জনতার মুখোমুখি তিন প্রার্থী by নিয়াজ মোর্শেদ,

রাসরি জনগণের মুখোমুখি হয়ে নারায়ণগঞ্জের ছয় মেয়র প্রার্থীই বললেন, জনসেবা করতেই জনপ্রতিনিধি হতে চান তারা। এখন দেওয়া প্রতিশ্রুতি বিজয়ী হলে বাস্তবায়ন করবেন তারা। সবাই প্রত্যাশা করছেন, জনগণ তাদের সে সুযোগ দেবে। ভোটের আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে সরাসরি বিতর্ক অনুষ্ঠানে তারা এ কথা বলেন। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ১৫০ ভোটারের মুখোমুখি হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের ছয় প্রার্থী। এ সময় দলীয় মনোনয়ন প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান ও আইভী বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন।


নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে বড় পরিসরে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার হলেও তাতে প্রচারে ঘাটতি রয়েছে বলে দাবি করেন অধিকাংশ মেয়র প্রার্থী। বিএনপি নেতা তৈমুর সরাসরি তার আপত্তি তুলে ধরেন। মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের মুক্তমঞ্চ থেকে এ অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত
বিডিনিউজেও দেড় ঘণ্টার বিতর্কটি সরাসরি (ওয়েবকাস্ট) দেখা যায়। ভোটযুদ্ধের আগে বাগ্যুদ্ধ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের এ বিতর্ক অনুষ্ঠান ঘিরে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন মোড়ে টেলিভিশনের সামনে মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিল। বিতর্ক অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিডিনিউজের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী। নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এ বিতর্ক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সব প্রার্থীর অংশগ্রহণে ভালো অনুষ্ঠান হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রার্থীরা কেন নেতৃত্ব নিতে চান, এলাকাবাসীর জন্য তাদের পরিকল্পনা কী, ভোটারদের চাওয়া-পাওয়া কী_ সরাসরি দুই পক্ষের যোগসূত্র স্থাপনের জন্যই এ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে ১৫০ ভোটার উপস্থিত থাকলেও প্রশ্ন করার সুযোগ পান মাত্র ১০ জন। এ কারণে অনুষ্ঠান শেষে ক্ষুব্ধ দর্শকরা মঞ্চ ঘিরে ধরেন। তারা মেয়র প্রার্থীদের কাছে নিজেদের এলাকা উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত হিসেবে তুলে ধরেন এবং প্রার্থীদের কাছে প্রতিশ্রুতি দাবি করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় প্রার্থীদের জমা দেওয়া তাদের আয়-ব্যয়, মামলা-মোকদ্দমা ও সম্পদের বিবরণ তুলে ধরেন সঞ্চালক। নারায়ণগঞ্জের ইতিহাস, ঐতিহ্য নিয়ে নির্মিত স্বল্প সময়ের একটি ভিডিও ফুটেজ তুলে ধরা হয়। পরে প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন।
সাংসদ থাকাকালে উন্নয়নকর্মের বিবরণ তুলে ধরেন একেএম শামীম ওসমান। সাবেক এ সাংসদ বলেন, ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত তিনি এমপি থাকাকালে নারায়ণগঞ্জে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জে লিংক রোড নির্মাণ, ফতুল্লায় গ্যাস সংযোগসহ এলাকায় বিদ্যুৎ ও পানি ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। আগামী দিনে তার স্বপ্ন নারায়ণগঞ্জকে দেশের সবচেয়ে সেরা সিটি করপোরেশন হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি নির্বাচিত হলে নারায়ণগঞ্জকে একটি স্কাইসিটিতে রূপান্তর করার স্বপ্ন দেখছেন। এ স্বপ্ন পূরণে নারায়ণগঞ্জবাসীর ভোট চান তিনি। নারায়ণগঞ্জবাসী তাকে ভোট দেবে বলেও তার বিশ্বাস। সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের সেবা করে আসছেন। পৌর মেয়র হিসেবেও তিনি মানুষের সেবা করেছেন। ভোটাররা তাকে সুযোগ দিলে মানুষের সেবা অব্যাহত