মনের কোণে হীরে-মুক্তো-ক্ষুদ্র নিয়োগকারীদের কথা একবার ভেবে দেখবেন কি? by ড. সা'দত হুসাইন

কোনো দেশের উন্নয়ন কর্মসূচির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান বাড়ানো; অর্থাৎ কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করা। জাতীয় উৎপাদন, মাথাপিছু আয়, রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, সম্পদের সুষম বা সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহার, পরিবেশ সংরক্ষণও উন্নয়নের অন্যতম উদ্দেশ্য।
তবে রাজনৈতিক এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে কর্মসংস্থানের গুরুত্ব তুলনামূলক বেশি। এটি ন্যায়ানুগ বণ্টন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কর্মসংস্থান একজন ব্যক্তির জন্য শুধু পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা করে না, এটি ব্যক্তিকে আত্মমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করে; তার জীবনকে অর্থবহ করে, জীবনে সুখ এবং আনন্দের পরিমাণ সামান্য হলেও বাড়িয়ে দেয়। উন্নত দেশে কর্মসংস্থানের উপাত্তকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। প্রতি প্রান্তিকে মূলত কর্মসংস্থানের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অর্থনীতির চালচিত্রের প্রতিবেদন প্রস্তুত ও প্রকাশ করা হয়। কর্মসংস্থানসংক্রান্ত নেতিবাচক প্রতিবেদন শাসক দল এবং সাধারণ নাগরিকের জন্য বিশেষ উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সাধারণত উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। মূলত পুঁজি এবং শ্রমের সহযোগে উৎপাদন প্রক্রিয়া সচল হয়। পুঁজির মধ্যে ভূমিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যদিও সনাতন ধারায় ভূমিকে উৎপাদনের একটি স্বতন্ত্র উপাদান হিসেবে দেখানো হতো। এ ছাড়া উদ্যোগ বা সংগঠনকেও আলাদা উপাদান হিসেবে দেখানো যেতে পারে। যেহেতু উদ্যোক্তার কর্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে অন্য উপাদানগুলো উৎপাদনে অংশগ্রহণ করে, ফলে শ্রমিক-কর্মচারীর অনুকূলে কর্মসংস্থান হয়। তাই উদ্যোক্তারা সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হন। এ সুবাদে তাঁরা প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা আদায় করেন। অনেক সময় দেশের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদানকে অতিরঞ্জিত করে প্রশাসনের ওপর তাঁরা অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করেন এবং বাড়তি সুবিধা ভোগ করেন। তাঁদের মূল বক্তব্য হচ্ছে, তাঁরা নাগরিকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এর ফলে সমাজে স্থিতিশীলতা দৃঢ় হয়েছে এবং দারিদ্র্য বিমোচনে তা সহায়ক হয়েছে। সরকার উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও প্রশাসনিক সাহায্য দিতে উদ্গ্রীব।
যাঁরা বৃহৎ উদ্যোক্তা তাঁরা অনেক লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেন। তাঁদের সম্মান অনেক বেশি। তাঁদের বিরুদ্ধে অনেক অনিয়ম, অনাচার, শোষণ ও অপরাধের অভিযোগ উঠলেও তাঁরা কর্মসংস্থানের ফিরিস্তি দিয়ে সেসব অভিযোগ পাশ কাটিয়ে যান। তাঁরা নিয়োগকর্তাদের বিরাট সংগঠন গড়ে তুলেছেন। সে সংগঠনে উচ্চ মাইনার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছেন। তাঁরা সুলিখিত নিবন্ধ এবং সংলেখ প্রস্তুত করতে পারেন, বিভিন্ন সরকারি, আধাসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযোগ রক্ষা করে সংগঠন এবং বৃহৎ নিয়োগকারীদের জন্য নানাবিধ সুবিধা আদায় করেন। বিদেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে বৃহৎ নিয়োগকারীদের জন্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি সংগ্রহ করেন। ফলে বিদেশে বড় বড় কনফারেন্স-সেমিনারে তাঁরা আমন্ত্রণ পান, যোগদান করেন। এর ফলে একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সৃষ্টি হয়। এককথায় আর্থিক লাভ ছাড়াও বৃহৎ নিয়োগকারীরা নানা সামাজিক সুবিধা ভোগ করেন।
বৃহৎ উদ্যোক্তাদের অনুসরণে মধ্যম এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা নিজেদের সংগঠিত করে একটি শক্তিশালী 'প্রেশার গ্রুপ' হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগগুলো তাঁদের সমর্থনে নানারূপ কর্মসূচির আয়োজন করেছে।
