‘এহন হরতাল আলারা কি আমার সংসার চালায়ে দেবেনে?’ by কাজী আবদুল্লাহ
ও আল্লাহ, যারগে জন্নি আমি শেষবারের মতো আমার স্বামীর মুখখান দেখতি পাল্লাম না, যাগে জন্নি আমার ছেলে-মেয়েরা তাগে বাপের মুখটা দেখতি পাল্লো না, সেই হরতাল আলাগে তুমি বিচার করো’—এ কথা বলেই জ্ঞান হারালেন গতকাল শনিবার রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ঈগল পরিবহনের চালক বদর আলী বেগের (৪৮) স্ত্রী হাওয়া বেগম (৪২)।
গতকাল খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের পূর্বপাড়ায় বদর আলী বেগের বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়। ওই সময় মায়ের পাশে বসে ছিল ছোট মেয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী আইরিন আকতার।
জ্ঞান ফেরার পর হাওয়া বেগম আবারও বলতে শুরু করেন, ‘আমি এখন কিস্তি শোধ করব কেমনেরে? আর এই অসুস্থ ছাবাল আর মায়ের খাওয়া-পরা চালাবানি কেমনেরে? আপনারা বলতি পারো?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী সৎ ছিল বলে গাড়িত্তে বেশি টাকা আনতি পাত্তো না। আমি কলি সে কতো, মালিকিরি চুরি করে আমি টাহা আনতি পারব না। আপনারা দ্যাহেন আমাগে কিচ্ছু নেই। এহন হরতাল আলারা কি আমার সংসার চালায়ে দেবেনে?’ এরপর তিনি নিজেই বলেন, ‘দেবে না’। এ কথা বলে আবারও জ্ঞান হারান তিনি।
নিহত বদর বেগের শ্যালক মুনসুর গাজী (৩০) বলেন, ‘আজ শুধু হরতালের জন্নিই আমার ভগ্নিপতি মরেছে। হরতাল আলাগে তো আর কিচ্ছু হবে না। দ্যাখেন আমাগের মতো গরিবরাই শুধু মরে।’
বদর বেগের একমাত্র ছেলে শামীম আলী বেগ (২৫) ছোটবেলা থেকেই রোগা-অসুস্থ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ, এর তো কোনো (হত্যার) বিচারও হবে না।’
হাওয়া বেগম জানান, স্বামীর সঙ্গে তাঁর গতকাল দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সর্বশেষ কথা হয়। স্বামী জানান, সারা রাত জাগার পর গাড়িতে ঘুমাচ্ছেন। কাল (আজ রোববার) বাড়ি আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই মুঠোফোনে স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। হাওয়া বেগমের আক্ষেপ, ‘যদি অ্যাক্সিডেন্ট করে মরত্তো, তালিউ তো ছাবাল মায়েরা তার বাপের মুখখান দেখতি পাত্তো।’
এদিকে খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ফুলতলা উপজেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জীত বসু বলেন, বদর হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে শ্রমিকেরা সন্ধ্যা সাতটার দিকে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘বদর হত্যার প্রতিবাদে আমরা শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে ঢাকা রুটের সব গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, হরতালের পর আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
জ্ঞান ফেরার পর হাওয়া বেগম আবারও বলতে শুরু করেন, ‘আমি এখন কিস্তি শোধ করব কেমনেরে? আর এই অসুস্থ ছাবাল আর মায়ের খাওয়া-পরা চালাবানি কেমনেরে? আপনারা বলতি পারো?’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী সৎ ছিল বলে গাড়িত্তে বেশি টাকা আনতি পাত্তো না। আমি কলি সে কতো, মালিকিরি চুরি করে আমি টাহা আনতি পারব না। আপনারা দ্যাহেন আমাগে কিচ্ছু নেই। এহন হরতাল আলারা কি আমার সংসার চালায়ে দেবেনে?’ এরপর তিনি নিজেই বলেন, ‘দেবে না’। এ কথা বলে আবারও জ্ঞান হারান তিনি।
নিহত বদর বেগের শ্যালক মুনসুর গাজী (৩০) বলেন, ‘আজ শুধু হরতালের জন্নিই আমার ভগ্নিপতি মরেছে। হরতাল আলাগে তো আর কিচ্ছু হবে না। দ্যাখেন আমাগের মতো গরিবরাই শুধু মরে।’
বদর বেগের একমাত্র ছেলে শামীম আলী বেগ (২৫) ছোটবেলা থেকেই রোগা-অসুস্থ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা তো গরিব মানুষ, এর তো কোনো (হত্যার) বিচারও হবে না।’
হাওয়া বেগম জানান, স্বামীর সঙ্গে তাঁর গতকাল দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে সর্বশেষ কথা হয়। স্বামী জানান, সারা রাত জাগার পর গাড়িতে ঘুমাচ্ছেন। কাল (আজ রোববার) বাড়ি আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরই মুঠোফোনে স্বামীর মৃত্যুর খবর পান। হাওয়া বেগমের আক্ষেপ, ‘যদি অ্যাক্সিডেন্ট করে মরত্তো, তালিউ তো ছাবাল মায়েরা তার বাপের মুখখান দেখতি পাত্তো।’
এদিকে খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ফুলতলা উপজেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জীত বসু বলেন, বদর হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে শ্রমিকেরা সন্ধ্যা সাতটার দিকে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করেন। আধা ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
খুলনা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘বদর হত্যার প্রতিবাদে আমরা শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে ঢাকা রুটের সব গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছি।’ তিনি বলেন, হরতালের পর আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
No comments