রাখবেন। বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, আমি ম্যান অব কমিটমেন্ট। ৪০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জবাসীর সুখে-দুঃখে পাশে রয়েছি। এ জন্য জেল-জুলুম ও মামলার শিকার হয়েছি। জীবননাশের জন্য গুলি পর্যন্ত করা হয়েছে। তিনি বিজয়ী হলে নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে নিজেকে উৎসর্গ করবেন বলে জানান। আতিকুর রহমান নান্নু বলেন, অবহেলিত নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নই হবে তার প্রধান লক্ষ্য। শরীফ মোহাম্মদ বলেন, তিনি নিজ উদ্যোগে এলাকায় অনেক স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা নির্মাণ করেছেন। নগরপিতা হলে তার উন্নয়ন কাজ অব্যাহত থাকবে। আতিকুল ইসলাম জীবন বলেন, জনগণের সেবা করার জন্য তার মায়ের নির্দেশে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বিজয়ী হলে তৃণমূল পর্যায়ের ভোটারদের নিয়ে এলাকার সমস্যা সমাধানে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।
অনুষ্ঠানে হেভিওয়েট তিন প্রার্থী শামীম ওসমান, ডা. তৈমুর আলম খন্দকার এবং ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করেন। অপর তিন প্রার্থী আতিকুর রহমান নান্নু, আতিকুল ইসলাম জীবন ও শরীফ মোহাম্মদের জবাব এবং সরস মন্তব্য উপস্থিত দর্শকদের মধ্যে হাস্যরসের জোগান দেয়।
নারায়ণগঞ্জে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহারকে জনপ্রিয় করতে বেশ আগে থেকেই প্রচারণা করা উচিত ছিল বলে মত দিয়েছেন অধিকাংশ মেয়র প্রার্থী। এক্ষেত্রে ইভিএম নিয়ে ভালো প্রচারণা হয়নি বলে দাবি করেন তারা। বিরোধী দল সমর্থিত প্রার্থী বাংলাদেশে ইভিএম নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেন। নির্বাচনী বিতর্কে অংশ নিয়ে একজন দর্শক জানতে চান_ স্বল্প সময়ে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সচেতন হতে পারিনি। প্রার্থীরা কী ভাবছেন জানতে চান সঞ্চালক।
এ বিষয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমুর বলেন, প্রশ্নকর্তার সঙ্গে একমত। ইভিএম নিয়ে জোরালো প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় শোকজ করা হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার নিয়ন্ত্রণ ছাড়া কারচুপি করা যায় না। ওই কর্মকর্তা সেন্টার নিয়ন্ত্রণ করবেন না, তিনি যে সরকারের নিয়ন্ত্রণে যাবেন না, এ নিশ্চয়তা কী? বিভিন্ন দেশে এ ইভিএম পদ্ধতি যে নিরাপদ নয় তা প্রমাণ হয়েছে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে পরীক্ষা কেন? ডেমো করতেন?
শামীম বলেন, 'ই-ভোটিং নিয়ে অপব্যাখ্যা হয়। ইলেকট্রনিক ভোটিংয়ে হ্যাক করা যায়। তৈমুরভাই ইসির কাছে মতামত দিতে পারতেন। এ বিষয়ে প্রচার নিয়ে ইসির কিছু শৈথিল্য আছে। ইভিএমের প্রচার সঠিকভাবে হয়নি।
ডা. আইভী বলেন, এটা নতুন প্রযুক্তি তাই স্বাগত জানিয়েছি। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলব, প্রযুক্তি ব্যবহার করবো না_ তা হয় না। দেশের মানুষ ক্লেভার। প্রচার বেশি করতে হতো। আরও বেশিদিন আগে শুরু হলে ভালো হতো। কারচুরি কোনো সুযোগ নেই। ভোট গ্রহণে যেন সময় কম নেওয়া না হয়।
সংলাপের মাঝে নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন জানান, ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে একটি ভোট কক্ষে সারাদিনে গড়ে ৩৩১ জন ভোট দিতে পারবেন। প্রতিটি ভোটের জন্য সময় লাগবে মাত্র ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড। ৯টি ওয়ার্ডের ৪৫০টি বুথে ইভিএম ব্যবহার করা হবে।
দর্শকের আসন থেকে আলমগীর কবির রাসেল এবং তুহিন জানতে চান নির্বাচনে আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি নির্বাচনের পরে আর বাস্তবায়ন হয় না। এমন কেন হয়? তারা নির্বাচিত হলে কি প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন?
মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনে বিজয়ী হলে প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রতিজ্ঞা করেন। মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বাস্তবভিত্তিক ও বাস্তবায়নযোগ্য প্রতিশ্রুতি পালনের প্রতিশ্রুতি দেন। তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, তিনি কথা দিলে তা রক্ষা করেন। নান্নু মুন্সী বলেন, বিজয়ী হওয়ার পর আর খবর থাকে না। তারা নিজেদের উন্নতির চিন্তায় থাকেন। ফুলে ফেঁপে কলাগাছ হয়ে যান। শামীম ওসমান বলেন, একবার সাংসদ হিসেবে সুযোগ দেওয়ায় গ্যাসলাইন স্থাপন, স্টেডিয়াম তৈরি, লিংক রোড তৈরি, পতিতা পল্লী উচ্ছেদসহ ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার কাজ করেছেন।
ডা. আইভী জানান, ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহিতা পছন্দ করেন। ২০০৩ সালে পৌর মেয়র নির্বাচনে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার অধিকাংশই পালন করেছেন। বাস্তবভিত্তিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যেভাবে পূরণ করেছেন, ভবিষ্যতেও মানুষকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, সরকারের সহযোগিতায় পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
নূরউদ্দিন নামে এক ভোটার জানতে চান শিশু পার্কের কথা। তার প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান এবং তৈমুর আলম খন্দকার এবং ডা. আইভী একাধিক পার্ক তৈরির প্রতিশ্রুতি দেন। ডা. আইভী জানান, পৌর মেয়র থাকাকালে তিনি একটি পার্কের কাজ শুরু করেছিলেন। সেটির কাজ চলছে।
কাজী রোকনুজ্জামান জানতে চান, শামীম এবং আইভী দলীয় সমর্থন লাভের জন্য এত মুখিয়ে ছিলেন কেন। তার এ প্রশ্নের জবাবে ডা. আইভী বলেন, বিগত ৮ বছর কাজ করেছি। আশা ছিল দল আমাকে সমর্থন দেবে। তবে দলের সমর্থন পেতে এত মরিয়া ছিলাম না। শামীম ওসমান বলেন, দলের সমর্থন ছাড়া কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। বিরোধী দল আগে প্রার্থী ঘোষণা করায় এ ঘটনা ঘটে।
কলেজছাত্রী জেবার প্রশ্ন ছিল স্কাইসিটি তৈরির অর্থের উৎস কী? এ প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, এটি একটি ধারণা মাত্র। আমরা সবাই মিলে আমাদের বাড়ির সামনের অংশ আকাশি-সাদা রঙ করি তাহলে এটি সম্ভব।
মাওলানা আবুল হাসান নামের এক ভোটার তৈমুর আলমের কাছে জানতে চান, আপনি দুর্নীতির মাধ্যমে অনেক বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। আপনার নামে দুর্নীতির নয়টি মামলা রয়েছে। মেয়র হলে কী উন্নয়ন করবেন। জবাবে তৈমুর আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৩টি দুর্নীতির মামলা হয়েছিল। এ ধরনের জবাব দেওয়ার পর সঞ্চালক তাকে থামিয়ে দেন।
অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম আজাদ জানতে চান, সরকারের সহায়তা না পেলে কী করে নাসিকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এগিয়ে নিয়ে যাবেন? তৈমুর আলম খন্দকার ব্রিটেন ও ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেন, জনগণ ভারসাম্য পছন্দ করে।
শামীম ওসমান বলেন, গতানুগতিক সিটি করপোরেশন হলে সরকারের সহায়তার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, ব্রিজ, টেলিফোন, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহে কাজ করেছি। আগামীতেও মানুষের জন্য কিছু করতে চাই।
