একুশ শতক- বিশ একুশের বিজয় দিবসের স্বপ্ন-দুই by মোসত্মাফা জব্বার
আমরা স্বপ্ন দেখি, এই সময়ের শেষে পুরো দেশে দারিদ্র্য সীমার নিচে কোন মানুষ বসবাস করবে না। দেশে নূ্যনতম সচ্ছল মানুষ সবাই হবে। সমাজে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক_এমন খুব বেশি ধনী কোন মানুষ বা পরিবার থাকবে না।
লুটেরা বিকারগ্রসত্ম ধনবাদী শিল্পগোষ্ঠীর বিপরীতে রাষ্ট্রীয় সম্পদে জনগণের মালিকানা বা সামাজিক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে। বড় বড় শিল্প-কল-কারখানা থাকবে। তবে এসব কারখানার শেয়ারহোল্ডাররা বা মালিক থাকবে সাধারণ জনগণ। দেশে ব্যাপকভাবে ছোট ও মাঝারি পুঁজির বিকাশ ঘটবে। এসব পুঁজি হবে ব্যক্তি বা পারিবারিক মালিকানার। তবে রাষ্ট্রীয় নীতিমালার জন্য ধনী আরও ধনী হবার সুযোগ পাবে না। মাঝারি আয়ের মধ্যবিত্তের সংখ্যাই অধিক হবে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিৰা, নিরাপত্তা কোনটাই কোন মানুষের সঙ্কট হবে না। সবাই তার নূ্যনতম প্রয়োজন মেটাতে পারবে। অন্নের অভাবে পড়বে না কোন মানুষ। সারাদেশে থাকবে না কোন বস্ত্রহীন মানুষ। ছিন্নমূল বাসস্থানহীন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না। রাসত্মায় ভিৰুক পাওয়া যাবে না। সরকারী-খাস জমি, ফুটপাথ, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাট বা অন্য কোথাও ঝুপড়ি ঘরের বসত্মিতে কেউ বাস করবে না। নিজের হোক, ভাড়ায় হোক একটি নিরাপদ আবাস প্রতিটি মানুষের থাকবে। প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সেবা পাওয়া যাবে। বিনা চিকিৎসায় মরবে না কেউ। প্রতিটি মানুষের জন্য ডাক্তার-হাসপাতাল-ওষুধ পাওয়া যাবে। গ্রামের হোক আর শহরের হোক নূ্যনতম চিকিৎসার ব্যবস্থা সকলের জন্যই বিরাজ করবে। সরকার সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। বেনিয়া চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা সে পেতে পারবে। ডিজিটাল যন্ত্র প্রতিটি মানুষের কাছে সেই সুযোগ পেঁৗছে দেবে। এমনকি দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞদের কাছে একজন সাধারণ মানুষকে পেঁৗছানোর ব্যবস্থা করে দেবে রাষ্ট্র।রাজনীতি হবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিনির্ভর। রাজনৈতিক দলগুলো ডিজিটাল উপায়ে তাদের দলের ও রাজনীতির ব্যবস্থাপনা করবে এবং জনমত গঠনের জন্য ডিজিটাল উপায় ব্যবহার করবে। তাদের নিজস্ব তথ্য ভা-ারের পাশাপাশি জনমত জরিপের ব্যবস্থা থাকবে এবং তাদের রাজনীতিতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে।
