জনজীবন বিপর্যস্ত, ২২ জনের মৃত্যু
শৈত্যপ্রবাহে সারা দেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল বুধবার বিভিন্ন জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪, ৫, ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে। তীব্র শীত, হিমেল হাওয়া, ঘন কুয়াশা দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষকে চরম দুর্ভোগে ফেলেছে।
শীতজনিত রোগে বিভিন্ন জেলায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার বাইরে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:চুয়াডাঙ্গা: জেলায় গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, গত ২৬ বছরে এটিই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যাচ্ছেন না। ছিন্নমূল, হতদরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষ শীতের তীব্রতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ মাহবুবুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহে শীতজনিত ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই শতাধিক শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রাজশাহী: তীব্র শীতে মানুষের জবুথবু অবস্থা। আগের দিনের চেয়ে তাপমাত্রা প্রায় ২ ডিগ্রি কমে গতকাল জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত ২২ শিশুকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্তান্ত এক শিশু মারা গেছে।
কুড়িগ্রাম: কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে মানুষ। শীতের দাপটে কৃষিকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। সদর হাসপাতালে ৪০ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় শীতজনিত রোগে আরও দুই শিশুসহ নয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
নীলফামারী: শীতজনিত কারণে গত মঙ্গলবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আগুন পোহাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন তিনজন নারী।
ঈশ্বরদী (পাবনা): সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুর্গম চরাঞ্চল ও ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। মঙ্গলবার রাতে শীতজনিত রোগে দড়িনারিচা এলাকায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
দুপচাঁচিয়া (বগুড়া): শীতজনিত কারণে গতকাল ভোরে আশরাফ আলী (৬৭) নামের একজন মারা গেছেন। তাঁর শ্যালক কলেজশিক্ষক আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): উপজেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত তিন দিনে শীতজনিত কারণে তিনজন চা-শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ঘন কুয়াশায় শীতকালীন শাকসবজির খেত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সিলেট: শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। কমে গেছে যান চলাচল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
ফরিদপুর: সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসায় জনজীবন থমকে গেছে।
নেত্রকোনা: সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে জেলা শহরের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। জেলার দুর্গাপুর পৌরসভা এলাকায় শীতজনিত রোগে এক বৃদ্ধা মারা গেছেন।
গোপালগঞ্জ: তীব্র শীতে কৃষকেরাও কাজে যাচ্ছেন না। বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পাবনা: সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন দিনে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত তিন শতাধিক শিশু পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
বগুড়া: সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সিভিল সার্জন খলিলুর রহমান জানান, শীত বাড়ায় ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭২টি শিশু ডায়রিয়ায় এবং ২৬ জন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।
গাইবান্ধা: তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত দুই দিনে শীতজনিত রোগে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
অভয়নগর (যশোর): শীতের কারণে উপজেলার হাট-বাজার ও রাস্তাঘাটগুলো ছিল প্রায় জনশূন্য।
No comments