ডা. আইভী বলেন, স্থানীয় সরকারকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিলে সরকারের সহায়তা খুব বেশি প্রয়াজন পড়ে না। জনগণের সহায়তা, বৈদেশিক সহায়তা, সরকারি ও ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালিয়ে নেওয়া সম্ভব। তিনি জানান, বিএনপি, আওয়ামী লীগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় পৌর মেয়র হিসেবে তিনি প্রচুর কাজ করেছেন। তোলারাম কলেজের শিক্ষক জীবনকৃষ্ণ মোদক জানতে চান, প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে নারায়ণগঞ্জে ভালো মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করবেন কি-না। এর জবাবে পাঁচ প্রার্থীই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কথা বলেন। একমাত্র ডা. আইভী নির্বাচিত হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ভোটার লায়লা ইয়াসমীনের প্রশ্নের জবাবে ছয় প্রার্থীই জানান, নির্বাচিত হলে শিশু একাডেমীর নিজস্ব ভবন তৈরি করে দেবেন। তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ শিরিন বেগমের প্রশ্নের জবাবে আইভী এবং শামীম বলেন, নির্বাচিত হলে কলেজের জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ব্যবস্থা নেবেন।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অর্থের উৎস সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান জানান, মূলত সিটি করপোরেশনবাসীর করের অর্থ থেকেই তিনি ব্যয় নির্বাহ করবেন। বন্দরে একটি ব্রিজ নির্মাণের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, তার ভাই সাংসদ নাসিম ওসমানের প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যে ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। শিগগিরই এ ব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু হবে। এর পাশাপাশি সেখানকার মানুষের প্রাণের দাবি বন্ধ থাকা বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজও শুরু হবে বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জবাসী আপনাকে কেন ভোট দেবেন_ এ প্রশ্নের উত্তরে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, বাবার আমল থেকেই তাকে মানুষের সেবা করা ও তাদের সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়াতে দেখেছি। তাকে দেখেই আমার মধ্যে ছোটবেলা থেকে দেশ ও মানুষের সেবা করার ইচ্ছা জেগে ওঠে। এরপর আট বছর পৌরসভার মেয়র হিসেবে মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছি। সুযোগ পেয়ে নারায়ণগঞ্জবাসীর ভাগ্য উন্নয়ন, পরিচ্ছন্ন ও যানজটমুক্ত নগরী গড়ে তুলতে আত্মনিয়োগ করেছি। এসব বিবেচনায় মনে করি, নারায়ণগঞ্জবাসী নিশ্চয়ই ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করবেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বেসকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, প্রার্থীদের গালভরা প্রতিশ্রুতি নয়। আমরা কাজে বিশ্বাস করতে চাই। অনেকেই বলেন, বিতর্ক অনুষ্ঠান দেখেই তারা ঠিক করবেন, কাকে ভোট দেবেন তারা।
নারায়ণগঞ্জের মেয়র হওয়ার জন্য ৩০ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের শামীম ওসমান, দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে সেলিনা হায়াৎ আইভী, আনারস প্রতীক নিয়ে বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার, গরুর গাড়ি প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী। এ ছাড়া নির্দলীয় প্রার্থী শরীফ মোহাম্মদ হাঁস প্রতীক নিয়ে ও আতিকুল ইসলাম জীবন তালা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রথমবারের মতো নির্বাচনী বিতর্ক ওয়েবকাস্টের উদ্যোগের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা এর আগে বলেন, শুধু এলাকাবাসী নয়, বহির্বিশ্বেও প্রবাসীরা যেন প্রার্থীদের নিয়ে এ বিতর্ক দেখতে পারে, সে জন্য এ ব্যবস্থা। প্রার্থীদের কাছে এলাকাবাসীর প্রত্যাশা কী এবং প্রতিদ্বন্দ্বীরা কী করতে চান_ এ বিতর্কে তার আভাসই পাবে জনগণ।
বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০০৮ খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল এবং ২০১০ সালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচনী সংলাপের আয়োজন করে।

No comments

Powered by Blogger.