মহাযোগী বাবা লোকনাথ by বিষুষ্ণপদ ভৌমিক
জমিদার ও বিত্তবানরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়েছিলেন মানুষকে আলোকিত করার উদ্দেশ্যে। একইভাবে মহাযোগী বাবা লোকনাথের জীবন ও দর্শনের আলোতে মানবকল্যাণে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার কর্মযজ্ঞ প্রসারণের প্রয়াস চলছে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, 'মনুষ্য জীবনের উদ্দেশ্য ঈশ্বর লাভ।'
ঈশ্বর লাভ করতে হলে মানুষকে মনুষ্যত্ব অর্জন করতে হয়। যেমন_ পবিত্রতা, অহিংসা, অচৌর্য, সত্য ও সংযম। পবিত্র না হলে কোনো কিছুই ধারণ করা যায় না। যেমন_ হিংসা মানুষকে ধ্বংসের রাস্তায় নিয়ে যায়। তাই অহিংসুক হওয়া যেমন_ পরদ্রব্যে লোভ না করা। আবার সত্য ও সংযমের অনুশীলন করে নিজের জীবনে প্রয়োগ_ এভাবে মানুষের ভগবৎকৃপাপ্রাপ্ত হয়ে দুর্লভ মনুষ্যজন্ম সার্থক করা। আমরা জানি, সম্পদ সংকট তৈরি করছে। তারপরও সম্পদের পেছনে ছুটছি। ছুটছি অপরাধ জগতে, যে জগৎ থেকে সম্পদ জুগিয়ে সম্পদশালী হবো। তারপর সুখের সাগরে ভাসব_ এ হলো জগৎসংসারে সুখে থাকার মোহনিদ্রা। এ অবস্থায় দেহপাত হলে তাকে আবার জগতের অন্ধকারে চলে আসতে হবে। শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।
শ্রীশ্রী গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সখা অর্জুনকে বলেছিলেন_ তুমি যোগী হও। তাহলেই তুমি আমাকে জানতে পারবে। বলেছিলেন, তুমি বৈরাগ্য অভ্যাস কর। তাহলে অন্তিমকালে আমাকে স্মরণ করতে করতে মুক্ত হয়ে যাবে। মানুষ শান্তি চায়, আনন্দ চায়। চায় সুখে বসবাসের ঠিকানা। কেন আজ আমরা সুখ ও শান্তির ঠিকানা হারিয়ে স্মৃতিভ্রম হয়ে বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাচ্ছি?
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোমের আলো জ্বালিয়ে অনেক ভাবনার মধ্যে অনেকক্ষণ ডুবে ছিলেন_ কী বিষয়ে লিখবেন? অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় মোমের আলো নিভে গেল। দেখা গেল, পূর্ণিমার সি্নগ্ধ আলোয় ধরণী অপূর্ব সাজ নিয়েছে। ভাবনার আকাশে অনেক বিষয়ে লেখার উপাদান পাওয়া গেল। মানুষের মধ্যে যে ক্ষুদ্র অহংবোধ তার নাশ হলে দিব্যতার উদয় হয়। ছোট মোম কোনো ভাবের সৃষ্টি করতে পারেনি।
আমরা চাই অপরাধপ্রবণতার সীমানা। রাতারাতি কেউ পবিত্র জীবন লাভ করতে পারে না। তার জন্য চাই সত্য ও সুন্দর জীবনবোধের নিরলস প্রয়াস। সৎ বৃত্তির অনুশীলনে পবিত্র জীবন ধারণ করে মানুষ সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারে। সৎ বৃত্তির অভাবে জীবনে মরুময় পরিবেশ নেমে আসে।
মানুষ কী পরিমাণ সম্পদ আহরণে সুখ-শান্তির ঠিকানা পাবে জানে না। শুরু হয় নিরলসভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আহরণের দুর্বার সংগ্রাম। পরিশেষে সম্পদ সংকট তৈরি করে জীবনকে বিষবৃক্ষে রূপান্তরিত করে চলেছে_ এ হলো আধুনিক সভ্যতা অর্জনের অনৈতিক প্রতিযোগিতা। সমষ্টি স্বার্থের প্রয়োজনে ব্যক্তিস্বার্থকে সংরক্ষণ করতে হবে, তবেই সংসার ও সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। যোগেশ্বর বাবা লোকনাথ বলেছেন, 'সৎ কর্মে যোগ হয়, অসৎ কর্মে বিয়োগ হয়।' এভাবে সৎ বৃত্তির অনুশীলনে মানুষ দেবতায় উন্নীত হতে পারে।
বিশ্বকবি রবিঠাকুরের কথায়_ আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান। আজ যারা দুর্নীতি করছেন তারা জেনে-বুঝেই করছেন। তাহলে সমস্যা কোথায়? এ পথে যারা সম্পদের পাহাড় গড়ছেন তারা কিন্তু ভোগ করতে পারছেন না। কারণ তারা এতক্ষণে দুরারোগ্য বিচিত্র রোগে আক্রান্ত। এভাবে খালি হাতে আসা মানুষ খালি হাতেই বিদায় নেয়।
সত্যাশ্রয়ী সংসারী ব্যক্তি অনিত্যবস্তু ও নিত্যবস্তু পরখ করে নিত্যবস্তুতে আকর্ষিত হয়ে ঈশ্বরানুভূতি লাভ করে স্বাভাবিক জীবন নির্বাহ করে চলেছে। কৃতকর্মের শুভ ও অশুভ ফলাফল আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে সর্বময় ব্রহ্মর্ষি বা লোকনাথকে সমাজের দুস্থ, আতুর-অসহায় মানুষের মধ্যে দর্শন ও তাদের শিবজ্ঞানে সেবার জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক, সেবামূলক ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পরিচালনা এবং সেবাধর্মকে সাধনার মূল স্তম্ভরূপে গ্রহণ করা প্রয়োজন। মহাযোগী বাবা লোকনাথের ১২২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে জানাই শ্রদ্ধার্ঘ্য।
বিষুষ্ণপদ ভৌমিক :সাধারণ সম্পাদক শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী
আশ্রম ও মন্দির
শ্রীশ্রী গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তার সখা অর্জুনকে বলেছিলেন_ তুমি যোগী হও। তাহলেই তুমি আমাকে জানতে পারবে। বলেছিলেন, তুমি বৈরাগ্য অভ্যাস কর। তাহলে অন্তিমকালে আমাকে স্মরণ করতে করতে মুক্ত হয়ে যাবে। মানুষ শান্তি চায়, আনন্দ চায়। চায় সুখে বসবাসের ঠিকানা। কেন আজ আমরা সুখ ও শান্তির ঠিকানা হারিয়ে স্মৃতিভ্রম হয়ে বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাচ্ছি?
