অবরুদ্ধ দিল্লিতে 'শান্তির' বাতাস-আহত পুলিশ সদস্যের মৃত্যু সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নেবে : প্রণব
ধর্ষণকারীর ফাঁসি এবং পথঘাটে নারীর নিরাপত্তার দাবিতে নয়াদিল্লিতে চলমান বিক্ষোভ গত সোমবার থেকে কিছুটা শান্ত হয়ে এসেছে। তবে এর কতটা বিক্ষোভকারীদের ক্ষোভ প্রশমনের কারণে আর কতটা পুলিশের কঠোর তৎপরতায়_তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় দিল্লি প্রায় অবরুদ্ধ করে রাখে পুলিশ। যন্তরমন্তর ছাড়া আর কোথাও বিক্ষোভ দেখা যায়নি। এদিকে রবিবার বিক্ষোভ চলাকালে আহত এক পুলিশ কনস্টেবল গতকাল মারা গেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পর সোমবার প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায় ধর্ষণ ঘটনার নিন্দা জানান। জনগণের ক্ষুব্ধ হওয়ার ন্যায়সঙ্গত কারণ আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি এও বলেন, 'সহিংসতা সমাধান নয়।' মেয়েটিকে 'সাহসী' উল্লেখ করে প্রণব মুখোপাধ্যায় জানান, সরকার দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
গত ১৬ ডিসেম্বর চলন্ত বাসে ছয় মদ্যপের হাতে ধর্ষণের শিকার হন ফিজিওথেরাপির ২৩ বছরের ওই ছাত্রী। তাঁকে ও তাঁর বন্ধুকে দুর্বৃত্তরা লোহার রড দিয়ে পেটায়। পরে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় তাঁদের। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
রবিবার ইন্ডিয়া গেটের সামনে বিক্ষোভ ঠেকাতে গিয়ে আহত হন কনস্টেবল সুবাস তোমার (৪৭)। গতকাল হাসপাতালে মারা যান তিনি। দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র রাজন ভাগত জানান, বিক্ষোভকারীরা সুবাসের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়েছিল। দুই দিন অচেতন থাকার পর মারা গেলেন তিনি। সুবাসের হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির এক কর্মীও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভ-সংঘর্যে এ পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৬০ জন পুলিশ।
দিল্লি গতকালও ছিল থমথমে। কেন্দ্রীয় দিল্লি কার্যত ছিল অবরুদ্ধ। ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। পাতাল রেলের ৯টি স্টেশন বন্ধ ছিল। অনিতা কুমার নামের তিন সন্তানের মা হিন্দি খবরের চ্যানেল আজতককে বলেন, 'আজ (গতকাল) বড় দিন। তবে পুলিশের কড়াকড়ির কারণে বাড়ির বাইরে পা ফেলা যাচ্ছে না।' বিক্ষোভ দমাতে পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা চলছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিপেটা থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস-জলকামান সবই ব্যবহার করেছে। পুলিশ অবশ্য 'অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের জন্য' দুঃখও প্রকাশ করেছে। এক টুইট বার্তায় দিল্লি পুলিশ গত সোমবার দিবাগত রাতে জানায়, 'কোনো নিরীহ বিক্ষোভকারী যদি আহত হয় বা লাঠিপেটার শিকার হয়, তাহলে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।'
শীলা-পুলিশ বাহাস : দোষ চাপান-উতোরের খেলা চলছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দিক্ষিত এবং দিল্লি পুলিশের মধ্যে। শীলার অভিযোগ, নির্যাতিতার সাক্ষ্য নেওয়ার সময় হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দেকে লেখা এক বার্তায় এ অভিযোগ করেন তিনি। মূলত সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট উষা ত্রিবেদির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই এ দাবি করেন শীলা। উষা তাঁর অভিযোগে বলেন, মেয়েটির সাক্ষ্য নেওয়ার সময় পুলিশের তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তা ভিডিও করতে দেননি।
এ ছাড়া পুলিশ নির্ধারিত প্রশ্ন করার জন্য তাঁকে চাপ দেয়। মানতে রাজি না হলে ওই কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পুলিশ অবশ্য এসব অভিযোগের কোনোটিই স্বীকার করেনি। তবে অভিযোগের তদন্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে রাজ্য প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শীলা। শহরের পুলিশের প্রধান নীরাজ কুমারকে বদলির কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সূত্র : এএফপি, হিন্দুস্তান টাইমস।
মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটেছে। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানান, তাঁকে আবারও নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। মেয়েটির শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণের লক্ষণ রয়েছে। পচনশীল ক্ষত থেকে দূষণের কারণে এই রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। এটা এক ধরনের রক্তের সংক্রমণ। যা থেকে অনেক সময় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের পর সোমবার প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখোপাধ্যায় ধর্ষণ ঘটনার নিন্দা জানান। জনগণের ক্ষুব্ধ হওয়ার ন্যায়সঙ্গত কারণ আছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি এও বলেন, 'সহিংসতা সমাধান নয়।' মেয়েটিকে 'সাহসী' উল্লেখ করে প্রণব মুখোপাধ্যায় জানান, সরকার দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
গত ১৬ ডিসেম্বর চলন্ত বাসে ছয় মদ্যপের হাতে ধর্ষণের শিকার হন ফিজিওথেরাপির ২৩ বছরের ওই ছাত্রী। তাঁকে ও তাঁর বন্ধুকে দুর্বৃত্তরা লোহার রড দিয়ে পেটায়। পরে বাস থেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয় তাঁদের। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।
রবিবার ইন্ডিয়া গেটের সামনে বিক্ষোভ ঠেকাতে গিয়ে আহত হন কনস্টেবল সুবাস তোমার (৪৭)। গতকাল হাসপাতালে মারা যান তিনি। দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র রাজন ভাগত জানান, বিক্ষোভকারীরা সুবাসের দিকে ইট-পাটকেল ছুড়েছিল। দুই দিন অচেতন থাকার পর মারা গেলেন তিনি। সুবাসের হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির এক কর্মীও রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বিক্ষোভ-সংঘর্যে এ পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত ৬০ জন পুলিশ।
দিল্লি গতকালও ছিল থমথমে। কেন্দ্রীয় দিল্লি কার্যত ছিল অবরুদ্ধ। ১৪৪ ধারা বলবৎ রয়েছে। পাতাল রেলের ৯টি স্টেশন বন্ধ ছিল। অনিতা কুমার নামের তিন সন্তানের মা হিন্দি খবরের চ্যানেল আজতককে বলেন, 'আজ (গতকাল) বড় দিন। তবে পুলিশের কড়াকড়ির কারণে বাড়ির বাইরে পা ফেলা যাচ্ছে না।' বিক্ষোভ দমাতে পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা চলছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর লাঠিপেটা থেকে শুরু করে কাঁদানে গ্যাস-জলকামান সবই ব্যবহার করেছে। পুলিশ অবশ্য 'অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের জন্য' দুঃখও প্রকাশ করেছে। এক টুইট বার্তায় দিল্লি পুলিশ গত সোমবার দিবাগত রাতে জানায়, 'কোনো নিরীহ বিক্ষোভকারী যদি আহত হয় বা লাঠিপেটার শিকার হয়, তাহলে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।'
শীলা-পুলিশ বাহাস : দোষ চাপান-উতোরের খেলা চলছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী শীলা দিক্ষিত এবং দিল্লি পুলিশের মধ্যে। শীলার অভিযোগ, নির্যাতিতার সাক্ষ্য নেওয়ার সময় হস্তক্ষেপ করেছে পুলিশ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দেকে লেখা এক বার্তায় এ অভিযোগ করেন তিনি। মূলত সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট উষা ত্রিবেদির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই এ দাবি করেন শীলা। উষা তাঁর অভিযোগে বলেন, মেয়েটির সাক্ষ্য নেওয়ার সময় পুলিশের তিন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তা ভিডিও করতে দেননি।
এ ছাড়া পুলিশ নির্ধারিত প্রশ্ন করার জন্য তাঁকে চাপ দেয়। মানতে রাজি না হলে ওই কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পুলিশ অবশ্য এসব অভিযোগের কোনোটিই স্বীকার করেনি। তবে অভিযোগের তদন্ত করা হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। এ ছাড়া পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে রাজ্য প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শীলা। শহরের পুলিশের প্রধান নীরাজ কুমারকে বদলির কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সূত্র : এএফপি, হিন্দুস্তান টাইমস।
মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক
ধর্ষণের শিকার মেয়েটির শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটেছে। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা জানান, তাঁকে আবারও নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। মেয়েটির শরীরের অভ্যন্তরে রক্তক্ষরণের লক্ষণ রয়েছে। পচনশীল ক্ষত থেকে দূষণের কারণে এই রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে। এটা এক ধরনের রক্তের সংক্রমণ। যা থেকে অনেক সময় শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোও কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
No comments