এদের দাবি মূলত ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর। দাবির যৌক্তিকতা অস্বীকার করা যায় না। ক্ষুদ্র এবং মধ্যম আকারের উদ্যোক্তারা কম উৎপাদন এবং কমসংখ্যক লোকের কর্মসংস্থান করলেও অর্থনীতিতে তাঁরা সম্মিলিতভাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ছোট ছোট পরিধিতে তাঁরা বহু লোকের সেবা করে থাকেন। পণ্য এবং সেবায় তাঁদের ব্যক্তিগত যত্নের ছাপ থাকে। গণসমাজ, বুদ্ধিজীবী, মিডিয়া সবারই সহযোগিতা এবং সমর্থন ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের প্রতি। এর ফলে এমন একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) ঋণ সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। এ গ্রুপকে ঋণ প্রদান করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটির (সিএসআর) সফলতার অলিখিত প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা তথা নিয়োগকারীরা সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন। তাঁদের সংগঠন ধীরে ধীরে প্রভাব-প্রতিপত্তির বলয়ে স্থান করে নিচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো বা তাঁদের মর্যাদা এবং প্রভাব বৃহৎ উদ্যোক্তাদের সমপর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য গণসম্পৃক্তি তথা কর্মজীবীদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক বৃহৎ উদ্যোক্তাদের থেকে বেশি। তাঁদের ইউনিটে যাঁরা কাজ করেন এসএমইর কর্তাব্যক্তিরা তাঁদের কাজ সরাসরি তত্ত্বাবধান করেন। মাঝেমধ্যে তাঁদের সঙ্গে মিশে কাজ করেন। তাঁদের সুখ-দুঃখ সম্পর্কে ব্যক্তিগত পর্যায়ে খোঁজখবর রাখেন। এসব ইউনিটে প্রায়ই সহৃদয় এবং সুখময় কর্মপরিবেশ পরিদৃষ্ট হয়। পণ্য এবং সেবার গুণগত উৎকর্ষ এতে বৃদ্ধি পায়। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের আর্থিক ও প্রশাসনিক সমর্থন প্রদান তাই যুক্তিযুক্ত; এতে কোনো সন্দেহ নেই। সমষ্টিগতভাবে নিয়োগকারী হিসেবে তাঁদের গুরুত্ব সমধিক বলে পরিগণিত করা ভুল হবে না। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা বৃহৎ উদ্যোক্তা বা নিয়োগকারীদের তুলনায় বেশি বলে তাঁদের সমর্থনকারী গোষ্ঠী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। তারা মনে করে, বৃহৎ উদ্যোক্তারা বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে গতানুগতিক পদ্ধতিতে উৎপাদন কার্য পরিচালনা করেন। প্রযুক্তির জটিলতা এবং বিনিয়োগের বৃহৎ আকারের কারণে দেশজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে উদ্ভাবনমূলক পদ্ধতি প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা তাদের চিন্তাচেতনার বাইরে। এরূপ কোনো ঝুঁকি তাঁরা নিতে চান না।
এ পর্যায়ে দেশের ক্ষুদ্রতম অথচ গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগকারীদের প্রসঙ্গে আসি। একজন নাগরিক, একটি পরিবার এক বা একাধিক ব্যক্তির নিয়োগকারী হতে পারে। কর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি এই পরিবার বা ব্যক্তির কাছ থেকে মাসিক, সাপ্তাহিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে নিয়মিতভাবে পারিশ্রমিক গ্রহণ করেন। এ পারিশ্রমিক দিয়ে তিনি তাঁর নিজের বা পরিবারের ব্যয় নির্বাহ করেন। এককথায় তাঁর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। সাধারণভাবে গৃহকর্মী, পারিবারিক গাড়ির ড্রাইভার, বাসার দারোয়ান, কেয়ারটেকার, উকিলের মুহরি, মুদি দোকানের কর্মী, নায়ক-সহনায়কদের ব্যক্তিগত সহকারী বা কর্মী ইত্যাদি এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। অনানুষ্ঠানিক সার্ভের মাধ্যমে পরিলক্ষিত হয়েছে, ঢাকার উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে চার থেকে ছয়জন লোক মাসিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে নিয়োজিত রয়েছেন। এসব পরিবার প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা গৃহকর্মী, ড্রাইভার, দারোয়ান ও কেয়ারটেকারকে পারিশ্রমিক হিসেবে দেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে এ সংখ্যা তিন থেকে চারজন হবে। মধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত (উচ্চবিত্ত বাদ দিয়ে) পরিবারের সংখ্যা ১৫ লাখ বা ততধিক হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সে হিসাবে, কমপক্ষে ৬০ লাখ লোক এক ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণাধীন বা পারিবারিক কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। কর্মসংস্থানের এ এলাকাটি কোনো প্রতিবেদন, গবেষণাকর্ম কিংবা সংলেখে যথাযথভাবে পরিস্ফুট হয়েছে বলে মনে হয় না। বরং এ এলাকায় নিয়োজিত গৃহকর্মীদের জীবন নিয়ে কিছু নেতিবাচক প্রতিবেদন বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এরূপ নেতিবাচক ঘটনার সংখ্যা ০.