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মোমের আলো জ্বালিয়ে অনেক ভাবনার মধ্যে অনেকক্ষণ ডুবে ছিলেন_ কী বিষয়ে লিখবেন? অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গেল। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় মোমের আলো নিভে গেল। দেখা গেল, পূর্ণিমার সি্নগ্ধ আলোয় ধরণী অপূর্ব সাজ নিয়েছে। ভাবনার আকাশে অনেক বিষয়ে লেখার উপাদান পাওয়া গেল। মানুষের মধ্যে যে ক্ষুদ্র অহংবোধ তার নাশ হলে দিব্যতার উদয় হয়। ছোট মোম কোনো ভাবের সৃষ্টি করতে পারেনি।
আমরা চাই অপরাধপ্রবণতার সীমানা। রাতারাতি কেউ পবিত্র জীবন লাভ করতে পারে না। তার জন্য চাই সত্য ও সুন্দর জীবনবোধের নিরলস প্রয়াস। সৎ বৃত্তির অনুশীলনে পবিত্র জীবন ধারণ করে মানুষ সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারে। সৎ বৃত্তির অভাবে জীবনে মরুময় পরিবেশ নেমে আসে।
মানুষ কী পরিমাণ সম্পদ আহরণে সুখ-শান্তির ঠিকানা পাবে জানে না। শুরু হয় নিরলসভাবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ আহরণের দুর্বার সংগ্রাম। পরিশেষে সম্পদ সংকট তৈরি করে জীবনকে বিষবৃক্ষে রূপান্তরিত করে চলেছে_ এ হলো আধুনিক সভ্যতা অর্জনের অনৈতিক প্রতিযোগিতা। সমষ্টি স্বার্থের প্রয়োজনে ব্যক্তিস্বার্থকে সংরক্ষণ করতে হবে, তবেই সংসার ও সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। যোগেশ্বর বাবা লোকনাথ বলেছেন, 'সৎ কর্মে যোগ হয়, অসৎ কর্মে বিয়োগ হয়।' এভাবে সৎ বৃত্তির অনুশীলনে মানুষ দেবতায় উন্নীত হতে পারে।
বিশ্বকবি রবিঠাকুরের কথায়_ আমি জেনেশুনে বিষ করেছি পান। আজ যারা দুর্নীতি করছেন তারা জেনে-বুঝেই করছেন। তাহলে সমস্যা কোথায়? এ পথে যারা সম্পদের পাহাড় গড়ছেন তারা কিন্তু ভোগ করতে পারছেন না। কারণ তারা এতক্ষণে দুরারোগ্য বিচিত্র রোগে আক্রান্ত। এভাবে খালি হাতে আসা মানুষ খালি হাতেই বিদায় নেয়।
সত্যাশ্রয়ী সংসারী ব্যক্তি অনিত্যবস্তু ও নিত্যবস্তু পরখ করে নিত্যবস্তুতে আকর্ষিত হয়ে ঈশ্বরানুভূতি লাভ করে স্বাভাবিক জীবন নির্বাহ করে চলেছে। কৃতকর্মের শুভ ও অশুভ ফলাফল আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে সর্বময় ব্রহ্মর্ষি বা লোকনাথকে সমাজের দুস্থ, আতুর-অসহায় মানুষের মধ্যে দর্শন ও তাদের শিবজ্ঞানে সেবার জন্য বিভিন্ন শিক্ষামূলক, সেবামূলক ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পরিচালনা এবং সেবাধর্মকে সাধনার মূল স্তম্ভরূপে গ্রহণ করা প্রয়োজন। মহাযোগী বাবা লোকনাথের ১২২তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে জানাই শ্রদ্ধার্ঘ্য।
বিষুষ্ণপদ ভৌমিক :সাধারণ সম্পাদক শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী
আশ্রম ও মন্দির
No comments