প্রস্তুত এখন সকল অবকাঠামো- যুদ্ধাপরাধীর বিচারের জন্য- ০ শীঘ্রই চেয়ারম্যান, তদন্ত সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগ

 যু্দ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। পুরনো হাইকোর্ট ভবনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে আদালতের নাম দেয়া হয়েছে 'আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল।'
শীঘ্র ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যান, ২ জন সদস্যসহ তদনত্ম সংস্থা ও আইনজীবী নিয়োগ করা হবে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রম্নতি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা। ওদিকে যুদ্ধাপরাধীরাও তাদের দেশী-বিদেশী আইনজীবী প্যানেল তৈরি এবং তারাও ফান্ড গঠন করেছে। ইতোমধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের বিচার হয়েছে। বিচারে আংশিক রায় কার্যকর হয়েছে। এখন সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার উদ্যোগ নিয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনালের অবকাঠামো প্রায় চূড়ানত্ম। বুধবার আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যু্্দ্ধাপরাধীদের বিচারে ট্রাইবু্যনালসহ অন্যান্য স্থাপনা পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লৰ্যে ট্রাইবু্যনাল স্থাপনের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। ট্রাইবু্যনাল, তদনত্ম সংস্থা, প্রসিকিউটর, রেজিস্ট্রার, হাজতখানা, পর্যবেৰক ও নিরাপত্তাকমর্ীদের কৰসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী মার্চের মধ্যেই তদনত্ম সংস্থা ও প্রসিকিউটর নিয়োগের পাশাপাশি ট্রাইবু্যনাল গঠন করা সম্ভব হবে। তদনত্ম সংস্থার কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটরদের নামগুলো চূড়ানত্মকরণের পর্যায়ে রয়েছে। একই সাথে সামগ্রিক বিচার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জনবলও নিয়োগ দেয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) এ.কে. খন্দকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান খান, আইন প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরম্নল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম, সেক্টর কমান্ডারর্স ফোরামের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) কেএম শফিউলস্নাহ ও বর্তমান সদস্য সচিব লে. জেনারেল (অব) হারম্নন-অর-রশিদ, ঘাতক দালাল নিমর্ূল কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল কাজী মুকুল।
আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে কতজন অভিযুক্ত হবে তা তদনত্মের ওপর নির্ভরশীল। তদনত্ম শেষ না হলে বিচার কাজ শুরম্ন করা যাবে না। তদনত্ম শেষে চার্জশীট দেখার পর বিচার শুরম্ন হবে। একটি ট্রাইবু্যনালেই বিচার হবে। একজন চেয়ারম্যান ও দুইজন সদস্যের সমন্বয়ে ট্রাইবু্যনাল গঠিত হবে। তিনি বলেন, তদনত্ম সংস্থা নিয়োগসহ তদনত্মের দায়িত্ব হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। প্রসিকিউটর নিয়োগ, ট্রাইবু্যনালের চেয়ারম্যান, সদস্য ও সহায়ক জনবল নিয়োগসহ ট্রাইবু্যনালের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা হলো আইন মন্ত্রণালয়ের কাজ। তথ্য ও দালিলিক প্রমাণাদির ভিত্তিতে যারা অভিযুক্ত হবে তাদের বিচার করা হবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এ দেশে যারা অপরাধ করে তাদের বিচারের জন্য আনত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল আইন সংশোধন করা হয়েছে। বাজেটে ১০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিচার কাজের সময় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দালিলিক প্রমাণাদি সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হবে। এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী বিভিন্ন সংগঠনের সহযোগিতা কামনা করেছেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার গ্রহণযোগ্য করতে সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিচ্ছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী : পরিকল্পনামন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) এ.কে. খন্দকার বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার না হওয়াটা জাতির জন্য কলঙ্ক। দেশের জনগণ অধীর আগ্রহে যু্দ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য অপেৰা করছে। ৪ বছর ধরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ করেছি। এই দাবিটা মুক্তিযোদ্ধাদের নয়; দেশের সকল মানুষের দাবি। আশা করি, বাকি কাজ দ্রম্নত শেষ করা হবে। আমরা চাই যুদ্ধাপরাধীদের দ্রম্নত বিচার হোক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহরা খাতুন বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এই বাংলার মাটিতেই হবে। এ বিচার সম্পন্ন করতে তিনি সর্বসত্মরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে সংসদ শুরম্নর প্রথম দিনেই সম্মত হয়েছিলাম। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও রায় কার্যকর করা হয়েছে। বাকি ৬ জনকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার প্রক্রিয়া রয়েছে। ১ বছর বসে ছিলাম। এর মধ্যেই ট্রাইবু্যনালের কাজ শুরম্ন হয়েছে। অবিলম্বে তদনত্মকারী সংস্থা নিয়োগ দেয়া হবে।
তাজুল ইসলাম : মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) এবি তাজুল ইসলাম বলেছেন, আশা করি দ্রম্নত তদনত্ম সংস্থা নিয়োগ করবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে কারও মনে সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আশা করি দ্রম্নত বিচার শুরম্ন হবে।
সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) কেএম শফিউলস্নাহ বলেন, আশা করছি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শীঘ্র তদনত্মকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করবে। যাতে বিচার সুষ্ঠু ও নিরপেৰ হয় সেজন্য সরকার সব ব্যবস্থা করবে।

No comments

Powered by Blogger.