পুরো দেশটির প্রতি ইঞ্চি মাটি তার বা বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থায় উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড সংযোগে যুক্ত থাকবে। ব্রডব্যান্ড সংযোগের বলতে গেলে কোন দাম থাকবে না। এক গিগাবিট বা তারও বেশি ব্যান্ডউইথ সাধারণ গৃহিণী বা ছাত্র-ছাত্রীরা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবে। তার জন্য হয়ত কয়েক শ' টাকা মাসিক ফিস দিতে হবে। মানুষের জীবনধারায় ইন্টারনেট হবে অপরিহার্য জিনিস। দেশের যে কোন স্থানে ডিজিটাল যন্ত্র দিয়ে ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। জীবনের সকল কাজের কেন্দ্রে থাকবে ইন্টারনেট। এমনকি ব্যক্তি-পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, যোগাযোগ, বিয়ে শাদি, প্রেম-ভালবাসার কেন্দ্র হবে ফেসবুক, মাইস্পেস, হাই-৫, টুইটার ইত্যাদি সোসাল নেটওয়ার্ক বা ইন্টারনেটের অন্য কোন ব্যবস্থা। হয়ত ততদিনে নতুন কোন ফেসবুকের জন্ম হবে-ইন্টারনেট ২ হয়ত ৫.০ সংস্করণে যাবে। মোবাইল নেটওয়ার্ক যাবে ৭জিতে। ভিডিও মোবাইল ফোন কোন আলাদা বিষয় হবে না। প্রতিটি মোবাইলেও এটি সাধারণ বিষয় হয়ে যাবে। ইন্টারএ্যাকটিভিটির সাথে মাল্টিমিডিয়া যুক্ত হয়ে ইন্টারনেট হবে এক নতুন অভিজ্ঞতা। মানুষের হাতের কাছে এমন যন্ত্র থাকবে না যা দিয়ে ইন্টারনেটে প্রবেশ করা যাবে না। এখন যেমনটি ঘড়ি আর রেডিওর ৰেত্রে ঘটেছে তেমনটি ইন্টারনেটের ৰেত্রে দেখব আমরা। মানুষের হাতের কাছের যন্ত্র মানেই হবে ইন্টারনেটসম্পৃক্ত। এমন হবে যে ফ্রিজ, ওভেন বা দরোজার সিকিউরিটি থেকে আমরা মেইল/এসএমএস পাঠাব বা মেইল/এসএমএস পেতে পারব। ইন্টারনেটে খুব দ্রম্নতগতির ব্যান্ডউইথ থাকবে এবং এর বদৌলতে ভিডিও প্রোগ্রাম অতি সহজ হয়ে যাবে। মানুষ মানুষের সাথে ভিডিওতে পরিচিত হবে এবং ফেসবুকসহ সকল সামাজিক নেটওয়ার্ক রিয়েলটাইম অনলাইন ভিডিওনির্ভর হবে। রেডিও-টিভি-সংবাদপত্র বলতে কেবলমাত্র সম্প্রচারিত বা প্রকাশিত রেডিও-টিভি-সংবাদপত্রকে বোঝাবে না_ব্যক্তিগত ইন্টারনেট চ্যানেল অতি গুরম্নত্বপূর্ণভাবে মানুষের তথ্যপ্রাপ্তির বড় সুযোগ তৈরি করে দেবে। স্বীকৃত সাংবাদিকতার বাইরে নাগরিকেরা সাংবাদিকতায় অনেক সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন।
বাংলাদেশের ইন্টারনেটের শুধু নাম নয় সকল পর্যায়ের ভাষা হবে বাংলা। দেশের মানুষ তার নিজের ভাষায় তার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পাবে এবং নিজেরা মাতৃভাষাতেই যোগাযোগ করবে। বিশ্বজুড়ে ইংরেজীর আধিপত্য কমে যাবে। বিশ্ববাসী তাদের মাতৃভাষার মর্যাদাকে অনেক বেশি বড় করে দেখবেন। আমাদেরকে ইংরেজী শিখতে পরামর্শদাতারা তখন আর বড় করে ইংরেজীর প-িত হতে বলবেন না। বিবিসি বা ব্রিটিশ কাউন্সিলের ইংরেজী শেখানোর দাপট কমে যাবে। ছেলেমেয়েরা আইএলটিএস দেবার জন্য পাগল হয়ে যাবে না। ইন্টারনেটের জন্য তো বটেই সকল কাজেই ততদিন কীবোর্ডনির্ভরতা বা বিশেষত ইংরেজীর মতো কোয়ার্টি কীবোর্ড ব্যবহার করা কমে যাবে। মানুষ হয়ত মুখে বলবে এবং যন্ত্র তাকে মুখের বা লিখিত ভাষায় রূপানত্মর করবে।
