নির্বাচনী আইন সংস্কার প্রস্তাব অনুমোদন-আপত্তির মুখে জনতহবিল আইন বাদ দিল ইসি by হারুন আল রশীদ
নির্বাচন কালোটাকার প্রভাবমুক্ত রাখতে এবং প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ব্যয়ে স্বচ্ছতা আনতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে কঠোর বিধানের সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির প্রস্তাব অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন প্রমাণিত হলে কমিশন তাঁর সংসদ সদস্যপদ বাতিল করতে পারবে।
এ ছাড়া রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন শর্ত কঠোর এবং রাজনৈতিক দল থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমিশন সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলকে আর্থিক সহায়তার জন্য ‘জনতহবিল আইন’ করার চিন্তাভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তির কারণে এ প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে না। আবার ইসির প্রাথমিক প্রস্তাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় ‘সশস্ত্র বাহিনী’কে রাখা হলেও চূড়ান্ত প্রস্তাবে তা নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের এ প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবার ইসি অনুমোদন করেছে। এর সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন সংশোধনের প্রস্তাবও রয়েছে। এসব প্রস্তাব সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আগের আইনের বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা ছিল। যে কারণে বেশ কয়েকজন সাংসদ হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও ইসি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এবার সে আইনগুলো স্পষ্ট করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রার্থী ও দলগুলো যাতে নির্বাচনে কালোটাকার প্রভাব খাটানো থেকে বিরত থাকে, সে জন্যও কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার যাতে নির্বাচন প্রভাবিত করতে না পারে, সে রকম আইন করার সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতা-সম্পর্কিত ১২ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আদালত কর্তৃক পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ মনোনয়নপত্রের সঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০-ই ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর যদি প্রমাণিত হয় তিনি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে ওই সাংসদের সদস্যপদ বাতিল হবে। বিদ্যমান আইনে এ কারণে প্রার্থিতা বাতিলের কথা বলা থাকলেও নির্বাচিত হওয়ার পর এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী হবে, সে সম্পর্কে কিছু বলা নেই।
বিদ্যমান আইনের ৯০-বি ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কমপক্ষে ১০টি জেলা এবং ৫০টি উপজেলায় দপ্তর থাকতে হবে। এ সম্পর্কে ইসির সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে দলের নিবন্ধন বাতিল হবে।
নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর দৌরাত্ম্য কমাতে ধারা ১৬ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে কোনো দল থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে দল থেকে যেকোনো একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিতে হবে। দল থেকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া বাকি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৩ ধারায় প্রস্তাব করা হয়েছে, জামানত হিসেবে ২০ হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১০ হাজার টাকা এবং তা নগদেও জমা দেওয়া যেত। ৪৪-বি ধারায় প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সভার আয়োজন না করলে কোনো প্রার্থী তাঁর আসনে একটির বেশি জনসভা করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের একাধিক পর্যবেক্ষক দল প্রার্থীর নির্বাচন ব্যয় পর্যবেক্ষণ করবে। নির্বাচন চলাকালে প্রার্থীকে প্রত্যেক সপ্তাহের শেষে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব কমিশনে জমা দিতে হবে।
নির্বাচন চলাকালে সরকারের চারটি মন্ত্রণালয় নির্বাচন যাতে প্রভাবিত করতে না পারে, সে জন্য ৪৪-ই ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার দিন থেকে পরবর্তী সরকার গঠন পর্যন্ত সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করে নির্বাচন-সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
২৬ ধারায় বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
কমিশনার নিয়োগবিধি: প্রস্তাবিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে, চারজন কমিশনারের মধ্যে একজন নারী থাকবেন। এ জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি থাকবে। এ কমিটির সদস্য হবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, হাইকোর্টের একজন বিচারক, দুদকের চেয়ারম্যান, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও মহাহিসাব নিরীক্ষক।
কমিটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিটি শূন্যপদের জন্য তিনজনের নাম প্রস্তাব করবে। জাতীয় সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটি এ প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি তালিকা থেকে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে পারবেন।
সীমানা নির্ধারণ আইন: প্রস্তাবিত জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ আইনে বলা হয়েছে, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে একটি করে আসন থাকবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের আসন ১০টিতে সীমাবদ্ধ থাকবে। বাকি ২৮৭টি আসন ৬১ জেলায় ভাগ হবে। তবে প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে দুটি করে আসন থাকবে।
বর্তমানে ঢাকায় ২০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১৫টি আসন।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জনসংখ্যা বাড়ার কারণে ভবিষ্যতে ঢাকা সিটির আসন আরও বাড়বে এবং তাতে দেশের অন্যান্য জেলায় আসন কমে যাবে। সে জন্যই নতুন এ বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
