রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, দুর্ভোগ বাড়ছে-রাস্তায় সোয়া লাখ অনুপযুক্ত যান by আনোয়ার হোসেন
সারা দেশে প্রায় সোয়া লাখ যানবাহন ফিটনেস (উপযুক্ততা) সনদ না নিয়ে চলাচল করছে। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ বাস-ট্রাকসহ বাণিজ্যিক যানবাহন। অঙ্কের হিসাবে, এসব যানবাহনের ফিটনেস সনদ নেওয়া নিশ্চিত করা গেলে প্রতিবছর সরকারের রাজস্ব আয় হতো ৩২০ কোটি টাকা। আর বছরের পর বছর ত্রুটিমুক্ত না হয়ে রাস্তায় চলায় দুর্ঘটনা ও যেখানে-সেখানে বিকল হয়ে যানজট সৃষ্টি করে দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে এসব যানবাহন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গত নভেম্বরের এই হিসাব ধরলে, দেশে বাণিজ্যিক যানের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ। আর এক লাখ ফিটনেসবিহীন (চলাচলের অনুপযোগী) যান মোট বাণিজ্যিক যানের শতকরা ১৮ ভাগ।
কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমি এ পর্যন্ত রাজধানী ও আশপাশের ১০টি স্থানে উপস্থিত থেকে যানবাহন পরীক্ষা করেছি। পরীক্ষা করা যানবাহনের ৮০ ভাগই চলাচলের অনুপযুক্ত ও কাগজপত্র ভুয়া পেয়েছি। সব বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
বিআরটিএ উত্তর ও দক্ষিণ নামে ঢাকায় দুটি কার্যালয় আছে। একটি মিরপুরে, অন্যটি কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায়। এই দুটি কার্যালয়ের অধীনে চলাচলের অনুপযুক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৭০৩টি। চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম জেলায় অনুপযুক্ত যানবাহন চলে ৩০ হাজার ৬১১টি।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে সারা দেশে বিআরটিএর সার্কেল আছে ৫৫টি। তবে সার্বক্ষণিক কর্মকাণ্ড চলে ৪০টির মতো কার্যালয়ে। এসব কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেওয়া যানবাহনের মধ্যে ফিটনেস সনদ ছাড়া চলাচল করছে আরও ৪৫ হাজার ৮৭টি যানবাহন।
মোটরযান আইন অনুযায়ী, অন্তত ৪২টি যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক পরীক্ষার পর সব ঠিকঠাক পেলেই একটি যানবাহনকে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। ইঞ্জিনসহ অন্য যান্ত্রিক পরীক্ষাগুলো যন্ত্রের সাহায্যে করার কথা। সারা দেশে যান্ত্রিক পরীক্ষার মাধ্যমে ফিটনেস সনদ দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে ৪২ কোটি টাকায় যন্ত্র ও অবকাঠামো করা হয় বিআরটিএর পাঁচটি কার্যালয়ে। কিন্তু সেগুলো শুরু থেকেই অকেজো পড়ে আছে। এখন খালি চোখে দেখে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় যেসব গাড়ি ফিটনেস সনদ পাচ্ছে, তার একটা অংশও রাস্তায় চলাচলের উপযোগী না।
যোগাযোগমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও খালি চোখেই বাণিজ্যিক যানের (বাস-মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, ট্যাক্সিক্যাব, হিউম্যান হলার ইত্যাদি) ফিটনেস পরীক্ষা করেছেন। এখানে তাঁরা বলছেন, ৮০ শতাংশ বাণিজ্যিক যান ফিটনেস সনদ পেতে ব্যর্থ হবে। আর বিআরটিএ দাপ্তরিক প্রক্রিয়ায় যে ফিটনেস সনদ দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ১৮ শতাংশ গাড়ির ফিটনেস সনদ পাওয়ার উপযোগী নয়।
বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী একজন ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, লক্কড়ঝক্কড় যেসব গাড়ি তাঁরা রাস্তায় আটকান, তার অনেকগুলোরই ফিটনেস সদন আছে। কিন্তু এদের এই সনদ পাওয়ার কথা নয়।
কয়েকজন বাসমালিক দাবি করেন, টাকা দিলেই বিআরটিএ থেকে যানবাহন না দেখিয়ে ফিটনেস সনদ পাওয়া যায়। আর এগুলো রাস্তায় চালাতে হয় পুলিশকে ঘুষ দিয়ে। দাপ্তরিকভাবে বিআরটিএ চলাচলের অনুপযোগী যে এক লাখ ২৪ হাজার বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত যানবাহনের তালিকা করেছে, সেগুলো পুলিশকে হাত করে রাস্তায় চলাচল করে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, অনুপযুক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির রাস্তায় চলাচল বন্ধ করার দায়িত্ব পুলিশ ও বিআরটিএর। পুলিশ এই দায়িত্ব পালন করছে। বিআরটিএও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অতীতে নেওয়া হয়েছেও।
ফিটনেস না থাকলে কী সমস্যা: বিআরটিএর পরিচালক (প্রশাসন) তপন কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ফিটনেস না থাকার মানে—এসব যানবাহন যান্ত্রিক ও বাহ্যিক দুভাবেই ত্রুটিপূর্ণ। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন যত্রতত্র বিকল হয়, দুর্ঘটনা ঘটায়। জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি যানজট সৃষ্টি হয়।