জাতীয় সংসদ হবে ডিজিটাল। এই সংসদের সংসদ সদস্যরা ডিজিটাল জীবন যাপনে অভ্যসত্ম হবেন এবং তাঁদের সকল কাজ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হবে। তাঁরা সকলেই ডিজিটাল যন্ত্র ব্যবহার করবেন এবং সংসদের সকল কর্মকা- ডিজিটাল উপায়ে প্রকাশিত হবে ও দেসবাসীর কাছে সহজলভ্য হবে। কোন সাংসদ নিজে উপস্থিত না থেকেও সংসদের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। জনগণও সংসদের কাজকর্মে অংশ নিতে পারবেন। রাজনীতি নষ্টামিতে ভরা থাকবে না। দুর্বৃত্তায়ন পাওয়া যাবে না তাতে। রবে না লুটেরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি। মানুষ রাজনীতিবিদদের চোর-মহাচোর বলবে না, সম্মানের চোখে দেখবে তাদের। রাজনীতিবিদদের দেশপ্রেমিক বলে মনে করা হবে। রাজনীতিকরা গম বিলি, টিন আত্মসাত, মামলাবাজি, দলবাজি, কমিশনবাজি এসব করবেন না। তাঁদের হ্যামার-জাগুয়ার-মার্সিডিজ বেঞ্জ থাকবে না, মগজের ধার থাকবে। সংসদ সদস্যগণ উপজেলা পরিষদ বা টিআর-এর পেছনে লেগে থাকবেন না। তাঁরা জাতীয় সংসদে বসে আইন প্রণয়নে নিমগ্ন থাকবেন। তাঁরা দেশের জন্য একুশ শতকের আইন প্রণয়ন এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মানুষের করণীয় বিষয়াদি নিয়ে গবেষণা করবেন ও জাতিকে দিকনির্দেশনা দেবেন। দেশে একটি সচেতন নাগরিক সমাজ দেশবাসীর সকল ধরনের বিষয়াদিসহ মানবাধিকারের বিষয়সমূহও মনিটর করবে।
প্রশাসনে স্পিড মানির প্রয়োজন থাকবে না। কাজ হবে আপন গতিতে। টিআইবির অফিস তালাবদ্ধ হয়ে যাবে। দেশজুড়ে বিরাজ করা তাদের শাখা অফিসগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর সরকার হবে দৰ ও জনগণের সেবক। সরকারের সকল তথ্য নাগরিকেরা যেকোন সময় যেকোন স্থান থেকে জানতে পারবে। বিচার হোক আর সরকারের কাছে কোন আবেদন হোক, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন বা অন্য কোন ডিজিটাল যন্ত্রে ডিজিটাল উপায়ে নাগরিকেরা সরকারের কাছে পেঁৗছাতে পারবে। কাউকে সশরীরে সরকারী অফিসে আসতে হবে না। সরকারের নাগরিক সেবা হবে এমন যেন সরকারী অফিস নামক কোন বস্তু অদৃশ্যে বসবাস করে। সরকারের সকল তথ্য থাকবে ডিজিটাল পদ্ধতিকে সংরৰিত করা। তারা নিজেরা এবং অন্যের সাথে যোগাযোগ করবেন ডিজিটাল উপায়ে। কাগজের ফাইল বা কাগজের চিঠি দুর্লভ বস্তুতে পরিণত হবে এবং সেইসব দেখার জন্য মানুষ জাদুঘরে যাবে। সরকারী কর্মচারীরা বাড়িতে, অবকাশ কেন্দ্র বা বিদেশে থেকে অফিস করতে পারবেন এবং তাদের শারীরিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হবে না। মানুষ ঢাকা শহরের সরকারের কাছে আসবে না, সরকার যাবে তার গ্রামের বাড়িতে, পর্ণকুটিরে। সে নিজে সিদ্ধানত্ম নেবে কোথায় তার উন্নয়ন হবে-সরকার তার সিদ্ধানত্ম অনুসারে কাজ করবে। উৎপাদন ব্যবস্থা যাবে বদলে। শ্রমঘন বিপজ্জনক শিল্প কারখানায় মানুষের কাজ হবে কেবল নিয়ন্ত্রণ করা। যন্ত্রপাতি করবে উৎপাদন। মানুষ করবে সেই উৎপাদন ব্যবস্থার মনিটরিং। কৃষি কাজ পর্যনত্ম চিপসনির্ভর হবে।
কাস্টমস অফিসাররা ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজ করবেন। আমদানি ও রফতানিকারকগণ বন্দরে না গিয়েই আমদানি-রফতানি করবেন, কর বা শুল্ক দেবেন ও মাল পাঠাবেন বা খালাস করবেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ইন্সপেক্টর, কমিশনার বা অন্য কারও চেহারা কোন নাগরিককে দেখতে হবে না। তাঁরা ডিজিটাল উপায়ে কর রিপোর্ট ও কর দেবেন।
