ঘুষ বৃদ্ধি উদ্বেগজনক-এ প্রবণতা রোধ করতে হবে
গত দুই বছরে দেশের ১৩টি সুনির্দিষ্ট সেবা খাতের মধ্যে স্বাস্থ্য খাত ছাড়া অন্য খাতগুলোয় দুর্নীতি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। কিন্তু একই সঙ্গে এসব সেবা খাতে ঘুষ গ্রহণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) জাতীয় খানা জরিপে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আর এই ঘুষ বা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের ক্ষেত্রে সবার শীর্ষে রয়েছে শ্রম অভিবাসন খাত এবং তার পরই রয়েছে পুলিশের অবস্থান। শ্রম অভিবাসন খাতকে এবারই প্রথম জরিপের আওতায় আনা হয়েছে। এটিকে বাদ দিলে পুলিশ আগের মতো এবারও শীর্ষস্থান দখল করে আছে। অথচ এই পুলিশের কর্মকাণ্ডের ওপরই নির্ভর করছে দেশের অপরাধ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড দমনের দায়িত্ব। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন এসে যায়, যে পুলিশ নিজেরাই সর্বোচ্চ অপরাধকারী, তারা অপরাধ কতটুকু দমন করতে পারবে কিংবা আদৌ পারবে কি না। দেশের অপরাধ চিত্র বিশ্লেষণ করলেই তার উত্তর পাওয়া যাবে। চোরে চোরে মাসতুতো ভাই- সেটাই যেন আজ পরম সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি দেশে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতাও অনেকাংশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল। অথচ আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই ক্রমেই বেড়ে চলছে। মাদকের অবাধ বিস্তার যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ সদস্যরাই এসব মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা গুলি চলে যায় সন্ত্রাসীদের হাতে- এর চেয়ে উদ্বেগজনক আর কী হতে পারে! ভূমি প্রশাসনে এখনো ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপকতা রয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো বিচারিক সেবায় এখনো ঘুষ গ্রহণের পরিমাণ অনেক। দুর্বল মানুষের শেষ ভরসাস্থলটিও যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাহলে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আর কোনো সুযোগই থাকে না। আর স্বাস্থ্য খাতের কথা বলাই বাহুল্য। এখানে দুর্নীতি বেড়েছে, ঘুষ গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় সেবা খাতগুলোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করে, জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা করে। আর সেই সেবা খাতগুলো যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে রাষ্ট্রের কোনো প্রচেষ্টাই জনকল্যাণে সাফল্য অর্জন করবে না। সে বিষয়টি রাষ্ট্রের কর্ণধারদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন।
মহাজোট সরকার যদি জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, তাহলে সরকারের উচিত রাষ্ট্রের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে আরো জোরদার ও গতিশীল করা। আমরা অস্বীকার করছি না, বর্তমান সরকারের কিছু প্রচেষ্টা এ ক্ষেত্রে সাফল্যের দাবিদার এবং সে কারণেই সেবা খাতগুলোতে দুর্নীতি কমেছে। কিন্তু সেবা খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ গ্রহণ ও নৈতিকতাবিরোধী কার্যকলাপ তাঁদের সেই সাফল্যকে ম্লান করে দিয়েছে। তার পরও সরকার যদি তাঁদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানোর বদলে আইন সংশোধনের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করে তাহলে এ অনৈতিকতা আরো উৎসাহিত হবে, যা সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনে করা হয়েছে। পাশাপাশি এ সংস্থাগুলোর কাজকর্মকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় এনে জনগণের সামনে আরো উন্মুক্ত করতে হবে। গণমাধ্যমকে শত্রু না ভেবে তাদের তথ্য প্রকাশের ক্ষমতা বাড়াতে হবে। সর্বোপরি, দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরো শক্তিশালী করতে হবে। তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে, লোকবল বাড়িয়ে এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে দুর্নীতি কমায় দুদকের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। পরিশেষে আবারও বলতে হয়, দেশে দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়া, অনৈতিকতা কমবে কি না, তা নির্ভর করে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। আমাদের বিশ্বাস, বর্তমান সরকার তাদের শেষ বছরে অন্তত এ ক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সদিচ্ছার প্রমাণ দেবে।
একটি দেশে নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গতিশীলতাও অনেকাংশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর নির্ভরশীল। অথচ আমাদের দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই ক্রমেই বেড়ে চলছে। মাদকের অবাধ বিস্তার যুবসমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ সদস্যরাই এসব মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। পুলিশের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ করা গুলি চলে যায় সন্ত্রাসীদের হাতে- এর চেয়ে উদ্বেগজনক আর কী হতে পারে! ভূমি প্রশাসনে এখনো ঘুষ-দুর্নীতির ব্যাপকতা রয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো বিচারিক সেবায় এখনো ঘুষ গ্রহণের পরিমাণ অনেক। দুর্বল মানুষের শেষ ভরসাস্থলটিও যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাহলে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠার আর কোনো সুযোগই থাকে না। আর স্বাস্থ্য খাতের কথা বলাই বাহুল্য। এখানে দুর্নীতি বেড়েছে, ঘুষ গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। রাষ্ট্রীয় সেবা খাতগুলোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র তার নাগরিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করে, জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা করে। আর সেই সেবা খাতগুলো যদি এভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে, তাহলে রাষ্ট্রের কোনো প্রচেষ্টাই জনকল্যাণে সাফল্য অর্জন করবে না। সে বিষয়টি রাষ্ট্রের কর্ণধারদের উপলব্ধি করা প্রয়োজন।
মহাজোট সরকার যদি জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়, তাহলে সরকারের উচিত রাষ্ট্রের দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমকে আরো জোরদার ও গতিশীল করা। আমরা অস্বীকার করছি না, বর্তমান সরকারের কিছু প্রচেষ্টা এ ক্ষেত্রে সাফল্যের দাবিদার এবং সে কারণেই সেবা খাতগুলোতে দুর্নীতি কমেছে। কিন্তু সেবা খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ গ্রহণ ও নৈতিকতাবিরোধী কার্যকলাপ তাঁদের সেই সাফল্যকে ম্লান করে দিয়েছে। তার পরও সরকার যদি তাঁদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানোর বদলে আইন সংশোধনের মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করে তাহলে এ অনৈতিকতা আরো উৎসাহিত হবে, যা সরকারি কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনে করা হয়েছে। পাশাপাশি এ সংস্থাগুলোর কাজকর্মকে ডিজিটাল প্রযুক্তির আওতায় এনে জনগণের সামনে আরো উন্মুক্ত করতে হবে। গণমাধ্যমকে শত্রু না ভেবে তাদের তথ্য প্রকাশের ক্ষমতা বাড়াতে হবে। সর্বোপরি, দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আরো শক্তিশালী করতে হবে। তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে, লোকবল বাড়িয়ে এবং প্রযুক্তিগতভাবে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে দুর্নীতি কমায় দুদকের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। পরিশেষে আবারও বলতে হয়, দেশে দুর্নীতি, ঘুষ নেওয়া, অনৈতিকতা কমবে কি না, তা নির্ভর করে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর। আমাদের বিশ্বাস, বর্তমান সরকার তাদের শেষ বছরে অন্তত এ ক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সদিচ্ছার প্রমাণ দেবে।
No comments