কিমের মৃত্যুকে সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছে সিউল

ক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং-বাক গতকাল সোমবার বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-ইলের মৃত্যুর পর বিভক্ত উপদ্বীপ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। তবে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে এটি এক সুযোগ হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। কিম ইলের মৃত্যুকে সম্পর্কোন্নয়নের সুযোগ হিসেবে আখ্যায়িত করলেও প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং-বাক অবশ্য উত্তর কোরিয়ার নতুন নেতা কিম জং-উনের অধীনে সে দেশের যেকোনো ধরনের উসকানির কড়া জবাব


দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে কোরিয়া উপদ্বীপ বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দক্ষিণ কোরীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ঘুরে দাঁড়ানোর মতো একটি নতুন পর্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে। সম্পর্ক ও বিভিন্ন অনিশ্চয়তার ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সুযোগ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে জানালা খোলা রেখেছি। উত্তর কোরিয়া আন্তরিকতা দেখালে আমরা এক নতুন যুগে প্রবেশের দ্বার উন্মুক্তকরণে সমর্থ হব।’
উত্তরের যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়ার কথাও ভাষণে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট লি। গত মাসে প্রতিদ্বন্দ্বী উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম ইলের মৃত্যু এবং পরে দেশটির সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ও ক্ষমতাসীন দলের প্রধান হিসেবে তাঁর ছোট ছেলে জং-উনের দায়িত্বভার গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ মন্তব্য করলেন।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অবসানে বছরের পর বছর ধরে চলা আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় ২০১২ সাল এক মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে ভাষণে আশা প্রকাশ করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট। লি বলেন, পিয়ংইয়ং যত দ্রুত তার পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করবে তত তাড়াতাড়ি এ সংকট নিয়ে ছয় জাতির আলোচনা শুরু হবে। তিনি বলেন, ‘ছয় জাতি আলোচনার মধ্য দিয়ে উপনীত হওয়া (সম্ভাব্য) চুক্তির অধীনে কোরীয় উপদ্বীপের নিরাপত্তা উদ্বেগ নিরসন ও অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।’ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট অবশ্য আর কোনো ধরনের পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এর আগে রোববার নববর্ষের এক শুভেচ্ছাবার্তায় উত্তর কোরিয়া তার সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি ও নতুন নেতা জং-উনকে রক্ষায় আমৃত্যু লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে। দেশটি দক্ষিণ কোরিয়ার রক্ষণশীল সরকারের প্রতি যথারীতি সমালোচনাও অব্যাহত রেখেছে। কিমের মৃত্যুর পর ১৩ দিনের শোক পালনকালে সিউলের বিদ্রূপাত্মক আচরণের জন্য তার প্রতি ক্ষমা প্রার্থনারও আহ্বান জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। এর আগে গত সপ্তাহে জং-উনের নেতৃত্বে উত্তর কোরিয়ার নীতিতে কোনো ধরনের পরিবর্তন প্রত্যাশা না করার ব্যাপারে পিয়ংইয়ংয়ের পক্ষ থেকে বিশ্বকে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এপি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.