মার্চজুড়ে রাজপথ দখলে রাখবে আওয়ামী লীগ by জাহাঙ্গীর আলম

মার্চজুড়ে রাজপথ দখলে রাখবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ জন্য দিবসভিত্তিক কর্মসূচি ছাড়াও নতুন কর্মসূচি নিয়ে সক্রিয় থাকবে দলটি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে রাজধানীতে একাধিক সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচিও থাকতে পারে।


এ ছাড়া ১২ মার্চ বিএনপির ঢাকা মহাসমাবেশ কর্মসূচির আগে বা পরে মহানগর আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিতে পারে। পরিকল্পনা আছে ১৪ দলের উদ্যোগে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করারও। দলের নেতারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
দলীয় নেতারা জানান, প্রাথমিকভাবে ৯, ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি দেওয়ার কথা চলছে। তবে ১২ মার্চ কোনো কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা এখন পর্যন্ত নেই।
৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ১৪ দলের মানববন্ধন কর্মসূচি দেওয়া আছে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে থানা ও ওয়ার্ডে সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে এবং তা মধ্য মার্চ পর্যন্ত চলবে। দিবসভিত্তিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করার জন্য আজ শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক বসছে। এ বৈঠকে ২১ ফেব্রুয়ারি, ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ মার্চ বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা তাদের কর্মসূচি পালন করবে। তবে মার্চ মাসজুড়েই আমাদের কর্মসূচি থাকবে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, মহানগরের দেড় মাসব্যাপী কর্মসূচি চলছে। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সূত্র জানায়, দিবসভিত্তিক কর্মসূচি ছাড়াও মার্চ থেকে ১৪ দলের উদ্যোগে বিভাগীয় মহাসমাবেশ কর্মসূচি শুরু হতে পারে। মার্চে ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ থাকায় ঢাকা থেকেই ১৪ দলের বিভাগীয় মহাসমাবেশ কর্মসূচি শুরু হতে পারে। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর এ মাসেই সভাপতিমণ্ডলী ও উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক ডাকা হতে পারে। এসব বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে দিবসভিত্তিক কর্মসূচি পালন ছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ১৪ দলের উদ্যোগে বিভাগীয় মহাসমাবেশ এবং মানববন্ধন কর্মসূচি থাকতে পারে।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়, রাজনৈতিক দল হিসেবেই আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চলবে। এ নিয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে কোনো সংঘাতে তাঁরা যাবেন না। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন থেকে তাঁরা পিছুও হটবেন না।
এদিকে ৭ ফেব্রুয়ারির মানববন্ধন কর্মসূচির স্থান চূড়ান্ত হয়েছে। গাবতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারজুড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। বেলা তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত এক ঘণ্টার কর্মসূচি চলাকালে বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করবেন ১৪ দলের নেতারা।
ইতিমধ্যে ঢাকা মহানগর ১৪ দল মানববন্ধন কর্মসূচি সফল করার প্রস্তুতি সভা করেছে। কাল রোববার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সঙ্গে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও থানার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের বৈঠক ডাকা হয়েছে। এ বৈঠকে কর্মসূচি বাস্তবায়নের কর্মকৌশল প্রণয়ন করা হবে বলে নগর নেতারা জানিয়েছেন।
গাবতলী থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত শাখা হচ্ছে: গাবতলী থেকে টেকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত পল্লবী থানা; টেকনিক্যাল থেকে শ্যামলী পর্যন্ত মিরপুর থানা; শ্যামলী থেকে আসাদগেট পর্যন্ত কাফরুল ও ক্যান্টনমেন্ট থানা; আসাদগেট থেকে রাসেল স্কয়ার পর্যন্ত মোহাম্মদপুর ও তেজগাঁও থানা; রাসেল স্কয়ার থেকে গ্রিন রোড চৌরাস্তা পর্যন্ত ধানমন্ডি থানা; গ্রিন রোড চৌরাস্তা থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত তেজগাঁও থানা; সোনারগাঁও হোটেল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত হাজারীবাগ ও উত্তরা থানা; বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৎস্য ভবন পর্যন্ত লালবাগ ও বাড্ডা থানা; মৎস্য ভবন থেকে প্রেসক্লাব হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত রমনা, গুলশান ও বিমানবন্দর থানা; পল্টন মোড় থেকে জিরো পয়েন্ট, স্টেডিয়াম ও গুলিস্তান স্কয়ার পর্যন্ত কোতোয়ালি থানা; গুলিস্তান স্কয়ার থেকে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত মতিঝিল থানা; ইত্তেফাক মোড় থেকে হাটখোলা পর্যন্ত খিলগাঁও ও সবুজবাগ থানা; হাটখোলা থেকে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সূত্রাপুর ও শ্যামপুর থানা এবং সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত ডেমরা থানা।

No comments

Powered by Blogger.