সরল গরল-আমরা কি ‘আত্মমর্যাদাশীল জাতি’ হতে পেরেছি? by মিজানুর রহমান খান

ত্ত্বাবধায়ক সরকার ও বাংলাদেশের ‘বাস্টারডাইজেশন অব ডেমোক্রেসি’ নিয়ে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বক্তব্য নানা প্রশ্ন ও চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে। ব্র্যাক সেন্টারে গত ২৬ নভেম্বর তিনি বলেছেন, ‘কোনো আত্মমর্যাদাশীল জাতি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে না।’ ৩০ মিনিটের ওই সুলিখিত ভাষণে তিনি গত ৪০ বছরের অর্জন ও অধোগতির যে চিত্র এঁকেছেন, তাতে বাংলাদেশ ‘আত্মমর্যাদাশীল জাতি’র তকমা পেতে পারে না।


তিনি বলেছেন, ‘ধর্মঘট, ঘেরাও ও সংসদ থেকে লাগাতার ওয়াকআউটের মধ্য দিয়ে চলা ‘গণতন্ত্রের জারজকরণ’ যদি আমরা বন্ধ করতে ব্যর্থ হই, তাহলে মধ্যাহ্নকে গ্রাস করবে অন্ধকার।’ ‘গণতন্ত্রের জারজকরণ’ এখানে ‘অনিয়ম’ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। মধ্যযুগীয় ইংল্যান্ডের শেষপর্বের রাষ্ট্রব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য বোঝাতে ‘জারজ সামন্ততন্ত্র’ ব্যবহার করা হতো।
দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বহু বিষয় উঠে এসেছে তাঁর অনবদ্য ভাষণে। কিন্তু বোধগম্য কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিরুদ্ধ তাঁর মন্তব্য অনেকের কাছে বেশি তা ৎ পর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ডেইলি স্টার ২৯ নভেম্বর এক সম্পাদকীয়তে হয়তো সে কারণেই আক্ষেপের সুরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে তাঁর ওই মন্তব্যের সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করেছে।
বিচারপতি হাবিবুর রহমান কিছুদিন আগে দেশটা ‘বাজিকর’দের খপ্পরে পড়ার বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন। এতে বেগম খালেদা জিয়া প্রকাশ্যে তাঁর প্রশংসা করেছিলেন। শেখ হাসিনার উষ্মা প্রকাশ পায়নি। তবে এখন হয়তো উল্টোটা ঘটবে। কিন্তু এই নন্দিত লোকবুদ্ধিজীবী এসব ভেবে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করেন না নিশ্চয়ই। কিন্তু এও সত্য, তাঁর তত্ত্বাবধায়ক সরকারবিরুদ্ধ একটা তাত্ত্বিক অভিব্যক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে এমন এক প্রেক্ষাপটে, যখন দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন চলছে। এবং ক্রমশ পালে বাতাস লাগা সেই আন্দোলনের সুযোগে উত্তরাধিকার রাজনীতির দ্বিতীয় প্রজন্মের শিকড় গাড়তে বসেছে। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ও পুনরুত্থানের রাজনীতির ডামাডোলে দুই নেত্রীর দুই উত্তরাধিকারের অভিষেক নিশ্চিত হয়ে যাবে। জাতি বুঝতেই পারবে না কোথা থেকে কী ঘটে গেল। এক রক্তের উত্তরাধিকার প্রতিপক্ষ রক্তের অধিকারকে গ্রহণযোগ্যতা দেবে।
বিচারপতি রহমান অবশ্য পরোক্ষভাবে এ নিয়ে যা বলেছেন তা কখনো মিডিয়ার খোরাক হবে না। হইচই পড়বে না। গত ৩৭ বছরে ব্রিটিশ লেবার পার্টি সাত নেতা (এক হিসাবে নয়) পেলেও আওয়ামী লীগ ও বিএনপি যথাক্রমে ৩০ বছর ও ২৭ বছর ধরে এক নেতায় অটল। তিনি এটা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘বটবৃক্ষের ছায়া সুশীতল। কিন্তু তার নিচে নবীন গাছ বাড়ে না।’
আমরা দেখি, এই বটবৃক্ষই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নামের বিষবৃক্ষ সৃষ্টি করেছে। এখন বিষ দিয়ে বিষ ক্ষয় ঘটানো ছাড়া কি কোনো বিকল্প আছে?
