সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী-টিআর বিতরণে টুকটাক অনিয়ম হতেই পারে

গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (টিআর) বিতরণে ‘টুকটাক কিছু’ অনিয়ম হতে পারে বলে স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম-১১ (পটিয়া) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ সামশুল হক চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি টিআর বিতরণে অনিয়মের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতা নেই বলেও দাবি করেছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এক হাজার-দেড় হাজার টন টিআর বিতরণ করেছি।


কাপড় বিক্রি করতে গেলেও ৫ শতাংশ এদিক-সেদিক হতে পারে। টুকটাক কিছু অনিয়ম হতে পারে। এটা তো বাংলাদেশ। আমি তো এক রাতে বাংলাদেশকে পাল্টে দিতে পারব না।’ তিনি প্রথম আলোতে পটিয়ার টিআর বিতরণে অনিয়ম নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে কথা বলেন। তিনি প্রথমে বলেন, ‘প্রতিবেদনটির ভেতরে কিছু নেই।’
পরে প্রতিবেদনের সপক্ষে দুটি সরকারি প্রমাণপত্রের নকল তুলে ধরা হলে সাংসদ বলেন, ‘প্রতিবেদন হওয়াতে আমি খুশি হয়েছি। সে জন্য আমি প্রতিবাদও দিইনি। আমি বিভিন্নভাবে এটা তদন্ত করার ব্যবস্থা করেছি। এক বছর পর আমি জনগণের মুখোমুখি দাঁড়াব, তখন এসব অভিযোগ নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করবে সবাই। তাই যদি কোথাও ভুল হয়ে থাকে, তাহলে তা শোধরানো যাবে।’
এর আগে লিখিত বক্তব্যে সাংসদ বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে গম, চাল ও সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের তদন্ত প্রতিবেদন মর্মে যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তা সত্য নয়।’
প্রসঙ্গত, সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দ বিতরণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের উদ্যোগ নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সাংসদ বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দের চাল, গম, টাকা বিতরণের জন্য আমি শুধু সাংসদ হিসেবে সুপারিশ করেছি। বিতরণে অনিয়ম হলেও আমি কারও ভাগ নিয়েছি কি না, সেটা দেখতে হবে। আমি যদি ভাগ নিই, আত্মসাৎ করি, সেটা হবে আমার দুর্নীতি। কিন্তু আমি আত্মসাৎ করেছি এমন প্রমাণ নেই।’
সামশুল হক বলেন, ‘মিডিয়ায় আমার বিরুদ্ধে অনেক কথা লেখা হচ্ছে। কিন্তু আমি মিডিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে তাদের সঙ্গে যুদ্ধে নামতে চাই না।’
প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকার প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল, পটিয়ার আশিয়া ইউনিয়নের কমলাপাড়া গ্রামে লোকনাথ মন্দির নামের একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে টিআর বরাদ্দ দেওয়া হয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন যুবককে। তাঁদের মন্দির কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দেখানো হয়।
লোকনাথ মন্দিরের বিষয়ে সাংসদ বলেন, ‘বর্তমান সরকার অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। তাই লোকনাথ মন্দিরে মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজনকে সভাপতি-সম্পাদক বানানো হয়েছে এবং তাঁদের হাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম সামশুজ্জামান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক বিজন চক্রবর্তী, পৌরসভার মেয়র হারুনুর রশীদসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা।

No comments

Powered by Blogger.