেগবান হয়। অতঃপর এশিয়া এনার্জির ওই প্রস্তাব আমলে নেওয়া এবং প্রক্রিয়াকরণ করা ফুলবাড়ী হত্যাকাণ্ডকে অনিবার্য করে তোলে, তা অনস্বীকার্য।
এখন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কাছে আমাদের জিজ্ঞাস্য_
১) আইনের দৃষ্টিতে অকার্যকর ও বাতিলযোগ্য পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন এবং সামাজিক প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান না করে এ উভয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কেন এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণ করা হলো?
২) বিধান অনুযায়ী, রয়্যালটি ২০ শতাংশ বলবৎ থাকা সত্ত্বেও ফুলবাড়ী কয়লাখনি লিজ দেওয়া হয় ৬ শতাংশ রয়্যালটিতে। এ বিধান লঙ্ঘন আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও কেন এ অপরাধমূলক কার্যক্রম ঘটল? অথচ তার প্রতিকার কেন হলো না?
৩) ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান না করে দাখিলকৃত এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পকিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন আইনের দৃষ্টিতে বিবেচনার অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সে আবেদন কেন গ্রহণ করা হলো?
৪) সরকারি সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন গেজেটে প্রকাশ ছাড়া বৈধ হয় না। ১৯৯৮ সালে বিএইচপির চুক্তি এশিয়া এনার্জির কাছে হস্তান্তরিত হয়। তা বৈধতা পায় ১ জুন ২০০৬। অর্থাৎ বিষয়টি ওই দিন গেজেটে প্রকাশ পায়। ফলে ২০০৬ সালের ১ জুনের আগে ওই চুক্তি হস্তান্তরের সূত্রে ফুলবাড়ী কয়লাখনির ওপর এশিয়া এনার্জির স্বত্বাধিকার ছিল না। সে জন্য এশিয়া এনার্জি এ খনি উন্নয়নসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রমের যোগ্য ও উপযুক্ত ছিল না। তাহলে কিভাবে তাকে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত সমীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলো? কেন তার দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলে নেওয়া হলো?
৫) আইনি বিধান লঙ্ঘন করে এমন সব প্রক্রিয়ায় এশিয়া এনার্জির প্রতি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় এশিয়া এনার্জিবিরোধী আন্দোলন আরো বেগবান হয় এবং ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী হত্যাকাণ্ড ঘটে। তাই এ হত্যাকাণ্ড ও এশিয়া এনার্জির প্রতি অনুরাগ দেখানোর কারণে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেন দায়ী করা হবে না?
৬) বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা দোষণীয় গণ্য করে কেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
অতএব এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণ করা ওপরে বর্ণিত কারণে বেআইনি ও দেশের স্বার্থবিরোধী গণ্য করে সরকারের তা নাকচ করা উচিত ছিল। তাই এসব কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জনস্বার্থে আমরা জরুরি মনে করি। সেই সঙ্গে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে উল্লিখিত ছয়টি জিজ্ঞাসার সন্তোষজনক জবাব প্রেস নোট আকারে জনসমক্ষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রকাশ করাও জরুরি। অথচ এসব কোনো কিছুই হওয়ার নয়। গত ২৫ নভেম্বর সরকারের প্রদত্ত আশ্বাসও
বাস্তবায়িত হবে না। কারণ মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে নয়,
এশিয়া এনার্জির স্বার্থে অতীতেও কাজ করেছে,
এখনো করছে। আর এমন কাজে যদি মার্কিন
রাষ্ট্রদূতের পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ সমর্থন থাকে, তাহলে জ্বালানি উপদেষ্টা কী কারো তোয়াক্কা করেন?