কৃষক তার বাড়িতে বসে জানতে পারবে তার জমিতে এখন কি পরিমাণ সার বা সেচ দিতে হবে। কৃষিঋণের জন্য তাকে আবেদন করার জন্য উপজেলায় বা ব্যাংকে যেতে হবে না। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য সে সহায়তা পাবে মোবাইল ফোনে। কৃষিপণ্যের বাজার দর সে জানতে পারবে তার হাতের ডিজিটাল যন্ত্রে। আগাম বা অকাল বন্যার খবর পাবে সে মাসখানেক আগে। অতি উন্নত জাতের বীজের জন্য তার ফসল যাবে বেড়ে। হাঁস মুরগি গবাদি পশু বা কৃষির সাথে সম্পর্কযুক্ত সকল বিষয়ে সে তার নিজের ঘরেই তথ্য পাবে।
ভূমির সকল তথ্য ঘরে বসে পাওয়া যাবে। ভূমির মালিক তার ভূমির নকশা, চিত্র, মালিকানা ও অন্যান্য দলিলাদি নিজের ঘরে বসে দেখতে পাবেন। জমি রেজিস্ট্রি করার সাথে সাথে দলিল পাওয়া যাবে। সেই অফিসের রেজিস্ট্রার বা অন্যরা ঘুষ কাকে বলে চিনবেন না। এমনকি কেউ সেই অফিসে না গিয়েই দলিল রেজিস্ট্রি করতে পারবেন। ভূমি কর তিনি দিতে পারবেন মোবাইলে।
বাণিজ্যের নাম হবে ডিজিটাল কমার্স। শোরম্নম-শপিং মল বা ভিড়াক্রানত্ম জায়গায় কেনা-কাটার জন্য কেউ যাবেন না। উইন্ডো শপিং বা সামাজিকতার জন্য এসব স্থান ব্যবহৃত হলেও বেশিরভাগ মানুষ ইন্টারনেটেই তাদের কেনাকাটা সেরে নেবেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দোকান বা সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকবে এবং তারা ইন্টারনেটে লেনদেন করবে। ততদিনে দোকানপাট আর মার্কেটনির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য উধাও হয়ে যাবে। মানুষ তার ঘরে বসে পছন্দমতো পণ্য কিনবে। কাগজের টাকা জাদুঘরে থাকবে। মাছ-মুরগির ব্যবসায়ী, চানাচুরওয়ালা ও অন্য ফেরিওয়ালারা ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করবে।
পুলিশ এসএমএস বা ই-মেইলে মামলা গ্রহণ করবে। আদালতে চার্জশীট দেবার জন্য তারা ই-মেইল বা ডিজিটাল উপায় ব্যবহার করবে। তারা ঘুষ কাকে বলে জানবে না। দেশের যে কেউ চিহ্নিত অপরাধীকে ইন্টারনেটে দেখতে পাবে। বিচারক প্রয়োজনে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর সহায়তা নিয়ে বিচারকার্য সম্পাদন করতে পারবেন। আইন-বিচার কার্যক্রম, আইনের ব্যাখ্যা, আদালত, উকিল এবং বাদী-বিবাদী সকলের কাছেই ঘরে বসে পাবার মতো তথ্য সহজলভ্য থাকবে।
সরকার গ্যাস, পানি-বিদু্যত, পয়ঃ নিষ্কাশনসহ সব সাধারণ সেবাই মানুষের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে প্রদান করবে। দেশের সর্বত্র পৌর সেবা ঘরে বসেই পাওয়া যাবে। মানুষ ঘরে বসেই তাদের সকল বিল পরিশোধ করবে।
