৩ইডিয়টস এবং তিন বোকার ৭ কাহন
থ্রি ইডিয়টস জ্বরে কাঁপছে গোটা বিশ্ব ! খোদ ভারত থেকে শুরম্ন করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমনকি যুক্তরাজ্যেও সাড়া ফেলে দিয়েছে 'বলিউড আমির'খ্যাত আমির খানের থ্রি ইডিয়টস। জনপ্রিয়তা ও আয়ের দিক দিয়ে গজনীকেও ছাড়িয়ে গেছে এই ছবি।
মুক্তির প্রথম ১০ দিনে গজনী আয় করেছিল ২২৫ কোটি রম্নপী। অপরদিকে থ্রি ইডিয়টস মুক্তির প্রথম ১০ দিনে আয় করেছে ২৪০ কোটি! ব্যবধান ১৫ কোটি রম্নপীর। নতুন বছর সামনে রেখে মুক্তিপ্রাপ্ত এ ছবিটি এরই মাঝে উঠিয়ে এনেছে মোট ব্যয়ের পাঁচগুণ বেশি অর্থ! এবং বর্তমানে বলিউড টপচার্টে রয়েছে শীর্ষে অবস্থানে।'আমি সব সময় সাধারণ দর্শকের কথা মাথায় রেখে ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করি। আর সেটা কতটা সার্থক হলো তা বুঝি ছবিটির আয়ের পরিমাণ দেখে। থ্রি ইডিয়টস যে গজনীকেও ছাড়িয়ে যাবে তা কখনও ভাবতে পারিনি' জানিয়েছেন ছবির প্রধান চরিত্রের রূপকার আমির খান। থ্রি ইডিয়টসের মাধ্যমে বিদেশের মাটিতেও কিং খান শাহরম্নখের একচ্ছত্র আধিপত্যেও দাঁড়ি টেনে দিয়েছেন আমির খান। কিং খান এর ছবি 'ওম শানত্মি ওম' যুক্তরাষ্ট্রে ১০ দিনে আয় করেছে ১৭ কোটি রম্নপী। পৰানত্মরে এই বাজারে আমির খানের থ্রি ইডিয়টসের আয় ২০ কোটিরও কিছু বেশি।
থ্রি ইডিয়টসের কাহিনী সংপে
থ্রি ইডিয়টস ছবির প্রধান তিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাধবান, শারমান যোশী এবং আমির খান। এরাই হলেন সেই তিন বোকা অর্থাৎ থ্রি ইডিয়টস।
তিন তরম্নণ ভারতের খ্যাতনামা এক ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র। আবাসিক এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই তিন ছাত্র পরস্পরের রম্নমমেট। তাদের মাঝে গড়ে ওঠে নিবিড় বন্ধুত্ব। কিনত্মু প্রচলিত শিা ব্যবস্থার বিভিন্ন নিয়ম আর সংস্কারের বেড়াজালে আটকা পড়ে হাঁপিয়ে ওঠে তারা। ওরা চায় পড়াশোনার এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে ছাত্রদের পড়াশোনা হবে স্বতঃস্ফূর্ত। যেখানে শুধুমাত্র বই পড়ে পাস করা আর চাকরি পাওয়ার বিষয়টিই প্রধান বিবেচ্য হবে না। কিনত্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের বুড়ো আর পুরাতনপন্থী শিকদের কাছে এসব কথা পুরোপুরি অর্থহীন মনে হয়। খেপে গিয়ে ওই তিন ছাত্রের বিরম্নদ্ধে নানারকম শাসত্মিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তারা।
