সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র নিরাপদে রয়েছেঃ ইসরায়েল
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ তাদের মিত্র পশ্চিমা দেশগুলো সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ে উদ্বিগ্ন। দেশটির আন্দোলনকারীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে শঙ্কা তাদের। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ঘনিষ্ট মিত্র ইসরায়েল জানিয়েছে, সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র এখনও নিরাপদ।
তবে বিদ্রোহীদের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে কিনা তা স্পষ্ট করেনি ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।রোববার ইসরায়েলের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, “দেশের অনেক অংশের নিয়ন্ত্রণ প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ হারালেও সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র এখনও নিরাপদ।”
আমোস গিলাদ নামের ওই কর্মকর্তা একটি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “ আসাদ ও তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনকারীদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে। কিন্তু সিরিয়ার নেতা পদত্যাগের কোন নমুনা দেখাচ্ছেন না।”
এর আগে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিদ্রোহীদের হাতে যেন রাসায়নিক অস্ত্র না যায় সেজন্য ‘একটি বা দুটি’ জায়গায় সেগুলোকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
সার্গেই ল্যাভরভ বলেন, “আগে অস্ত্রগুলো দেশজুড়ে ‘ছড়িয়ে-ছিটিয়ে’ ছিল। আপাতত অস্ত্রগুলো ‘নিয়ন্ত্রণে’ রাখা হয়েছে।”
আমোস গিলাদ বলেন, “ধরি, তিনি (আসাদ) পদত্যাগ করলেন, বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে..মধ্যপ্রাচ্যে কে পরবর্তীতে আসবে তা আপনি জানেন না। আমাদেরকে ধীরস্থির হতে হবে; পুরো বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছে। এই মুহুর্তে রাসায়নিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিবেশি দেশ ইসরায়েলের উদ্বেগ ইসলামপন্থি ও লেবাননের হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হাতে চলে যেতে বাড়ে রাসায়নিক অস্ত্র। যদি ইসলামপন্থি বা হেজবুল্লাহ যোদ্ধাদের হাতে অস্ত্র চলে যায় তাহলে হস্তক্ষেপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসরায়েল। রাশিয়াও জানিয়েছে, রাসায়নিক অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে চলে গেলে পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে পড়বে।
পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগ, তিন সপ্তাহ আগে বিদ্রোহী যোদ্ধাদের নির্মূল করার জন্য বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহারের প্রস্তুতি নিচ্ছে আসাদ সরকার।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ঘিরে রেখেছে বিরোধীরা। দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা আলেপ্পোর গ্রামাঞ্চল ও ইদবিল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিরোধীরা।
গিলাদ বলেন, “বিরোধীরা তাকে পরাজিত করতে পারছে না এবং তিনিও (আসাদ) বিরোধীদের পরাজিত করতে পারছেন না, যদিও সিরিয়ার বৃহত্তর অংশ তার নিয়ন্ত্রণে নেই।”
বিদ্রোহীরা প্রধানত সুন্নি মুসলিমরা হামা প্রদেশের কেন্দ্রস্থলে নিজেদের শক্ত ঘাঁটি থেকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত আওলাতে গোত্রের আসাদ বিদ্রোহীদের ওপর গোলা নিক্ষেপ, বিমান হামলা এবং স্কাডের মতো ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ ন্যাটো বাহিনীর।
পশ্চিমা বিশ্বসহ কিছু আরব দেশ আসাদকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু শনিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্গেই ল্যাভরভ বলেন,“আসাদের পদত্যাগে আন্তর্জাতিক সব চেষ্টা ব্যর্থ হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আসাদকে পদত্যাগে চাপ বা তাকে নিরাপদে সরে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে রাশিয়া।”
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আশঙ্কা আসাদ (সিরিয়ার) রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে বিদায় সহিংসতা বেড়ে যাবে।
মানবাধিকার কর্মীদের দাবি, সিরিয়ায় ২০১১ সালে সরকার বিরোধী আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে ৪৪ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে ।
No comments