মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার-ব্যয় ও ভোগান্তি কমাতেই হবে
মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার ফের খুলে যাচ্ছে, এটা সুসংবাদ। বাংলাদেশের আধাদক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের এই বড় বাজার নিজেদের দোষেই বিপন্ন হয়েছিল। মালয়েশিয়া নতুন কর্মী গ্রহণই শুধু বন্ধ করেনি, সে দেশে অবস্থানকারী বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি শ্রমিককে স্বদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার তৎপরতাও শুরু করে।
শেষ পর্যন্ত দুই দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনায় এ জটিলতার অবসান ঘটে। একই সঙ্গে নতুন করে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে নতুন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে_ সরকারি নাকি বেসরকারি, কাদের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশি কর্মীরা সেখানে যাবেন সেটা নিয়ে। প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানিয়েছেন, বেসরকারি নয় বরং সরকারি ব্যবস্থাপনাতেই মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীরা যাবেন। এ ধরনের সিদ্ধান্তের মূলে রয়েছে অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনা এবং জনশক্তি পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিয়ম রোধ। সন্দেহ নেই, এ ক্ষেত্রে দায় বেসরকারি রিত্রুক্রটিং এজেন্সিগুলোর ওপরই চাপানো হয়েছে। জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার নেতৃত্বের উচিত হবে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করা। মালয়েশিয়া শুধু নয়, আরও কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের কর্মীদের নানা দুর্ভোগ এবং নির্ধারিত হারের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আদায়ের জন্য বেশকিছু রিত্রুক্রটিং এজেন্সিকে দায়ী করা হয়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের জন্য ঢালাওভাবে সব বেসরকারি এজেন্সিকে বঞ্চিত করা সঠিক পদক্ষেপ নাও হতে পারে। কিন্তু বায়রার সদস্যদের বাস্তবতাও মনে রাখতে হবে। একটি বড় বাজার নতুন করে চালু হতে চলেছে এবং তার সুযোগ গ্রহণ করতে গিয়ে যেন নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি করা না হয়। সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি এবং গাফিলতি থাকে। মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুকদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত অঙ্কের চেয়ে বেশি অর্থ ঘুষ হিসেবে হাতিয়ে নেওয়ার মতো অনেক লোক সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভেতরে এবং অন্যত্র রয়েছে। তারাও যে সম্ভাবনাময় এ বাজারে নতুন করে জটিলতা সৃষ্টি করবে না, তার নিশ্চয়তা নেই। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য। মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জন্য এটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। আমরা মনে করি, সরকার নাকি বায়রার সদস্য সংস্থাগুলো_ কাদের ব্যবস্থাপনায় কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাবেন সেটা নয়, বরং সম্ভাব্য স্বল্প ব্যয় ও কম ভোগান্তিতে তাদের কাজের জন্য পাঠানোই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। এর ব্যত্যয় ঘটলে সবচেয়ে ক্ষতি হবে দেশের।
No comments