মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ডিজির নালিশঃ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া উচিত
মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ করে তার মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম খান ৫ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের কাছে যে চিঠি দিয়েছেন তাতে মন্ত্রণালয়ের পরিধির মধ্যে দ্বন্দ্বমুখর পরিবেশের চিত্র ফুটে ওঠে।
গতকাল আমার দেশ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, মহাপরিচালক (ডিজি) মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানেরও অভিযোগ এনেছেন এই চিঠিতে। চিঠিতে উল্লেখ করা ৫টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে— ১. এ বছর ইনস্টিটিউটের রজতজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে বছরব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সমাপনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মন্ত্রীর অনীহার কারণে মন্ত্রণালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কোনো প্রস্তাবই পাঠানো হয়নি। ২. মন্ত্রীর অনীহার কারণে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে মত্স্য ও পশুসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের কোনো সভা হয়নি। মন্ত্রী এই বোর্ডের সভাপতি। ৩. ইনস্টিটিউটের নির্মীয়মাণ চারতলা ভবনের নির্মাণ কাজে অনিয়ম হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রী ঠিকাদারের পক্ষ নিয়ে তাকে জামানতের ২৪ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। ৪. মন্ত্রী একদল ঠিকাদারের মাধ্যমে তার কাছে পদোন্নতির জন্য ২ লাখ টাকা দাবি করে আসছেন। ৫. চারদলীয় জোট সরকারের সমর্থক ৪/৫ কর্মকর্তাকে দিয়ে মন্ত্রী ইনস্টিটিউটের কার্যালয়ে একটি অস্থির পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।
অভিযোগগুলো চাঁছাছোলা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর জন্য বিব্রতকর। বিশেষ করে অধস্তন কর্মকর্তার কাছ থেকে মন্ত্রীর ঘুষ দাবি করা এবং মন্ত্রীর পক্ষ থেকে একজন কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেয়া—চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মতো অভিযোগ। মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরিরত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এভাবে লিখিত অভিযোগ করতে বুকের পাটা লাগে। বোঝা যাচ্ছে, চলতি দায়িত্ব পালনরত ডিজির সেটা আছে। তবে খুঁটির জোর ছাড়া এ ধরনের বুকের পাটা এককথায় অসম্ভব। তাই ডিজির খুঁটির জোর যে যথেষ্ট শক্ত, তা বুঝতে কষ্ট হয় না। বিশেষ করে আমার দেশ-এর প্রতিবেদনে তুলে ধরা চিঠির বিভিন্ন অংশ খুঁটিয়ে পড়লে বোঝা যায়, অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে চিঠিটি এমনভাবে লেখা হয়েছে, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে তাত্ক্ষণিকভাবে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়। চিঠিটি লেখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বরাবরে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীদের অবস্থান ও মর্যাদা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার উপরে থাকার কথা। উপদেষ্টাকে যদি মন্ত্রীর মর্যাদায় নিয়োগ করা হয়, তবে সেক্ষেত্রে তার মর্যাদা হবে মন্ত্রীর সমান, মন্ত্রীর উপরে নয়। একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একজন উপদেষ্টার কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করে সংশ্লিষ্ট ডিজি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রশাসনে দলীয় আনুগত্যের মাপকাঠিতে যেভাবে নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতি-ওএসডিকরণের বন্যা বয়ে যাচ্ছে, তাতে চেইন অব কমান্ড, নিয়ম, রেওয়াজ ইত্যাদিসহ অনেক কিছু এরই মধ্যে ভেসে গেছে। তারপরও আওয়ামী ঘরানার সবাই যে ‘এক পরিবার’ হয়ে উঠতে পারেনি—এই অভিযোগপত্র তার প্রমাণ। ডিজির চিঠিতে পরিষ্কার যে, তিনি পুরুষানুক্রমে আওয়ামী ঘরানার একজন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। আবার আবদুল লতিফ বিশ্বাস আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সে সুবাদে মন্ত্রী হয়েছেন। এক্ষেত্রে দুজন মিলে সুখে-শান্তিতে যার যার দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে অশান্তির চরম প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। যতটুকু প্রকাশ পেয়েছে, অশান্তির মাত্রা হয়তো তার চেয়ে অনেক গভীর। সবাই সদলবলে ‘খাই খাই’ নীতির অনুসারী হলে এমনটিই হওয়ার কথা।
