নিজেদের রক্ষায় তৎপর আমলারা-গ্রেপ্তারের বিধান সবার জন্য একই রকম থাকুক
প্রস্তাবিত সরকারি কর্মচারী আইনে আবার সেই বিতর্কিত ধারাটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ধারা অনুযায়ী, অপরাধ করলেও সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। এটি দেশের প্রচলিত আইনের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
এ ধারায় বলা হয়েছে, আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগে কোনো সরকারি কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হলে সরকারের পূর্ব অনুমোদন লাগবে। অথচ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন এবং বাংলাদেশ সার্ভিস রুলে (বিএসআর) মামলার পরই প্রয়োজন হলে কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করার বিধান রয়েছে। সম্প্রতি এই বিধান অনুযায়ী পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সেতু বিভাগের সচিব এবং একজন প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
আমাদের বোধগম্য নয়, সরকারের শেষ বছরে এসে প্রচলিত একটি বিধানকে পাল্টে সরকার কাদের বিশেষ সুবিধা দিতে চাইছে এবং এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য কী? দেশের সব মানুষের জন্য যে বিধান প্রযোজ্য হতে পারে, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সে বিধান প্রযোজ্য হবে না কেন? আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই যদি দেশের প্রধান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করা যায়, তাহলে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত একজন আমলাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না কেন? এ ধরনের বিধান প্রণয়নের নৈতিক ভিত্তি কী? সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এমন কোনো সরকারি অফিস নেই, যেখানে দুর্নীতির রাহুগ্রাস নেই। বরং বলা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির পাখা আরো বেশি বিস্তার লাভ করছে। ব্যাপক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশের কপালে আজ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের কলঙ্কতিলক আঁকা হয়েছে। বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দেশ হিসেবেই চেনে। সেখান থেকে দেশকে উদ্ধারের প্রচেষ্টাই যেখানে আজ সর্বতোভাবে কাম্য, সেই সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের ছাড় প্রদানের মাধ্যমে দুর্নীতি বা অপরাধ থেকে রক্ষার চেষ্টা করা হলে তা দুর্নীতির কালোহাতকে আরো প্রসারিত করারই নামান্তর। আর এটা নৈতিকভাবেও সমর্থনযোগ্য নয়। ছাড় দিতে হলে দেশের সব মানুষ কিংবা সব ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারীকেই দিতে হবে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতা ব্যাংকের কর্মকর্তা কিংবা ডেসটিনির কর্মকর্তারা কেন সেই প্রতিরক্ষা পাবেন না? সে ক্ষেত্রে দেশে যদি দুর্নীতির লাগাম ছাড়া বিস্তার ঘটে, ঘটুক। সরকার কি তেমনটাই কামনা করে? কিন্তু দেশের মানুষের কাছে সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সরকারের শেষ বছরে এসে এ ধরনের বিধান করা হলে বরং তা মানুষের মনে নানা সন্দেহেরই জন্ম দেবে। প্রশ্ন উঠতে পারে, আগামী নির্বাচনের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সহযোগিতা পেতেই কি এমন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার? অথবা সরকার কি সরকারি কর্মকর্তাদের সমর্থন হারানোর ভয়ে এ ধরনের অনৈতিক উদ্যোগ নিতে বাধ্য হচ্ছে? কোনোটাই সরকারের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না। তাই আমরা চাই, দেশের সব নাগরিকের জন্য আইনের একই ধরনের বিধান থাকুক। কারো কারো জন্য ভিন্ন ধরনের বিধান করা নৈতিক নয়, কাম্যও নয়। তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন বিবেচিত হলে তা সবার জন্যই একই রকম হতে হবে। কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিধান করা থেকে সরকার বিরত থাকবে- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আমাদের বোধগম্য নয়, সরকারের শেষ বছরে এসে প্রচলিত একটি বিধানকে পাল্টে সরকার কাদের বিশেষ সুবিধা দিতে চাইছে এবং এর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য কী? দেশের সব মানুষের জন্য যে বিধান প্রযোজ্য হতে পারে, সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সে বিধান প্রযোজ্য হবে না কেন? আদালতে অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ার আগেই যদি দেশের প্রধান বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করা যায়, তাহলে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত একজন আমলাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না কেন? এ ধরনের বিধান প্রণয়নের নৈতিক ভিত্তি কী? সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এমন কোনো সরকারি অফিস নেই, যেখানে দুর্নীতির রাহুগ্রাস নেই। বরং বলা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতির পাখা আরো বেশি বিস্তার লাভ করছে। ব্যাপক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনকারী বাংলাদেশের কপালে আজ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের কলঙ্কতিলক আঁকা হয়েছে। বিশ্ব এখন বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ দুর্নীতিগ্রস্ত একটি দেশ হিসেবেই চেনে। সেখান থেকে দেশকে উদ্ধারের প্রচেষ্টাই যেখানে আজ সর্বতোভাবে কাম্য, সেই সময় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এ ধরনের ছাড় প্রদানের মাধ্যমে দুর্নীতি বা অপরাধ থেকে রক্ষার চেষ্টা করা হলে তা দুর্নীতির কালোহাতকে আরো প্রসারিত করারই নামান্তর। আর এটা নৈতিকভাবেও সমর্থনযোগ্য নয়। ছাড় দিতে হলে দেশের সব মানুষ কিংবা সব ধরনের কর্মকর্তা-কর্মচারীকেই দিতে হবে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির হোতা ব্যাংকের কর্মকর্তা কিংবা ডেসটিনির কর্মকর্তারা কেন সেই প্রতিরক্ষা পাবেন না? সে ক্ষেত্রে দেশে যদি দুর্নীতির লাগাম ছাড়া বিস্তার ঘটে, ঘটুক। সরকার কি তেমনটাই কামনা করে? কিন্তু দেশের মানুষের কাছে সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
সরকারের শেষ বছরে এসে এ ধরনের বিধান করা হলে বরং তা মানুষের মনে নানা সন্দেহেরই জন্ম দেবে। প্রশ্ন উঠতে পারে, আগামী নির্বাচনের সময় সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সহযোগিতা পেতেই কি এমন উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার? অথবা সরকার কি সরকারি কর্মকর্তাদের সমর্থন হারানোর ভয়ে এ ধরনের অনৈতিক উদ্যোগ নিতে বাধ্য হচ্ছে? কোনোটাই সরকারের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না। তাই আমরা চাই, দেশের সব নাগরিকের জন্য আইনের একই ধরনের বিধান থাকুক। কারো কারো জন্য ভিন্ন ধরনের বিধান করা নৈতিক নয়, কাম্যও নয়। তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার করার প্রয়োজন বিবেচিত হলে তা সবার জন্যই একই রকম হতে হবে। কেবল সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন বিধান করা থেকে সরকার বিরত থাকবে- এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা।
No comments