১৭.১২.২০১২
লেখক : জ্বালানি বিশেষজ্ঞ
বিধান অনুযায়ী, পূর্ণাঙ্গ কয়লাখনি খনন পরিকল্পনা (Exploration Scheme) প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য লিজ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালকের কাছে দাখিল করতে হবে। ওই পরিকল্পনার সঙ্গে যেসব দলিলপত্র ও প্রমাণাদি দাখিল করতে হবে এর মধ্যে অন্যতম : (১) প্রস্তাবিত পরিকল্পনার প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৩ শতাংশ ব্যাংক গ্যারান্টি দাখিল করা বাধ্যতামূলক। (২) সেই সঙ্গে পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে এবং তদনুযায়ী পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও পরিকল্পনা প্রস্তাবের সঙ্গে দাখিল করতে হবে। (৩) এ ছাড়া সামাজিক প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদনও সেই সঙ্গে থাকতে হবে। এসব শর্ত পূরণ হলেই প্রস্তাবটি আমলে নেওয়া যায়। অতঃপর অনুমোদনের লক্ষ্যে তার মূল্যায়নসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু এশিয়া এনার্জি এসব শর্ত পূরণ না করলেও ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলে নেওয়া হয়েছে এবং তা অনুমোদনের লক্ষ্যে তার মূল্যায়নসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। ফলে এশিয়া এনার্জির প্রতি সরকারের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং সরকার ও এশিয়া এনার্জি গণপ্রতিরোধের শিকার হয়। এ পরিস্থিতি এখনো অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আলোচ্য প্রেক্ষাপটে গত ২৩ নভেম্বর আন্দোলনকারীরা ফুলবাড়ীতে ১৪৪ ধারা ভেঙেছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন বাতিলসহ ২০০৬ সালে ২৬ আগস্ট সম্পাদিত ফুলবাড়ী চুক্তিতে দেশ থেকে এশিয়া এনার্জিকে বহিষ্কার, এশিয়া এনার্জির চুক্তি বাতিল ও উন্মুক্ত খনি না করার ব্যাপারে সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে সে অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবিতে তারা ফুলবাড়ীতে সভা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় পরে ফুলবাড়ীতে হরতাল ও অবরোধ অব্যাহত থাকে। ফলে স্থানীয় প্রশাসন সরকারের পক্ষ থেকে গত ২৫ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন অকার্যকর এবং ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়নের ব্যাপারে আন্দোলনকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়। তাতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত হয়। অতঃপর ভবিষ্যতে ফুলবাড়ী চুক্তি কিভাবে বাস্তবায়ন হয়, দেশবাসী তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে। এর পরও এশিয়া এনার্জি নিয়ে হয়তো কথা শেষ হবে না। তাই এশিয়া এনার্জির খনি উন্নয়ন ওই প্রস্তাব নিয়ে এ লেখা।
এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাবের পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হয়। তদনুযায়ী ২০০৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২১৯৫ নম্বর স্মারক আদেশে পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া হয়। অতঃপর এশিয়া এনার্জি ওই ছাড়পত্রসহ ফুলবাড়ী খনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। ওই পরিকল্পনা প্রস্তাব মূল্যায়নের জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ১১ সদস্যের একটি কারিগরি কমিটি গঠন করে। এ কমিটি ২০০৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওই বিভাগের সচিবের কাছে তাদের মূল্যায়ন প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, এশিয়া এনার্জির ওই খনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব নিম্নবর্ণিত কারণে ছিল অসম্পূর্ণ এবং আইনের দৃষ্টিতে তা উপযুক্ত ও আমলযোগ্য ছিল না :
১. পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদনে দেখা যায়, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের ফলে Acid mine drainage material (AMD) management-এর কোনো ব্যবস্থা এ প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই। পক্ষান্তরে পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লিখিত শর্তাদিতেও তা উল্লেখ করা হয়নি। এমতাবস্থায় পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক গৃহীত হওয়া এবং পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়া আইনগত কারণে বিতর্কিত হয়ে পড়ে এবং তার আর কার্যকারিতা থাকে না।
২. পর্যবেক্ষণে এ-ও দেখা যায়, এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগসহ সর্বমোট প্রাক্কলিত ব্যয় ছিল ১২.৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক গ্যারান্টির পরিমাণ ৩৭৩.৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, এ ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান না করেই এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য আবেদন করে। আইনের বিধান অনুযায়ী, এই ব্যাংক গ্যারান্টি না দেওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণের অনুপযুক্ত ঘোষণা করতে কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালক বাধ্য। কিন্তু তা না করে আইনি বিধান লঙ্ঘন করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ওই আবেদন আমলে নিয়ে তা মূল্যায়নের জন্য কারিগরি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। তদনুযায়ী এ কমিটি ওই প্রস্তাবটি মূল্যায়ন করে এবং সে মূল্যায়ন প্রতিবেদন ওই বিভাগে দাখিল করে।
৩. এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয়, AMD ও পানি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার শর্তাদি পরিবেশ ছাড়পত্রে উল্লেখ না থাকায় আইনি বিবেচনায় এ ছাড়পত্র ওই উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই আমলযোগ্য ছিল না। এ কারণে ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলযোগ্য নয় অভিহিত করে তাৎক্ষণিক এশিয়া এনার্জিকে এ অভিমত জানাতে কর্তৃপক্ষ আইনগত দিক দিয়ে বাধ্য ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ খনি ও খনিজ সম্পদ ব্যুরোর পরিচালক আইনি কর্তৃত্ব অনুযায়ী সাড়া দেওয়ার সুযোগ পাননি। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃত্ব-বহির্ভূতভাবে এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব নিজ বিবেচনায় আমলে নেয় এবং নির্ধারিত ব্যাংক গ্যারান্টি ছাড়াই অনুমোদনের লক্ষ্যে তা প্রক্রিয়াকরণ করে।
আলোচ্য প্রেক্ষাপটে ৩৭৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যাংক গ্যারান্টি না নেওয়াসহ ওই বেআইনি কার্যকলাপের দায়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়ী না করার কোনো সুযোগ নেই বলে ধারণা করা যায়। এ ছাড়া ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পের ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণের ঘোরতর আপত্তি রয়েছে এবং সে আপত্তি বিভিন্নভাবে এশিয়া এনার্জিসহ বিভিন্ন মহলকে দীর্ঘদিন ধরে অবহিত করা সত্ত্বেও সেসব তথ্য সামাজিক প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আড়াল করা হয়েছে। যার পরিণতিতে পরিশেষে সেখানকার সাধারণ জনগণকে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট বুলেটের আঘাতে প্রাণ দিতে হয়েছে এবং আহত হতে হয়েছে বহু মানুষকে। সামাজিক প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদনে এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে স্থানীয় জনসাধারণের মনোভাব বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হওয়ায় এ প্রতিবেদন আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ ছিল না। সে বিবেচনায়ও ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন ছিল আইনগত কারণে আমলের অযোগ্য।
যেহেতু আইনের দৃষ্টিতে এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ওই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব ওপরে উল্লিখিত কারণে আমলের অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তা আমলে নেওয়া হয়েছে এবং তা অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে, সেহেতু ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব বাতিলের জন্য চলমান আন্দোলন আরো বেগবান হয়। অতঃপর এশিয়া এনার্জির ওই প্রস্তাব আমলে নেওয়া এবং প্রক্রিয়াকরণ করা ফুলবাড়ী হত্যাকাণ্ডকে অনিবার্য করে তোলে, তা অনস্বীকার্য।
এখন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কাছে আমাদের জিজ্ঞাস্য_
১) আইনের দৃষ্টিতে অকার্যকর ও বাতিলযোগ্য পরিবেশ প্রভাব নিরূপণ (SIA) প্রতিবেদন এবং সামাজিক প্রভাব নিরূপণ (EIA) প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান না করে এ উভয় প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কেন এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণ করা হলো?