তপন কুমার জানান, ফিটনেসের সঙ্গে বাণিজ্যিক যানের জন্য প্রতিবছর রোড ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর, রুট পারমিটের ফি জমা দিতে হয়। অনুপযুক্ত যানবাহনগুলো থেকে সরকার এই চার ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
রাজস্ববঞ্চিত: বিআরটিএ বলছে, অনুপযুক্ত যানবাহনের ৮০ শতাংশই বাস-ট্রাকসহ বাণিজ্যিক যান। সে হিসাবে অনুপযুক্ত বাণিজ্যিক যানবাহন প্রায় এক লাখ। বাকি ২৪ হাজার যানবাহন ব্যক্তিমালিকানাধীন, অর্থাৎ কার ও জিপ। প্রতিটি বাণিজ্যিক যানের ফিটনেস সনদের ফি, রোড ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর ও চলাচলের অনুমতির ফি হিসেবে বছরে গড়ে ২০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়। সে হিসাবে এক লাখ যানবাহন থেকে সরকার ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে কার-জিপের ক্ষেত্রে বছরে রাজস্ব দিতে হয় গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে। এ ক্ষেত্রে আরও প্রায় ১২০ কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৩২০ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, অনুপযুক্ত যানবাহনের যে তালিকা করা হয়েছে, এর মধ্যে তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে ফিটনেস সনদ নেয় না—এমন যানবাহনও আছে।
মোটরযান আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত প্রতিটি যানবাহন এক বা একাধিক শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলে তাদের তা ঠিক করে সনদ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ত্রুটি পূরণ করলে নির্ধারিত ফি ও কর নিয়ে ফিটনেস সনদ পাওয়া যায়। কিন্তু এসব যানবাহন ত্রুটি নিয়ে চললেও তা ঠিক করে ফিটনেস সনদ নিচ্ছে না।
দুর্ঘটনায় অনুপযুক্ত যান: শুধু বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার ওপর একটি সমীক্ষা চালায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে জানান, ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার ওপর চালানো সমীক্ষায় দেখা গেছে, সংঘটিত বড় ১০টি দুর্ঘটনার ছয়টিই যানবাহনের ত্রুটির কারণে ঘটেছিল। আর ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে মোট এক হাজার ১১টি। এর মধ্যে ১৫৯টি যানবাহনের ত্রুটির কারণে ঘটেছিল। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয় দুই হাজার ১৫ জন। আর যানবাহনের ত্রুটির কারণে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে মারা যায় ৬২৪ জন।
কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘আমি এ পর্যন্ত রাজধানী ও আশপাশের ১০টি স্থানে উপস্থিত থেকে যানবাহন পরীক্ষা করেছি। পরীক্ষা করা যানবাহনের ৮০ ভাগই চলাচলের অনুপযুক্ত ও কাগজপত্র ভুয়া পেয়েছি। সব বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।’
বিআরটিএ উত্তর ও দক্ষিণ নামে ঢাকায় দুটি কার্যালয় আছে। একটি মিরপুরে, অন্যটি কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায়। এই দুটি কার্যালয়ের অধীনে চলাচলের অনুপযুক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৪৮ হাজার ৭০৩টি। চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম জেলায় অনুপযুক্ত যানবাহন চলে ৩০ হাজার ৬১১টি।
ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে সারা দেশে বিআরটিএর সার্কেল আছে ৫৫টি। তবে সার্বক্ষণিক কর্মকাণ্ড চলে ৪০টির মতো কার্যালয়ে। এসব কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নেওয়া যানবাহনের মধ্যে ফিটনেস সনদ ছাড়া চলাচল করছে আরও ৪৫ হাজার ৮৭টি যানবাহন।
মোটরযান আইন অনুযায়ী, অন্তত ৪২টি যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক পরীক্ষার পর সব ঠিকঠাক পেলেই একটি যানবাহনকে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। ইঞ্জিনসহ অন্য যান্ত্রিক পরীক্ষাগুলো যন্ত্রের সাহায্যে করার কথা। সারা দেশে যান্ত্রিক পরীক্ষার মাধ্যমে ফিটনেস সনদ দেওয়ার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে ৪২ কোটি টাকায় যন্ত্র ও অবকাঠামো করা হয় বিআরটিএর পাঁচটি কার্যালয়ে। কিন্তু সেগুলো শুরু থেকেই অকেজো পড়ে আছে। এখন খালি চোখে দেখে ফিটনেস সনদ দেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় যেসব গাড়ি ফিটনেস সনদ পাচ্ছে, তার একটা অংশও রাস্তায় চলাচলের উপযোগী না।
যোগাযোগমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও খালি চোখেই বাণিজ্যিক যানের (বাস-মিনিবাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, মাইক্রোবাস, ট্যাক্সিক্যাব, হিউম্যান হলার ইত্যাদি) ফিটনেস পরীক্ষা করেছেন। এখানে তাঁরা বলছেন, ৮০ শতাংশ বাণিজ্যিক যান ফিটনেস সনদ পেতে ব্যর্থ হবে। আর বিআরটিএ দাপ্তরিক প্রক্রিয়ায় যে ফিটনেস সনদ দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ১৮ শতাংশ গাড়ির ফিটনেস সনদ পাওয়ার উপযোগী নয়।
বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী একজন ম্যাজিস্ট্রেট নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, লক্কড়ঝক্কড় যেসব গাড়ি তাঁরা রাস্তায় আটকান, তার অনেকগুলোরই ফিটনেস সদন আছে। কিন্তু এদের এই সনদ পাওয়ার কথা নয়।
কয়েকজন বাসমালিক দাবি করেন, টাকা দিলেই বিআরটিএ থেকে যানবাহন না দেখিয়ে ফিটনেস সনদ পাওয়া যায়। আর এগুলো রাস্তায় চালাতে হয় পুলিশকে ঘুষ দিয়ে। দাপ্তরিকভাবে বিআরটিএ চলাচলের অনুপযোগী যে এক লাখ ২৪ হাজার বাণিজ্যিক ও ব্যক্তিগত যানবাহনের তালিকা করেছে, সেগুলো পুলিশকে হাত করে রাস্তায় চলাচল করে।
পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, অনুপযুক্ত ও মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ির রাস্তায় চলাচল বন্ধ করার দায়িত্ব পুলিশ ও বিআরটিএর। পুলিশ এই দায়িত্ব পালন করছে। বিআরটিএও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। পুলিশের কোনো গাফিলতি থাকলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং অতীতে নেওয়া হয়েছেও।
ফিটনেস না থাকলে কী সমস্যা: বিআরটিএর পরিচালক (প্রশাসন) তপন কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ফিটনেস না থাকার মানে—এসব যানবাহন যান্ত্রিক ও বাহ্যিক দুভাবেই ত্রুটিপূর্ণ। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন যত্রতত্র বিকল হয়, দুর্ঘটনা ঘটায়। জানমালের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি যানজট সৃষ্টি হয়।
তপন কুমার জানান, ফিটনেসের সঙ্গে বাণিজ্যিক যানের জন্য প্রতিবছর রোড ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর, রুট পারমিটের ফি জমা দিতে হয়। অনুপযুক্ত যানবাহনগুলো থেকে সরকার এই চার ধরনের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়।
রাজস্ববঞ্চিত: বিআরটিএ বলছে, অনুপযুক্ত যানবাহনের ৮০ শতাংশই বাস-ট্রাকসহ বাণিজ্যিক যান। সে হিসাবে অনুপযুক্ত বাণিজ্যিক যানবাহন প্রায় এক লাখ। বাকি ২৪ হাজার যানবাহন ব্যক্তিমালিকানাধীন, অর্থাৎ কার ও জিপ। প্রতিটি বাণিজ্যিক যানের ফিটনেস সনদের ফি, রোড ট্যাক্স, অগ্রিম আয়কর ও চলাচলের অনুমতির ফি হিসেবে বছরে গড়ে ২০ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়। সে হিসাবে এক লাখ যানবাহন থেকে সরকার ২০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে কার-জিপের ক্ষেত্রে বছরে রাজস্ব দিতে হয় গড়ে ৫০ হাজার টাকা করে। এ ক্ষেত্রে আরও প্রায় ১২০ কোটি টাকা রাজস্ব পাচ্ছে না সরকার। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৩২০ কোটি টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, অনুপযুক্ত যানবাহনের যে তালিকা করা হয়েছে, এর মধ্যে তিন থেকে পাঁচ বছর ধরে ফিটনেস সনদ নেয় না—এমন যানবাহনও আছে।
মোটরযান আইন অনুযায়ী, নির্ধারিত মেয়াদ পর্যন্ত প্রতিটি যানবাহন এক বা একাধিক শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হলে তাদের তা ঠিক করে সনদ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক ত্রুটি পূরণ করলে নির্ধারিত ফি ও কর নিয়ে ফিটনেস সনদ পাওয়া যায়। কিন্তু এসব যানবাহন ত্রুটি নিয়ে চললেও তা ঠিক করে ফিটনেস সনদ নিচ্ছে না।
দুর্ঘটনায় অনুপযুক্ত যান: শুধু বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার ওপর একটি সমীক্ষা চালায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক শামসুল হক। তিনি গতকাল প্রথম আলোকে জানান, ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ওই এলাকায় ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার ওপর চালানো সমীক্ষায় দেখা গেছে, সংঘটিত বড় ১০টি দুর্ঘটনার ছয়টিই যানবাহনের ত্রুটির কারণে ঘটেছিল। আর ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে মোট এক হাজার ১১টি। এর মধ্যে ১৫৯টি যানবাহনের ত্রুটির কারণে ঘটেছিল। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয় দুই হাজার ১৫ জন। আর যানবাহনের ত্রুটির কারণে যেসব দুর্ঘটনা ঘটে, তাতে মারা যায় ৬২৪ জন।
No comments