তিসত্মা প্রাণ পাচ্ছে_ উজান থেকে পাঁচ হাজার কিউসেক পানি ৬ বছরে প্রথম- সেচ খালে পানি, বোরোর চারা রোপণ শুরম্ন by মামুন-অর-রশিদ
তাহমিন হক ববি শেখ হাসিনার ভারত সফরের ফিডব্যাক হিসেবেই তিসত্মায় পানি আসতে শুরম্ন করেছে। ছয় বছর পর এবারই প্রথম অলিখিত সন্ধির শর্তানুযায়ী চলমান শুষ্ক মৌসুমে ২ হাজার ৭শ' কিউসেক পানি পাওয়ার কথা থাকলেও এখন তিসত্মায় সাড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার কিউসেক পানি রয়েছে। পানির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো দাবি করেছে।
তিসত্মার ধুধু বালুচরে পানির খবরে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অনাবিল আনন্দ আর অকৃত্রিম উচ্ছ্বাস তাদের নিয়ে যাচ্ছে বীজতলায়। তিসত্মা ব্যারাজের সেচ প্রকল্পের আওতায় সেচনির্ভর বোরো আবাদে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তিসত্মা পারের জেলেরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরম্ন করেছেন, এবার বুঝি তাদের ঝুড়িতে মাছ উঠবে, কাটবে অনাহার-অর্ধাহার। ৰুধার দুঃস্বপ্ন হয়ত তাদের আর তাড়া করে ফিরবে না।উজানের ভারত থেকে বাংলাদেশের নীলফামারীর ভাটিতে এসে তিসত্মা কুড়িগ্রামে গিয়ে ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলেছে। এই ২২০ কিলোমিটার নদীকে ঘিরে দু'পারের যেসব মানুষ গড়ে তুলেছিল বসতি ও জীবিকা, প্রকৃতি এঁকেছিল জলরঙে সবুজের ছবি, যা ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছিল, বিপন্ন হয়ে পড়ছিল পরিবেশ। তিসত্মার পানি চুক্তি হলে নিয়মিত পানি পাওয়া যাবে এবং জীবন ফিরে পাবে তিসত্মা। আবার বইবে তিসত্মার জীবন স্রোত। যেখানে কৃষকের হাসি আর জেলেদের দু'মুঠো খাবারের সন্ধান পাওয়া যাবে। সে কারণেই তিসত্মার পানি চুক্তি এখন একানত্ম আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
তিসত্মার পানি প্রবাহের এক জরিপ রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায়, ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে তিসত্মায় পানি প্রবাহ ছিল ১০৩৩ কিউসেক, ২০০০ সালে ৪৫৩০ কিউসেক, ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ১৪০৬ কিউসেক, ২০০২ সালে ১০০০ হাজার কিউকে, ২০০৩ সালে ১১০০ কিউসেক, ২০০৬ সালে ৯শ' ৫০ কিউসেক, ২০০৭ সালে ৫শ' কিউসেক, ২০০৮ সালে ১৫০০ কিউসেক। বর্তমানে এবার রেকর্ড পরিমাণ পানি এ পর্যনত্ম যাচ্ছে প্রায় ৫ হাজার কিউসেক।
তিসত্মার বর্তমান পানি দিয়ে তিসত্মা ব্যারাজের সেচ প্রকল্পের আওতায় সেচনির্ভর বোরো আবাদে কৃষকরা সেচ পেতে শুরম্ন করেছে। তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন ম-ল জানান, তিসত্মায় এখন পর্যনত্ম সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার কিউসেক পানি পাওয়া যাচ্ছে। তা দিয়ে আপাতত সেচ খালে পানি দেয়া শুরম্ন করা হয়েছে। পানির হিস্যা বাসত্মবায়ন হলে এবং তিসত্মার উজানের পানি প্রবাহ ১৫ থেকে ২০ হাজার কিউসেক হলে নদীর স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে। টার্গেট মতো জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে। সফল হবে প্রথম ও দ্বিতীয় ফেজের সেচ পরিধি।
বর্তমান অবস্থায় তিসত্মার পানির সেচে জোর কদমে চলতি বোরো আবাদে কৃষকরা চারা রোপণের কাজ শুরম্ন করে দিয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের নীফলামারী জেলার দিনাজপুর ও রংপুর খালের আওতাভুক্ত কৃষকরা এখন সেচ পাচ্ছে।
সিকিম থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত তিসত্মার দৈর্ঘ্য ৩শ' ১৫ কিলোমিটার। বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ১শ' ১৩ কিলোমিটার। প্রস্থ ৯শ' ৫০ কিলোমিটার। তিসত্মার মোট অববাহিকার পরিমাণ ১৭শ' ১৯ বর্গকিলোমিটার। ১৯৯০ সালে তিসত্মা ব্যারাজের কাজ শুরম্ন হয়। '৯৮ সালের জুন মাসে ব্যারাজ নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ১৯৭২ সালে গঠিত যৌথ নদী কমিশন এখন পর্যনত্ম জীবনবান্ধন পানি বণ্টন নিশ্চিত করতে পারেনি। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর উপলৰে ঢাকায় যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে তিসত্মাই ছিল আলোচিত বিষয়। হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে লালমনিরহাটে গড়ে তোলা তিসত্মা ব্যারাজ আজ উপযোগহীন হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তিন দিনের সরকারী সফরে ভারত গিয়ে তিসত্মার কথা ভোলেননি। তিনি বিষয়টি শীর্ষ বৈঠকে আলোচনায় নিয়ে আসেন। এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দেয়া নৈশভোজেও তিনি তিসত্মার বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে আসেন। তিসত্মার পানি বণ্টন পরিস্থিতির বর্তমান বাসত্মবতা, দু'দেশের সমানুপাতিক স্বার্থ সংরৰণের উপায় খুঁজে বের করে খুব শীঘ্রই চুক্তির ব্যাপারে দু' প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, শীর্ষ বৈঠকে আলোচনার অগ্রগতি হিসেবে এবং দু'দেশের সম্পর্কে আস্থার ভিত আরও দৃঢ় করতেই ধুধু বালুচরে পরিণত হওয়া তিসত্মায় পানি আসছে। গত তিন দিন ধরে পানি পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে চার থেকে ৫ হাজার কিউসেক পর্যনত্ম। এতে মাঝিমালস্ন-া, জেলে আর কৃষকদের মন আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছে। ডিমলার পারবাইশপুকুর গ্রামের জেলে একাব্বর আলীর চোখেমুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠেছে। এবার তিসত্মায় পানি পাওয়া যাচ্ছে। মাছ পাবে_ এমন স্বপ্নে বিভোর জেলের প্রত্যাশা এবার সংসারের অভাব দূর হবে, কষ্ট কেটে যাবে। তিসত্মার পানি চুক্তির আগেই চলতি মৌসুমে উজান থেকে পানি আসছে তিসত্মায় এই দৃশ্য দেখে তিসত্মা পারের মানুষজন খুব খুশি। অথচ গত বছরেও নদীর দিকে পা দিয়েও ডিমলার পারবাইশপুকুর গ্রামের জেলে একাব্বর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরেছিল খালি হাতে। ভাঁড়ের শূন্যপ্রায় হাঁড়িতে খেলা করেছিল ৪/৫টি বৈরালি মাছের পোনা। এই ক'টি মাছ না হবে বিক্রি, না যাবে একবেলা শুকনো ভাতের সঙ্গে খাওয়া। ডিসেম্বর থেকে তাদের চলছে এমনই পরিস্থিতি। প্রতিদিন ভোরে হাঁড়ি ভর্তি মাছ নিয়ে বাড়ি ফেরার আশা নিয়ে তিসত্মায় নামলেও সন্ধ্যায় কানত্ম হয়ে একাব্বরদের প্রতিদিন ফিরতে হয়েছে প্রায় শূন্য হাতে। শুধু জেলে একাব্বর আলী নয়, নদীপারের হাজারো মাঝিমাল-া আর জেলেদের সংসারে এই শুষ্ক মৌসুমে বেকার হয়ে থাকতে হতো। এবার হয়ত তাদের আর মৌসুমী বেকারত্বের অভিশাপ পোহাতে হবে না।
তাছাড়া এই তিসত্মার পানি দিয়ে তিসত্মা ব্যারাজের সেচ প্রকল্পের আওতায় সেচনির্ভর বোরো আবাদের কৃষকদের মাঝেও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন ম-ল জানান, তিসত্মায় এখন পর্যনত্ম যে পানি পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে তিন থেকে ৫ হাজার কিউসেক পর্যনত্ম। তা দিয়ে আপাতত সেচ খালে পানি দেয়া শুরম্ন করা হয়েছে। উজানের পানি প্রবাহ ১৫ থেকে ২০ হাজার কিউসেক হলে নদীর স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে। আর বোরো আবাদে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ দেয়া সম্ভব হবে। তার পরেও উজান থেকে এখন পর্যনত্ম যে পানি পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে আপাতত সেচ কার্যক্রম শুরম্ন করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে তিসত্মায় পানি পাওয়ার আনন্দে তিসত্মা সেচ প্রকল্পের আওতাধীন কৃষকদের ঘরে ঘরে বইছে খুশির বন্যা। তারা জোর কদমে আসন্ন ইরি-বোরো আবাদে বীজতলা রোপণের কাজ শুরম্ন করে দিয়েছে। প্রকৃতির কোলে সৃষ্টি এক কালের স্রোতস্বিনী পাহাড়ী নদী তিসত্মা। উজানে ভারতের গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে এ নদীর উচ্ছল দুর্বার গতিকে রোধ করা হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন ক্যানেলের মাধ্যমে নদীর স্রোত ঘুরিয়ে দিয়ে তার বুক থেকে পানি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর এই বাসত্মবতায় মরে যেতে শুরম্ন করে তিসত্মা। এ নদীর পারে দাঁড়ালেই বাতাসে কান পাতলে শুনতে পাওয়া যায় ীণকায় তিসত্মার দীর্ঘশ্বাস আর গুমড়ে ওঠা কান্নার শব্দ।
