২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তারা-রোকেয়া সদন আন্দোলনের প্রতীক

হিলা পরিষদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘রোকেয়া সদন’ একটি আন্দোলনের প্রতীক। নির্যাতিত নারী-শিশুদের সমাজের মূল ধারায় প্রতিষ্ঠা, পরিবার ও সমাজে তাদের পুনর্বাসিত করার লক্ষ্যে এ অন্দোলনের জন্ম। সে লক্ষ্য অর্জনে সাফল্যের অনেক উদাহরণ সৃষ্টি করেছে এই সদন। সদনের ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল সোমবার মহিলা পরিষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ১৯৮৫ সালে দেশে প্রথম এই সদনটি যাত্রা শুরু করে।


সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিশু রাবেয়া আক্তার দৃঢ়কণ্ঠে বলে, ‘আমি সদনে আছি পাঁচ বছর ধরে। এবার পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৩৩ পেয়েছি। আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মহিলা পরিষদের ধারাবাহিক আন্দোলনের একটি অঙ্গ রোকেয়া সদন। এই সদনে আসার পর নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুদের পড়াশোনা করানো হয়। বর্তমানে সদনের সদস্য ১৭ জন। পড়াশোনার পাশাপাশি সেলাই, ছবি আঁকাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে তারা। চাকরি বা পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেও তাদের পুনর্বাসন করা হচ্ছে।
গতকালের অনুষ্ঠানস্থলে একটি দেয়াল পত্রিকা টাঙানো ছিল। সদনের সদস্যরা ছবি ও লেখার মাধ্যমে নিজেদের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন সেটিতে। আলোচনার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সদনের সদস্যদের বিভিন্ন উপস্থাপনাও ছিল সুন্দর।
সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রের (সিআরপি) প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়কারী ভেলোরি এ টেইলর বলেন, সমাজের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধরনের সদনের গুরুত্ব অনেক। এ রকম একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য মহিলা পরিষদ অবশ্যই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তিনি প্রতিবন্ধী ও নির্যাতনের শিকার নারী-শিশুদের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি সামাজিক পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী বলেন, ‘নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়ে যাঁরা সদনে থাকছেন তাঁরা আমাদেরই কেউ না কেউ। যথাযথ সুযোগ-সুবিধা পেলে তাঁরাও সমাজের জন্য, মানবতার জন্য বড় কিছু করে দেখাতে পারবেন।’
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট বিশেষজ্ঞ মুমিনুন নেসা বলেন, নির্যাতনের শিকার নারী-শিশুদের আশ্রয় দেওয়ার মতো জায়গা তেমন একটা গড়ে ওঠেনি। রোকেয়া সদনের মতো দু-একটি জায়গা তৈরি হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এদিকে সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনগুলোকে নজর দিতে হবে।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাসুদা বেগম। আলোচনায় অংশ নেন সদনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ফওজিয়া মোসলেম, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.