২) বিধান অনুযায়ী, রয়্যালটি ২০ শতাংশ বলবৎ থাকা সত্ত্বেও ফুলবাড়ী কয়লাখনি লিজ দেওয়া হয় ৬ শতাংশ রয়্যালটিতে। এ বিধান লঙ্ঘন আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ হওয়া সত্ত্বেও কেন এ অপরাধমূলক কার্যক্রম ঘটল? অথচ তার প্রতিকার কেন হলো না?
৩) ব্যাংক গ্যারান্টি প্রদান না করে দাখিলকৃত এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পকিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন আইনের দৃষ্টিতে বিবেচনার অযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সে আবেদন কেন গ্রহণ করা হলো?
৪) সরকারি সিদ্ধান্ত ও অনুমোদন গেজেটে প্রকাশ ছাড়া বৈধ হয় না। ১৯৯৮ সালে বিএইচপির চুক্তি এশিয়া এনার্জির কাছে হস্তান্তরিত হয়। তা বৈধতা পায় ১ জুন ২০০৬। অর্থাৎ বিষয়টি ওই দিন গেজেটে প্রকাশ পায়। ফলে ২০০৬ সালের ১ জুনের আগে ওই চুক্তি হস্তান্তরের সূত্রে ফুলবাড়ী কয়লাখনির ওপর এশিয়া এনার্জির স্বত্বাধিকার ছিল না। সে জন্য এশিয়া এনার্জি এ খনি উন্নয়নসংক্রান্ত কোনো কার্যক্রমের যোগ্য ও উপযুক্ত ছিল না। তাহলে কিভাবে তাকে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত সমীক্ষার সুযোগ দেওয়া হলো? কেন তার দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব আমলে নেওয়া হলো?
৫) আইনি বিধান লঙ্ঘন করে এমন সব প্রক্রিয়ায় এশিয়া এনার্জির প্রতি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় এশিয়া এনার্জিবিরোধী আন্দোলন আরো বেগবান হয় এবং ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী হত্যাকাণ্ড ঘটে। তাই এ হত্যাকাণ্ড ও এশিয়া এনার্জির প্রতি অনুরাগ দেখানোর কারণে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ও বিভাগের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেন দায়ী করা হবে না?
৬) বিদ্যমান পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা দোষণীয় গণ্য করে কেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
অতএব এশিয়া এনার্জির দাখিলকৃত ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তাব অনুমোদনের আবেদন গ্রহণ করা ওপরে বর্ণিত কারণে বেআইনি ও দেশের স্বার্থবিরোধী গণ্য করে সরকারের তা নাকচ করা উচিত ছিল। তাই এসব কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জনস্বার্থে আমরা জরুরি মনে করি। সেই সঙ্গে সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে উল্লিখিত ছয়টি জিজ্ঞাসার সন্তোষজনক জবাব প্রেস নোট আকারে জনসমক্ষে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রকাশ করাও জরুরি। অথচ এসব কোনো কিছুই হওয়ার নয়। গত ২৫ নভেম্বর সরকারের প্রদত্ত আশ্বাসও
বাস্তবায়িত হবে না। কারণ মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে নয়,
এশিয়া এনার্জির স্বার্থে অতীতেও কাজ করেছে,
এখনো করছে। আর এমন কাজে যদি মার্কিন
রাষ্ট্রদূতের পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ সমর্থন থাকে, তাহলে জ্বালানি উপদেষ্টা কী কারো তোয়াক্কা করেন?
১৭.১২.২০১২
লেখক : জ্বালানি বিশেষজ্ঞ
No comments