কর্ণফুলীর পাড়ে অতিথি পাখির কলরব by প্রণব বল
তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতেও পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগে। শীতের শুষ্কতায় সবুজ প্রকৃতি পত্রপল্লবশূন্য হয়ে পড়লেও অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে দেশের হাওর, বিল-ঝিল, নদীর চর ও উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী, কেইপিজেড, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁশখালী ইকোপার্কসহ নিরুপদ্রব অঞ্চল এখন এসব পাখির অভয়ারণ্য। বিভিন্ন প্রজাতির জলচর পরিযায়ী পাখির কলরব আর জলকেলি, ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়ার দৃশ্য মন ভরিয়ে দিচ্ছে স্থানীয় আশপাশের বাসিন্দাদের; এসব স্থানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের ভ্রমণে যোগ করছে বাড়তি আনন্দ।
সাধারণত অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে পরিযায়ী পাখি শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাওর-ঝিলে আসতে শুরু করে। শীতের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি-মার্চ পর্যন্ত এসব পাখির বিচরণ এখানে দেখা যায়। শীতের মৌসুমে এখানে থাকে বলে সাধারণত ‘অতিথি পাখি’ বলেই এদের পরিচিতি। শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি এ সময় বাংলাদেশে আসে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের আনোয়ারার কোরীয় ইপিজেড (কেইপিজেড) এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও অসংখ্য অতিথি পাখির সমাগম ঘটেছে। এখানকার ১৭টি কৃত্রিম জলাধারে তাদের বিচরণ।
কেইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৭টি জলাধারে প্রতিবছরের মতো এবারও অতিথি পাখি এসেছে। এটি অভয়ারণ্য।’ কেইপিজেডের পাশে শিকলবাহা বিদ্যুৎকেন্দ্রসংলগ্ন কর্ণফুলী নদীর চরেও এসেছে বিভিন্ন প্রজাতির জলচর অতিথি পাখি। বাঁশখালী ইকোপার্কেও দেখা গেছে অতিথি পাখির ঝাঁক। তবে কোথাও কোথাও অতিথি পাখি শিকারিদের কবলেও পড়ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহসান বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রতিবছর শতাধিক প্রজাতির অতিথি পাখি আসে। এরা সাধারণত নিরুপদ্রব এলাকা বেছে নেয়। ইদানীং অতিথি পাখি আসার হার এখন আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। নানা কারণে এটা হতে পারে। এর মধ্যে দুটি কারণ হলো, যেসব এলাকায় এসব পাখি আশ্রয় নেয়, তার পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া ও শিকারিদের উৎপাত।’
কর্ণফুলীর পাড় কলকাকলিতে মুখর করে রাখা এসব অতিথি পাখির ঝাঁক বেঁধে উড়ে চলার মনোরম দৃশ্য এ মৌসুমে দেখা যাবে আরও মাস দুয়েক।
No comments