ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা পড়লেন সেনাসদস্য

ডিবি পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছেন এক সেনাসদস্য। ইকবাল হোসেন (৩৫) নামের এই ব্যক্তি মিরপুর সেনানিবাসে ল্যান্স করপোরাল হিসেবে কর্মরত। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর দারুস সালাম থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।


দারুস সালাম থানার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মনিরুল ইসলাম নামের এক গরু ব্যবসায়ী তিন ব্যক্তিসহ গাবতলীর গরুর হাট থেকে নিজের গাড়িতে করে আগারগাঁওয়ের দিকে রওনা দেন। গাড়িটি মাজার রোডসংলগ্ন লালকুঠি বড় মসজিদের সামনে এলে পেছন থেকে একটি সাদা রঙের মাইক্রোবাস তাঁদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে পাঁচ-ছয়জন ব্যক্তি নেমে নিজেদের ডিবির লোক পরিচয় দেন এবং মনিরুলের হাতে হাতকড়া লাগান। এ সময় মনিরুল ও তাঁর সঙ্গী তানভীরের কাছে থাকা ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন তাঁরা। এরপর তাঁদের গাড়িতে তোলার জন্য টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। এ সময় ব্যবসায়ীরা ছিনতাইকারী বলে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ও টহল পুলিশ ছুটে যায়। একপর্যায়ে পুলিশ ও জনতা সেনাসদস্য ইকবালকে ধরে ফেলে। অন্যরা ব্যবসায়ী তানভীরকে মাইক্রোবাসে তুলে দ্রুত চলে যান। কিছুদূর যাওয়ার পর তানভীরকে নামিয়ে দিয়ে তাঁরা পালিয়ে যান।
রাতেই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সেনাসদস্য ইকবালসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। অপরদিকে ভুয়া পরিচয় দেওয়ার অপরাধে পুলিশ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করে। দুটি মামলায় ইকবালকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মামলা দুটির তদন্ত করছেন দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সরোয়ার আলম খান। তিনি বলেন, ইকবাল সেনাসদস্য বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি প্রাথমিকভাবে ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছেন। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এসআই বলেন, ইকবালের বাসা মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায়। তিনি দুই দিনের ছুটিতে আছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান। তবে সঙ্গে থাকা পলাতক ব্যক্তিদের ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত তথ্য দেননি।
বাদী মনিরুল ইসলাম পুলিশ ও সাংবাদিকদের বলেন, ডিবি পরিচয় দিয়ে টাকা ছিনিয়ে নিলেও মাইক্রোবাসে তোলার চেষ্টা করায় তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপর তাঁরা চিৎকার শুরু করেন।
এসআই সরোয়ার বলেন, গতকাল শনিবার দুপুরে ইকবালকে আদালতে পাঠিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত রিমান্ড নামঞ্জুর করেন। গত রাতে ইকবালকে সেনাবাহিনীর হেফাজতে নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলার তদন্ত করবে। ছিনতাইয়ে জড়িত অন্য ব্যক্তিদেরও খোঁজা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) কর্মকর্তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।

No comments

Powered by Blogger.