সুতরাং প্রশ্ন হলো, তাঁর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাবিরোধী অবস্থানকে আমরা কী তা ৎ পর্যে মূল্যায়ন করব? এক দিক থেকে তাঁর কথায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষ-বিপক্ষ স্পষ্ট করে না। তাঁর মূল্যায়ন সর্বজনীন ও কালোত্তীর্ণ। তাঁর বক্তব্যকে বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা যাবে না। সরকারি দল যারা তাঁর বিবরণমতেই ‘প্রশাসনকে দলীয়করণ করে চলেছে’। তাঁর আরও স্পষ্ট উচ্চারণ, ‘দুই কীর্তিমান ব্যক্তির’ (two illustrious persons) বিপুলসংখ্যক আত্মীয়স্বজন প্রতিটি নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে থাকেন’, তাঁদের নেতৃত্বেই রাজনীতি ‘বিনিয়োগে’ পরিণত হয়েছে, এবং তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতেও কোনো পদক্ষেপ নেননি, তাহলে কীভাবে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠান গ্রহণযোগ্য হতে পারবে? কেউ যদি আঁতকে উঠে শুধান, তিনি কোথায় বললেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার পরিকল্পনা তিনি কোথায় সমর্থন করেন? তাহলে কেউ পাল্টা প্রশ্ন তুলতে পারেন, বিতর্কিত ১৫তম সংশোধনী পাসের পর তিনি বলেছিলেন, ‘আদালতের সংক্ষিপ্ত আদেশের কালি না শুকাতেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলোপের সিদ্ধান্ত শুদ্ধ ছিল না।’
আপিল বিভাগের রায়ে বর্ণিত দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করার নির্দেশনায় কি মরচে ধরেছে? আর এসবের উত্তর দেওয়া যদি বিচারপতি রহমান সংগত মনে না করেন, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে গর্ব করার যে কিছু নেই, সেই অপ্রিয় সত্যের উচ্চারণ তিনি কেন করলেন? তবে এখানে আমরা স্মরণ করব, ব্যবস্থা হিসেবে এটা যে ভালো নয়, সেই বিশ্বাসে তিনি অবিচল ছিলেন। ১৯৯৬ সালে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে জাতির উদ্দেশে দেওয়া তাঁর প্রথম ভাষণেও তিনি তাঁর অস্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন।
‘কীর্তিমান’ ক্ষমতাচ্যুত করার বিধানসংবলিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারই চারটি ভালো নির্বাচন দিয়েছিল। সে কারণেই কি বাংলাদেশ তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে গর্বিত হতে পারে না?
তাঁর ভাষণে ভ্রান্তি অপনোদন নাও হতে পারে। কারণ, তিনি ১৫তম সংশোধনীকে বিতর্কিত বলেননি। এ বিষয়ে বলতে গিয়ে নির্দিষ্টভাবে শুধু বিসমিল্লাহ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও রাষ্ট্রধর্মের সমন্বয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কিন্তু ওই সংশোধনীর বড় বিস্ময় নাগরিকের বাকস্বাধীনতাকে স্তব্ধ করে দেওয়া। রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তিদানের বিধান করা। কিন্তু এসব তাঁকে কতটা বিচলিত করেছে, তা আমরা এই ভাষণে বুঝতে পারি না।
সামরিক শাসনের দাগ মুছে দিয়েছে বলে তিনি ১৫তম সংশোধনীর প্রশংসা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে সামরিক শাসনের দাগ মুছে দেওয়া ছিল সঠিক পদক্ষেপ।’ এটা তথ্য হিসেবেও দ্বন্দ্বমুক্ত নয়। কারণ সামরিক ফরমান নিয়ে আমদানি করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল, বিচার বিভাগ পৃথক্করণবিনাশী কালাকানুন এবং অনির্বাচিত ব্যক্তিদের মন্ত্রিত্বদানসংক্রান্ত বিধান টিকিয়ে রাখা হয়েছে।