প্রতিটি মানুষের জন্য মাধ্যমিক সত্মরের শিৰা বাধ্যতামূলক হবে এবং সরকার সেই শিৰা বিনামূল্যে প্রদান করবে। শিৰার নূ্যনতম এই সত্মরটিতে কোন বৈষম্য থাকবে না। স্কুল হোক, মাদ্রাসা হোক সবার জন্যই এক ধারার পাঠ্য বিষয় থাকবে। শহর-গ্রাম, ছোট-বড়, ধনী-গরিব সকলের জন্য নূ্যনতম শিৰার একটিই ধারা প্রবহমান থাকবে। দেশের প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীর নিজের কম্পিউটার বা অন্য কোন ডিজিটাল যন্ত্র থাকবে। কাসরম্নমগুলো কম্পিউটার বা ডিজিটাল যন্ত্র দিয়ে ভরা থাকবে। শিৰক শিৰিকারা ডিজিটাল যন্ত্রে সজ্জিত থাকবেন। শিৰা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসের সকল স্থানে থাকবে ইন্টারনেট। শিৰা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনা হবে ইন্টারনেটে। পাঠাগারগুলো হয়ে যাবে ডিজিটাল। সকল পাঠ্যপুসত্মক ইন্টারনেটে বা ডিজিটাল ফরমাটে পাওয়া যাবে। হতে পারে এরই মাঝে সকল বই, মূল্যায়ন, শিৰক-শিৰিকা নির্দেশিকা ইত্যাদি ইন্টারএ্যাকটিভ মাল্টিমিডিয়া সফটওয়্যার পরিণত হবে। শিৰকরা নিজেরা তৈরি করবেন সফটওয়্যার। ছাত্র-ছাত্রীরাও তাদের পাঠ নিজেরা ডিজিটাল উপায়ে পেশ করবে। বাড়িতে বসে কাস করা যাবে। এমনকি বিদেশে বসে কাস করা যাবে। দেশে বসে বিদেশের কাসেও যোগ দেয়া যাবে। পরীৰা দেয়া যাবে ঘরে বসে। ফলাফল পাওয়া যাবে পরীৰা দেবার পর পরই। সার্টিফিকেট কোন জরম্নরী বিষয় হবে না। যে কেউ ইন্টারনেটে গিয়ে জেনে নিতে পারবে কার কি ফলাফল।
দেশে স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকবে। সেটি কেবল কাগজে থাকবে না, বিরাজ করবে আইনের শাসন। সংবিধানে প্রদত্ত নিয়ম কাঠামোর মাঝে সংবাদপত্রের-মিডিয়ার স্বাধীনতাসহ মৌলিক অধিকার পরিপূর্ণভাবে বাসত্মবায়িত হবে।
আমি স্বপ্ন দেখতে চাই যে, দেশের দুই কোটি শিৰিত বেকার নিজেদেরকে একুশ শতকের উপযুক্ত করবে এবং তাদের বেকারত্ব ঘুচবে। নতুন যারা শিৰা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বের হবে তারা তৈরি হবে জ্ঞানকর্মী হিসেবে। চাকরি চাওয়া বা পাওয়া এবং চাকরি করার জন্য শারীরিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হবে না। বিদ্যমান পেশাগুলোর অনেকই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। নতুন নতুন পেশার উদ্ভব হবে। সাধারণভাবে কায়িকশ্রমের পেশার জন্য কম মজুরি পাওয়া যাবে এবং মেধাশ্রমের মূল্য অধিক হবে। আদম রফতানি নামক ব্যবসা এবং আদম বেপারী নামক পেশাটি দিনে দিনে বিলুপ্ত হবে। মানুষ নিজের বাড়িতে বসেই বিদেশের কাজ করবে এবং বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন পাবে।
কখনও কখনও এমনটি মনে হতে পারে যে, এটি হয়ত উচ্চাভিলাষী, অলীক বা বাসত্মবায়ন অযোগ্য একটি কল্পনার ফানুস। ভাবলেই সব হবে, স্বপ্ন দেখলেই সেই স্বপ্ন বাসত্মবায়ন করা যাবে এমনটি নাও হতে পারে। কিন্তু চেষ্টা করলে সেটি হতেও পারে। আসুন না সবাই মিলে স্বপ্নটা দেখি। শুনেছি সকলে মিলে কিছু চাইলে সেটি পাওয়া যায়।
১৪ জানুয়ারি ২০১০ লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, ঔপন্যাসিক, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাস-এর চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, কম্পিউটার বিষয়ক বই-পত্র ও নিবন্ধের লেখক ও কলামিস্ট এবং বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার-এর জনক ই-মেইল : সঁংঃধভধলধননধৎ@মসধরষ.পড়স, ওয়েবপেজ: িি.িনরলড়ুবশঁংযব.হবঃ
No comments