তবে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো গুরুতর। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত না হলে তাতে এক ধরনের আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হবে। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বর্তমান সরকার। তাই নিজেদের গরজেই সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের উচিত অবিলম্বে প্রকৃত সত্য জানা এবং জনগণকে জানানো। সেইসঙ্গে কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অফিসারের অভিযোগ থাকলে তা কোথায় জানাতে হবে, সেই জানানোর ভঙ্গি কী হবে ইত্যাদি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার।
অভিযোগগুলো চাঁছাছোলা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর জন্য বিব্রতকর। বিশেষ করে অধস্তন কর্মকর্তার কাছ থেকে মন্ত্রীর ঘুষ দাবি করা এবং মন্ত্রীর পক্ষ থেকে একজন কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেয়া—চোখ কপালে উঠে যাওয়ার মতো অভিযোগ। মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরিরত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এভাবে লিখিত অভিযোগ করতে বুকের পাটা লাগে। বোঝা যাচ্ছে, চলতি দায়িত্ব পালনরত ডিজির সেটা আছে। তবে খুঁটির জোর ছাড়া এ ধরনের বুকের পাটা এককথায় অসম্ভব। তাই ডিজির খুঁটির জোর যে যথেষ্ট শক্ত, তা বুঝতে কষ্ট হয় না। বিশেষ করে আমার দেশ-এর প্রতিবেদনে তুলে ধরা চিঠির বিভিন্ন অংশ খুঁটিয়ে পড়লে বোঝা যায়, অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে চিঠিটি এমনভাবে লেখা হয়েছে, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার শীর্ষ পর্যায়ে তাত্ক্ষণিকভাবে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়। চিঠিটি লেখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বরাবরে। সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মন্ত্রীদের অবস্থান ও মর্যাদা প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার উপরে থাকার কথা। উপদেষ্টাকে যদি মন্ত্রীর মর্যাদায় নিয়োগ করা হয়, তবে সেক্ষেত্রে তার মর্যাদা হবে মন্ত্রীর সমান, মন্ত্রীর উপরে নয়। একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে একজন উপদেষ্টার কাছে অভিযোগপত্র দাখিল করে সংশ্লিষ্ট ডিজি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বর্তমান সরকারের আমলে প্রশাসনে দলীয় আনুগত্যের মাপকাঠিতে যেভাবে নিয়োগ-বদলি-পদোন্নতি-ওএসডিকরণের বন্যা বয়ে যাচ্ছে, তাতে চেইন অব কমান্ড, নিয়ম, রেওয়াজ ইত্যাদিসহ অনেক কিছু এরই মধ্যে ভেসে গেছে। তারপরও আওয়ামী ঘরানার সবাই যে ‘এক পরিবার’ হয়ে উঠতে পারেনি—এই অভিযোগপত্র তার প্রমাণ। ডিজির চিঠিতে পরিষ্কার যে, তিনি পুরুষানুক্রমে আওয়ামী ঘরানার একজন নিবেদিতপ্রাণ সদস্য। আবার আবদুল লতিফ বিশ্বাস আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সে সুবাদে মন্ত্রী হয়েছেন। এক্ষেত্রে দুজন মিলে সুখে-শান্তিতে যার যার দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে অশান্তির চরম প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। যতটুকু প্রকাশ পেয়েছে, অশান্তির মাত্রা হয়তো তার চেয়ে অনেক গভীর। সবাই সদলবলে ‘খাই খাই’ নীতির অনুসারী হলে এমনটিই হওয়ার কথা।
তবে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগগুলো গুরুতর। এ ব্যাপারে যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটিত না হলে তাতে এক ধরনের আস্থার সঙ্কট সৃষ্টি হবে। ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বর্তমান সরকার। তাই নিজেদের গরজেই সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের উচিত অবিলম্বে প্রকৃত সত্য জানা এবং জনগণকে জানানো। সেইসঙ্গে কোনো মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো অফিসারের অভিযোগ থাকলে তা কোথায় জানাতে হবে, সেই জানানোর ভঙ্গি কী হবে ইত্যাদি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার।
No comments