কমিশন সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলকে আর্থিক সহায়তার জন্য ‘জনতহবিল আইন’ করার চিন্তাভাবনা থাকলেও রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তির কারণে এ প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে না। আবার ইসির প্রাথমিক প্রস্তাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় ‘সশস্ত্র বাহিনী’কে রাখা হলেও চূড়ান্ত প্রস্তাবে তা নেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের এ প্রস্তাব গত বৃহস্পতিবার ইসি অনুমোদন করেছে। এর সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন এবং সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ আইন সংশোধনের প্রস্তাবও রয়েছে। এসব প্রস্তাব সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, আগের আইনের বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা ছিল। যে কারণে বেশ কয়েকজন সাংসদ হলফনামায় অসত্য তথ্য দেওয়া সত্ত্বেও ইসি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এবার সে আইনগুলো স্পষ্ট করার সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রার্থী ও দলগুলো যাতে নির্বাচনে কালোটাকার প্রভাব খাটানো থেকে বিরত থাকে, সে জন্যও কিছু প্রস্তাব করা হয়েছে। সরকার যাতে নির্বাচন প্রভাবিত করতে না পারে, সে রকম আইন করার সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রার্থীর যোগ্যতা ও অযোগ্যতা-সম্পর্কিত ১২ ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আদালত কর্তৃক পলাতক ঘোষিত ব্যক্তি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। সম্ভাব্য প্রার্থীদের কেউ মনোনয়নপত্রের সঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিলে তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল হবে।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯০-ই ধারা সংশোধনের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর যদি প্রমাণিত হয় তিনি হলফনামায় মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, সে ক্ষেত্রে ওই সাংসদের সদস্যপদ বাতিল হবে। বিদ্যমান আইনে এ কারণে প্রার্থিতা বাতিলের কথা বলা থাকলেও নির্বাচিত হওয়ার পর এ অভিযোগ প্রমাণিত হলে কী হবে, সে সম্পর্কে কিছু বলা নেই।
বিদ্যমান আইনের ৯০-বি ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের কমপক্ষে ১০টি জেলা এবং ৫০টি উপজেলায় দপ্তর থাকতে হবে। এ সম্পর্কে ইসির সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এ শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে দলের নিবন্ধন বাতিল হবে।
নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীর দৌরাত্ম্য কমাতে ধারা ১৬ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে কোনো দল থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আগে দল থেকে যেকোনো একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিতে হবে। দল থেকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন পাওয়া বাকি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
১৩ ধারায় প্রস্তাব করা হয়েছে, জামানত হিসেবে ২০ হাজার টাকা ব্যাংক ড্রাফট অথবা পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা দিতে হবে। আগে এর পরিমাণ ছিল ১০ হাজার টাকা এবং তা নগদেও জমা দেওয়া যেত। ৪৪-বি ধারায় প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ১৫ থেকে ২৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সভার আয়োজন না করলে কোনো প্রার্থী তাঁর আসনে একটির বেশি জনসভা করতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশনের একাধিক পর্যবেক্ষক দল প্রার্থীর নির্বাচন ব্যয় পর্যবেক্ষণ করবে। নির্বাচন চলাকালে প্রার্থীকে প্রত্যেক সপ্তাহের শেষে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব কমিশনে জমা দিতে হবে।
নির্বাচন চলাকালে সরকারের চারটি মন্ত্রণালয় নির্বাচন যাতে প্রভাবিত করতে না পারে, সে জন্য ৪৪-ই ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সংসদ ভেঙে যাওয়ার দিন থেকে পরবর্তী সরকার গঠন পর্যন্ত সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ না করে নির্বাচন-সম্পর্কিত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না।
২৬ ধারায় বলা হয়েছে, সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করা হবে কি না, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
কমিশনার নিয়োগবিধি: প্রস্তাবিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগবিধিতে বলা হয়েছে, চারজন কমিশনারের মধ্যে একজন নারী থাকবেন। এ জন্য একটি অনুসন্ধান কমিটি থাকবে। এ কমিটির সদস্য হবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার, হাইকোর্টের একজন বিচারক, দুদকের চেয়ারম্যান, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও মহাহিসাব নিরীক্ষক।
কমিটি ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিটি শূন্যপদের জন্য তিনজনের নাম প্রস্তাব করবে। জাতীয় সংসদের কার্য-উপদেষ্টা কমিটি এ প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে। রাষ্ট্রপতি তালিকা থেকে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ দিতে পারবেন।
সীমানা নির্ধারণ আইন: প্রস্তাবিত জাতীয় সংসদের সীমানা নির্ধারণ আইনে বলা হয়েছে, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে একটি করে আসন থাকবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের আসন ১০টিতে সীমাবদ্ধ থাকবে। বাকি ২৮৭টি আসন ৬১ জেলায় ভাগ হবে। তবে প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে দুটি করে আসন থাকবে।
বর্তমানে ঢাকায় ২০টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন এলাকায় রয়েছে ১৫টি আসন।
নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন বলেন, জনসংখ্যা বাড়ার কারণে ভবিষ্যতে ঢাকা সিটির আসন আরও বাড়বে এবং তাতে দেশের অন্যান্য জেলায় আসন কমে যাবে। সে জন্যই নতুন এ বিধান প্রস্তাব করা হয়েছে।
No comments