তিসত্মা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দিনাজপুর খালের দুন্দিবাড়ী থেকে চাঁদেরহাট পর্যনত্ম প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা সরেজমিন ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের বোরো বীজতলা রোপণের কাজ চলছে। তারা প্রধান ও শাখা খালের মাধ্যমে তিসত্মা সেচ প্রকল্পের পানি পেতে শুরম্ন করেছে। রামনগর গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে কৃষক মাহফুজার রহমান (৩৮) বলেন, ক্যানেলের উভয় প্রানত্মে আমরা প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি।
উলেস্নখ্য, ভারতের জলপাইগুড়ির গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে তিসত্মার পানি আটকে দেয়ায় ইতোমধ্যে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিসত্মা ও ধরলার বুকে জেগে উঠেছে অসংখ্য চর। ১৯৮৩ সালের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এবং ১৯৯৯ সালে যৌথ নদী কমিশনের সিদ্ধানত্ম অনুযায়ী শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশকে ২ হাজার ৭শ' কিউসেক পানি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এভাবে শুষ্ক মৌসুমে একতরফা পানি প্রত্যাহারে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিরান মরম্নভূমিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে তিসত্মা প্রকল্পের আওতাধীন সাড়ে পাঁচ লাখ হেক্টর আবাদী জমি। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে গজলডোবার ভারতীয় বাঁধের ৫৪টি গেট খুলে দেয়ায় উত্তরাঞ্চলের বিসত্মীর্ণ এলাকা পস্নাবিত হয়। শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশকে ২ হাজার ৭শ' কিউসেক পানি সরবরাহের কথা রয়েছে। কিন্তু গত বছর এই পানি প্রবাহের পরিমাণ ছিল মাত্র ৫৪৫ কিউসেক, যা স্বাভাবিক প্রবাহের মাত্র ১০ ভাগ। শুষ্ক মৌসুমে স্বাভাবিক পানি প্রবাহের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৫/৬ হাজার কিউসেক। তবে এবার পানির প্রবাহ ছিল সর্বনিম্নে। এক সপ্তাহ আগে পানির প্রবাহ মাত্র ৩শ' কিউসেক। বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবাহের পরিমাণ ১০ হাজার কিউসেক ছাড়িয়ে যায়। ভারত ২ হাজার ৯শ' ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পানি প্রবাহের মাধ্যমে ১ হাজার ৫শ' কিউসেক পানি মহানন্দা নদীতে নিয়ে যায়। ভারত পানির গতি পরিবর্তন করে দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও মালদহে সেচ ব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছে। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুযায়ী শতকরা ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ ৩৯ ভাগ ভারত এবং বাকি ২৫ ভাগ নদীতে সংরৰিত থাকবে। বাংলাদেশের তিসত্মা ব্যারাজে সেচ প্রকল্পের আওতাধীন জমির পরিমাণ ৭ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর। সেচ সুবিধার আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ ৫ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর।
হাসিনা-মনমোহন শীর্ষ বৈঠকে তিসত্মা ব্যারাজ নিয়ে কাঙ্ৰিত চুক্তি ত্বরান্বিত করতে দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজ নিজ পানিসম্পদমন্ত্রীকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই চুক্তির মাধ্যমে তিসত্মার পানি বণ্টনে সমানুপাত নিশ্চিত করা হবে। আগামী তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ মার্চ নাগাদ এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধানত্মে পেঁৗছানোর ব্যাপারে দু'দেশ ঐকমত্যে পেঁৗছেছে। শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন বাংলাদেশে আসবেন তখন এই চুক্তি হতে পারে বলে সংশিস্নষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে। বহু কাঙ্ৰিত তিসত্মা চুক্তি না হওয়ায় দু'দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে শীর্ষ দু'নেতা এই নির্দেশ দেন। তিসত্মার পানি রাজনীতিতে ভারত উদার না হলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তিন জেলা নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার বিসত্মীর্ণ জনপদ মরম্নভূমিতে পরিণত হবে। অবশ্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মৌর্য শেরাটন হোটেলে 'কমল মিলনায়তনের' বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে ভারতকে আরও উদার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
No comments