অতিরিক্ত শাসনও না, অতিরিক্ত আদরও না
শিশুদের কীভাবে মানুষ করা উচিত, খুব বেশি আদরে তাদের মানুষ করা উচিত কিনা, নাকি খুব বেশি শাসন তথা কড়াকড়ির মাধ্যমে তাদের মানুষ করা ভাল_ এসব বিষয়ে কিছুদিন আগে পরিচালিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, খুব বেশি আদর বা অতিরিক্ত কড়া শাসন কোনটাই শিশুর জন্য ভাল নয়। তাদের জন্য শাসন ভাল তবে তা অল্পস্বল্প।
তাদের শাসনের মধ্যে রেখে তাদের জীবনটাকে সুশৃঙ্খল পথে চালিত করলে তারা ভালভাবে বড় হয়ে ওঠে। বিবিসির এক খবরে এমনই তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে যা উপলব্ধি করতে পেরেছেন তা হচ্ছে, যেসব শিশু খুব কড়াকড়ি শাসনের মধ্যে বড় হয়, তাদের মেজাজমর্জি রম্নৰ হয়ে ওঠে। আর যেসব শিশু অতি আদরে মানুষ হয় তারাও যেন কেমন হয়ে ওঠে। আদর এবং একই সঙ্গে সুশৃঙ্খলভাবে যেসব শিশু বড় হয়ে ওঠে তারা ভবিষ্যত জীবনে তাদের অধিকাংশই সাফল্য অর্জন করে।বিশেষজ্ঞরা গবেষণার ভেতর দিয়ে যে তথ্য জানতে পেরেছেন সেটা যে সঠিক তা এমনিতেই ধারণা করা যায়। শিশুরা যাতে ভালভাবে মানুষ হয়, ভবিষ্যত জীবনে সাফল্য অর্জন করে এটা সব দেশের, সব অভিভাবক তথা বাবা-মায়ের প্রত্যাশা। বহু অভিভাবকই ঠিক এভাবেই শিশুদের গড়ে তোলার চেষ্টা করেন এটা ঠিক। তবে এর বিপরীত চিত্রও রয়েছে। তবে সবার আগে বলতে হয়, আমাদের সমাজের শিশুদের সামগ্রিক চিত্রটি ভাল নয়। সেই চিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে নানাবিধ কারণে তারা ভাল নেই। বহু শিশুর জীবনে শৈশব আছে তবে শৈশবের আনন্দ নেই। অর্থনৈতিক, সামাজিক নানা কারণ এর পেছনে রয়েছে। এর বাইরে দেখা যায়, কোন কোন শিশু থাকে কড়া শাসনের মধ্যে। আবার কিছু শিশু বড় হয়ে উঠছে অতি আদর-যত্ন এবং স্নেহ-ভালবাসার মধ্য দিয়ে_ শুধু পড়া, বাড়িতে এসে পড়া, স্কুলের পড়া, স্কুলের পরে কোচিংয়ে পড়া, এর সঙ্গে খিদে লাগলে খাও, খিদে না লাগলেও খেতে হবে, খেলাধুলা ছোটাছুটি আনন্দ সব বাদ দিয়ে রম্নটিনমতো পড়ার কাজ চালিয়ে যাও। যেসব শিশুকে এই অবস্থার মধ্য দিয়ে বড় হতে হচ্ছে তাদের অনেকের মানসিক স্বাস্থ্য অর্থাৎ মন-মেজাজ যেমন ভাল থাকে না, তেমনি শারীরিক স্বাস্থ্যও ভাল হয় না, দ্রম্নত তারা মুটিয়ে যেতে থাকে। তাই বলা যায়, কোন দিকেই কড়াকড়ি ঠিক নয়।
No comments