কিনত্মু ছবির কাহিনীতে বিভিন্ন উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে শেষ পর্যনত্ম জয়ী হয় স্বপ্নবান ওই তিন তরম্নণ। নিজ যোগ্যতাবলে স্বমহিমায় তারা প্রতিষ্ঠিত হয় সমাজে। অতি সংপে এই হলো ছবিটির মূল বিষয়। তবে এর বাইরেও ছবিটিতে খুব সূক্ষ্ম কিছু বিষয় আছে, যা সহজেই আলোড়ন তুলবে দর্শকের মনে। এক মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃতু্য এবং তার গাওয়া শেষ গান, গিভ মি দ্যা সানসাইন, গিভ মি দ্যা রেইন যেমন কাঁদিয়ে ছাড়বে কোটি হৃদয়কে, ঠিক তেমনি পরমুহূর্তেই অন্যকোন দৃশ্য হাসাতে হাসাতে পাগল করে দেবে দর্শকদের। এটিই হচ্ছে এই সিনেমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
ছবির কুশীলবের সংপ্তি পরিচয়
প্রযোজনা : বিনোদ চোপড়া
পরিচালনা : রাজকুমার হিরানি
চিত্রনাট্য : অভিজিৎ যোশী
কাহিনী : রাজকুমার হিরানি
সঙ্গীত : শানত্মনু মৈত্রী
প্রধান চরিত্র : আমির, মাধবান, যোশী
অন্যান্য : কারিনা কাপুর, বোমান ইরানি, অমি বৈদ্য, জাবেদ জাফরি।
শূটিংয়ের গল্প
থ্রি ইডিয়টস ছবির শূটিং শুরম্ন হয়েছিল ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই ভারতের দিলস্নী, ব্যাঙ্গালোর, লাদাখ, মুম্বাই এবং সিমলায়। কারিনা কাপুর এবং আমির খানের অংশগুলো শূ্যট করা হয়েছে ব্যাঙ্গালোর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টে। ছবির প্রয়োজনে পরিচালকের নির্দেশক্রমে কারিনা কাপুর তার সাইজ জিরো লুক পরিবর্তন করে কিছুটা মোটাসোটা হয়েছেন। আর ডায়েট করে শরীরের ওজন কমিয়েছেন আমির খান। একটি মজার তথ্য হচ্ছে, ছবি পরিচালনার সুবাদে শূটিংয়ের এক পর্যায়ে পরিচালক রাজকুমার হিরানির উপাধি হয়ে যায়, দ্য মোস্ট ইডিয়টিক ডিরেক্টর।
এদিকে জানা গেছে, প্রথমে নাকি ছবির স্ক্রিপ্টে নিজের চরিত্রটি একদমই পছন্দ করেননি খুঁতখুঁতে স্বভাবের আমির খান। যথারীতি পরিচালক মহাশয় স্ক্রিপ্টে কিছু পরিবর্তন এনে আবারও তা নিয়ে যান আমির খানের কাছে। এবার চরিত্রটি পছন্দ হয় আমিরের। আর ফলাফল? শুধু এটুকু বলি, ফেসবুকে থ্রি ইডিয়টস ফ্যান কাবের বর্তমান সদস্য আড়াই লাখেরও বেশি!
জনপ্রিয়তা আর সবের্াচ্চ আয়ের সকল রেকর্ড ভঙ্গকারী থ্রি ইডিয়টস দর্শকচিত্ত জয় করেছে তো বটেই, এখন জয় করতে চলেছে সমালোচকদের মন! এ বছর স্টার সিনে এ্যাওয়ার্ডে ২৪টি ক্যাটাগরিতে মনোনীত হয়ে একই সাথে দর্শকপ্রিয়তা ও সমালোচকদের প্রশংসা দুই-ই অর্জন করল থ্রি ইডিয়টস। তাই এবার দেখার পালা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় বোকাদের স্বর্গ।
স্টার স্ক্রিনে সেরা ছবি থ্রি ইডিয়টস
সামপ্রতিক আলোচিত বলিউডের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি থ্রিইডিয়টস নির্বাচিত হয়েছে সেরা ছবি হিসেবে। মুম্বাইয়ের এমএমআরডিএ গ্রাউন্ডে নকিয়ার ১৬তম বার্ষিক স্টার স্কিন অ্যাওয়ার্ডস আয়োজনে পুরষ্কৃত হয়েছে আমির খানের এ ছবিটি। সেরা নির্মাতার পুরষ্কার লাভ করেছে থ্রিইডিয়টস ছবির নির্মাতা রাজকুমার হিরানি। একই ছবির জন্য সেরা চিত্রনাট্যকারের পুরস্কারটিও চলে যাবে তার অধিকারে। হ
No comments