সামরিক শাসনের দাগ মুছে দেওয়া হয়েছে অতটুকুই, যেটুকু ক্ষমতাসীন দলের বিনিয়োগের রাজনীতির চেকনাই বাড়ানোর কাজে লেগেছে। বিচারপতি রহমান প্রতিটি সংকটেই জনগণ ও তাদের শুভবুদ্ধির ওপর আস্থা রাখতে বলেছেন। তাঁর পরামর্শ, ‘মধ্যস্থতার জন্য বিচারক কিংবা জেনারেলের কাছে ছুটে যাওয়া উচিত নয়।’
বিচারক ও জেনারেলের কাছে কারা ছোটাছুটি করেছে, করে ও করবে? উইকিলিকস সূত্রে মার্কিন মূল্যায়ন আমরা দেখি, ‘দুই কীর্তিমান’ নিজেরা ক্ষমতায় না থাকতে পারলে জেনারেল পছন্দ করেন। সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন মানে ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের’ নেতৃত্বটা যে অন্যরা নেবে, তারও সুযোগ নেই। বিচারপতি রহমান পঁচাত্তরের পরে সেনাবাহিনীর দাপট বাড়ার কথা বলেছেন। কিন্তু এটা হ্রাস পাচ্ছে না কেন। ছয় বছরের ব্যবধানে দুই সরকারপ্রধান হত্যাকাণ্ড-পরবর্তী গণতন্ত্রায়নের রাজনীতি তো তাঁর বর্ণিত ‘দুই কীর্ির্তমানের’ হাতেই বন্দী থেকেছে। বেসামরিক প্রশাসনে সেনা উপস্থিতি এখন সর্বোচ্চ।
অবসরপ্রাপ্ত বিচারকদের ব্যবহারের জন্য সামরিক শাসকেরা বাহাত্তরের সংবিধানের ৯৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন করেছিলেন। অথচ কী আশ্চর্য, সেই কলঙ্কের টিপ ক্ষমতাসীনেরা নতুন করে ললাটে লেপ্টে নিয়েছেন। আর বিচারপতি রহমান আমাদের শর্তহীনভাবে বলছেন, ১৫তম সংশোধনীতে সামরিক শাসনের দাগ মুছে দিয়েছে।
এসব বিষয়ের সঙ্গে অবশ্যই জাতির ‘আত্মমর্যাদার’ প্রশ্ন জড়িত। ‘দুই কীর্তিমানের’ নেতৃত্বে বাংলাদেশ কী কী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে তার তালিকা তিনি দিয়েছেন এবং তা আমরাও স্বীকার করি। উন্নতি তো হচ্ছেই। কিন্তু তিনিই দেখিয়েছেন, ‘১৯৯৪ সালের বিশ্ব মানব উন্নয়ন পর্যায়ে পৌঁছাতে বাংলাদেশের ১৩৭ বছর লাগবে। ২০৩১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার হীরকজয়ন্তীতে বাঙালির জীবনমান বড়জোর যুক্তরাষ্ট্রের দারিদ্র্যসীমায় থাকা লোকদের সমপর্যায়ে উন্নীত হবে।’ এই তো হলো দেশের অবস্থা। অবশ্য এটা দেখতে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’র প্রবক্তা কিসিঞ্জার তত দিন বাঁচবেন না।
সে কারণেই আমাদের জিজ্ঞাসা জাতির জীবনে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার দিন কি ফুরিয়ে গেছে? অবশ্য এই ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে পারলেও গণতন্ত্রের মুখ উজ্জ্বল হবে কি না, সেটাও এক প্রশ্ন।
বিচারপতি রহমান এ-ও বলেছেন, ‘আমরা যশস্বী পরিবারের (illustrious families) রাজনীতির মধ্যখানে আছি।’ বস্তুত প্লেটোর এই অলিগার্কি (কতিপয়তন্ত্র) বজায় রেখে আরও দীর্ঘকাল তত্ত্বাবধায়কে ঘুরপাক খেলেও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে না। কিন্তু জানটা হয়তো বাঁচতে পারে। জান বাঁচলে বাপের নাম।
তাঁর বর্ণনায়, বাহাত্তরের সংবিধান আদর্শস্থানীয়। কিন্তু বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন কমিটিকে পাশ কাটিয়ে ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমানের দিকে তাকিয়ে প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী ক্ষমতা ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই ব্যক্তি-বিষ গত ৪০ বছরে ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। বাহাত্তরের সেই ব্যক্তিতান্ত্রিক বিধান (মন্ত্রিসভা নয়, নির্বাহী ক্ষমতা শুধু প্রধানমন্ত্রীর) এখনো টিকিয়ে রাখা হয়েছে এবং এই বিষয়ে ‘দুই কীর্তিমানের’ মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আরও