০১ শতাংশের বেশি হবে বলে মনে হয় না। গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষা, তাদের জন্য সুন্দর স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ সৃষ্টি এবং তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। একই সঙ্গে যেসব ব্যক্তি ও পরিবার এদের জন্য সন্তোষজনক ব্যবস্থায় কর্মসংস্থান করেছে সেসব ব্যক্তি ও পরিবারকে সমর্থন জোগানো সমাজ এবং সরকারের নৈতিক দায়িত্ব বলে বিবেচনা করতে হবে। এ গ্রুপের নিয়োগকারীরা বর্তমানে অসংগঠিত। নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে তাঁরা সচেতন নন। তাঁদের অধিকার এবং ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা সংগ্রহ করার মতো সামর্থ্য বা সংহতি তাঁদের নেই। কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান সমাজ বা সরকার কোনো পক্ষ থেকেই স্বীকৃতি পায়নি। তাঁদের সমর্থনে অন্য কোনো সংস্থা কোনো বক্তব্য রাখছে না; নিজেদের সংগঠন না থাকায় তাঁরা জোটবদ্ধভাবে কারো থেকে সমর্থন আদায়ের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে পারেননি। ফলে তাঁরা সবার অলক্ষ্যে বস্তুত অবহেলিত, উপেক্ষিত। হয়তো বা অযৌক্তিক হবে না, কেউ যদি বলে, তাঁরা প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
পারিবারিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র নিয়োগকারীরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মীদের কাজকর্ম ব্যক্তিগতভাবে তদারক করেন। একই সঙ্গে চলে কর্মাশ্রিত প্রশিক্ষণ। কর্মীদের বেশির ভাগই একেবারে অনভিজ্ঞ আনাড়ি হিসেবে পরিবারে এসে কাজে যোগ দেয়। গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রে এ কথা বেশি প্রযোজ্য। তবে ড্রাইভার, দারোয়ান থেকে শুরু করে মুহরি, কেয়ারটেকারদের প্রায় সবাই অনভিজ্ঞ শ্রেণীতে পড়ে। গৃহকর্ত্রী অনেক সময় ধরে রান্নাবান্না এবং গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত গৃহকর্মীকে হাতে-কলমে তাদের কাজ শেখান। কাজ শেখার পর তারা পারিশ্রমিক বাড়ানোর জন্য চাপ দেয়, অথবা কাজ নিয়ে অন্যত্র চলে যায়। আবার নতুন নিয়োগ, আবার কাজ শেখানো। প্রশিক্ষণের বিষয়টি বিভিন্ন প্রতিবেদন, গবেষণাকর্মে যথাযথভাবে স্থান পায়নি। ড্রাইভারদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, তারা বড়জোর কোনো রকম ড্রাইভিং শিখে কাজে যোগ দিতে আসে। তাদের রাস্তায় চলার রীতিনীতি, ব্যবহার রীতি, কর্মকালীন সময়ে তাদের দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে দীর্ঘ সময় ধরে কর্মাশ্রিত প্রশিক্ষণ দিতে হয় এবং গাড়ির মালিক, তথা নিয়োগকারীকে সরাসরি এ কাজটি করতে হয়। এরূপ ব্যক্তিগত তদারকি এবং স্বহস্তে স্বযত্নে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট দক্ষতার মানবসম্পদ গড়ে ওঠে। পারিবারিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র নিয়োগকারীদের এ অবদান এখনো পর্যন্ত স্বীকৃতি পায়নি।
বাইরে থেকে আপনাআপনি এ স্বীকৃতি আসবে না। ক্ষুদ্র নিয়োগকারীদের নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বীকৃতি আদায় করে নিতে হবে। এ জন্য তাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে, সাংগঠনিক শক্তি সঞ্চয় করতে হবে। নিজেদের অবস্থান সুসংহত করে প্রচার-প্রকাশের মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য তথা দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে হবে। সুপ্রণীত উদ্দেশ্য সামনে রেখে ঠিকমতো এগোতে পারলে ক্ষুদ্র নিয়োগকারীরা তাঁদের স্বীকৃতি এবং ন্যায্য অধিকার আদায় করতে সমর্থ হবেন।

লেখক : পিএসপির সাবেক চেয়ারম্যান ও
সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব

No comments

Powered by Blogger.