বলেছেন, ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব, ১৯৮১ সালে বিচারপতি সাত্তার ও ১৯৯১ সালে বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ মানে ব্যক্তির জন্য ‘তিনবার’ সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল। কিন্তু ত্রয়োদশ সংশোধনীও ব্যক্তির (অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির পদাধিকারী) আছরমুক্ত ছিল না। ২০০৪ সালে কে এম হাসানের দিকে তাকিয়েই চতুর্দশ সংশোধনী হয়েছিল। পঞ্চম ও সপ্তম সংশোধনীও মূলত জিয়া ও এরশাদের জন্যই পয়দা হয়েছিল। ১৫তম সংশোধনীও ব্যক্তির খেয়ালের ফসল।
তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা প্রত্যক্ষ সেনা হস্তক্ষেপ ঠেকাতে পারে। ওয়ান-ইলেভেনে তা প্রমাণিত। বাংলাদেশ সামরিক শাসন জারির কালিমামুক্ত থাকতে পেরেছে। সুতরাং আমাদের নজর ওই ব্যবস্থায় আরও দুই মেয়াদে সাধারণ নির্বাচন করার বিকল্পের দিকেই। ডুবন্ত ব্যক্তি খড়কুটো আঁকড়ে ধরে। আমরা আপিল বিভাগের রায় আঁকড়ে ধরতে চাই।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান আমাদের শীর্ষ লোকবুদ্ধিজীবী। দলীয় সরকারপ্রধান না রেখে একটা উপযুক্ত নির্বাচনকালীন সরকার কাঠামো বের করার বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব তিনি এড়াতে পারেন না। তাঁর সঙ্গে আমরা একমত, এই জাতির দরকার ভোটের পরাজয় মানার ‘পঞ্চম স্বাধীনতা’ অর্জন করা।
এই ‘পঞ্চম স্বাধীনতার ঘোষক’ হতে পারেন তিনি। এটা পারলে জাতি তাঁকে মাথায় তুলে নেবে। আমাদের তিনি অগ্রাহ্য করতে পারেন না, কারণ তিনি বলেন যে ‘বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা দর্শনে আত্মমর্যাদাশীল জাতিসমূহ অবাক। কারণ, নির্বাচিতরা যদি সরকার চালাতে পারে, তাহলে তারা নিজেরাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে নির্বাচন চালাতে পারবে না কেন।’ তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার মতো গৃহযুদ্ধকবলিত দেশও তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া ক্ষমতা হস্তান্তর করে থাকে। তাহলে সোজা কথাটা কি তাঁর এই যে তাহলে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ‘গৃহযুদ্ধে’ লিপ্ত না থাকা বাংলাদেশ কেন ১৫তম সংশোধনীর আওতায় নির্বাচন করতে পারবে না?
কোটি টাকার চেয়েও বেশি দামের প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান। নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রাম মডেলে একটা সাধারণ নির্বাচন যে দলীয় সরকারের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব সেকথা আমরা বলছিনা। কিন্তু এই অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে জাতিকে কতটা মাশুল দিতে হবে তা কি ভেবে দেখেছেন।
দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে আবেদন, তারা যেন দুই নেত্রীকে নিজ নিজ দলের কাণ্ডারির পদ ছাড়তে বা বিরতি দিতে উ ৎ সাহিত করে। বিচারপতি রহমানের মতে, ৪০ বছরে রাজনীতি সামান্য এগিয়েছে। আমরা বলি, ‘দুই যশস্বী পরিবারের’ ছত্রছায়ায় রাজনীতির নামে যা চলছে, তা বিরাজনীতিকীকরণ। নাগরিক সমাজ যেন এর যবনিকা টানতে দুই কীর্তিমানের প্রতি একটি উদাত্ত আহ্বান জানায়।
বর্তমান বিশ্বের ‘মিশ্র গণতান্ত্রিক’ দেশগুলোর মধ্যে তৃতীয় শ্রেণীতে থাকা বাংলাদেশের ভবিষ্য ৎ গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা যে ওই দুই ‘যশস্বী পরিবারের’ কৌটায় ভরা।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.