আখেরাতে কৃতকর্মের জবাবদিহিতা by সৈয়দ শামছুল হুদা
সব প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এ পৃথিবীতে যত সৃষ্টি রয়েছে সবাইকেই একদিন চলে যেতে হবে ইহকালের মায়া ত্যাগ করে অনন্তকালের দিকে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, তোমাকে অবশ্যই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যদিওবা তুমি কাচের ঘরে আবদ্ধ থাক না কেন।
পৃথিবীতে অনেক শক্তিশালী ব্যক্তি, গোষ্ঠী, জাতি, সম্প্রদায় গত হয়েছে, কেউ থাকতে পারেনি। তাদের অনেক স্বাদ ছিল, আশা ছিল, স্বপ্ন ছিল_ তারা পৃথিবীতে অনেক দিন থাকবে, তারা তাদের ক্ষমতার প্রতিপত্তি দিয়ে শাসন অব্যাহত রাখবে। কিন্তু হায়! ডাক এসে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের চলে যেতে হয়েছে। আজ তাদের কারও নাম কেউ স্মরণ করে, আর কারও নাম স্মরণ করে না। কেউ আপন কৃতকর্মের দ্বারা এখনও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন, কেউ বেঁচে নেই। চিরতরে হারিয়ে গেছেন। এটাই এ পৃথিবীর নিয়তি। কিন্তু আমরা সেই জিনিসটি বারবার ভুলে যাই। কখনও ক্ষমতার বলে, কখনও শক্তির জোরে, কখনও অর্থের ফলে আমি আর আমি থাকি না। ভুলে যাই সৃষ্টির সে চিরস্থায়ী বিধান।
একজন মুমিনের জীবনের বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি তার জীবনকে আর দশটি ধর্মের মানুষের মতো উপভোগ করতে পারেন না। তার সামনে রয়েছে আরও একটি জীবন। একজন মুমিন কখনও জীবন পরিচালনায় উদাসীন হতে পারেন না। পরকালের ভয় এবং আশা তার জীবনে প্রভাব ফেলে। একজন মুমিন বিশ্বাস করেন, একজন পরম সত্তার কাছে তাকে যেতে হবে। তার কাছে এ ইহকালীন জীবনের সবকিছুর হিসাব দিতে হবে।
আমরা নবী রাসূলগণকে বিশ্বাস করি, তাঁদের নীতি-আদর্শকে বিশ্বাস করি, সুতরাং আমরা কখনও এমন উদাসীন হতে পারি না। আমরা কাজেকর্মে আল্লাহকে ভুলে যাব। আমার সব কাজ নিরীক্ষণ করা হচ্ছে, পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং এমন একজন নিরীক্ষক সর্বক্ষণ আছেন যাঁকে ফাঁকি দেওয়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সে অবস্থায় যা ইচ্ছা তা কীভাবে করা সম্ভব? পবিত্র কোরআনে এ অবস্থার একটি বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে_ কিয়ামতের দিন যখন বান্দা তার আমলনামা দেখবে তখন সে বলবে_ 'এটা কেমন কিতাব? যা ছোট থেকে বড় কোনো কিছুই বাদ দেয়নি? সবকিছুই সংরক্ষণ করেছে। তারা যা করেছে তার সবকিছুই সেদিন দেখতে পাবে।' এভাবে একজন মুমিনকে সতর্ক করা হয়েছে, তিনি যেন লাগামহীন জীবনযাপন না করেন।
মানুষ যখন এমন ভয় নিয়ে কাজ করে, তার সবকিছু রেকর্ড হচ্ছে এবং সেখানে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, সেখানে চলে না কোনো ঘুষের লেনদেন। অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কোনো কিছুই পরিবর্তন করাও সম্ভব নয়, তখন একজন মানুষ আলোকিত মানুষ না হয়ে পারে না। তার কাজকর্ম সবকিছুই হবে সুশৃঙ্খলিত। সে অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না, অন্যের ওপর জুলুম করবে না, অন্যায়ভাবে অন্যের হক কুক্ষিগত করবে না। সমাজে যদি এমন অনুভূতি বা মূল্যবোধের অধিকারী লোকের সংখ্যা বেশি হয় তাহলে সে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হয়ে পারে না। সমাজ শান্তিময় হওয়ার জন্য এ গুণ থাকা আবশ্যক, আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। মানুষের মধ্যে যদি আখেরাতের জবাবদিহিতার ভয় থাকে তাহলে সে দুনিয়াতেও সেভাবেই চলবে।
আজকের সমাজে এ মানসিকতার লোকের অভাবের কারণে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা দেখা যাচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। অথচ আমাদের চরিত্র, আমাদের মনোভাব, আমাদের আচার-আচরণ এত খারাপ, আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা আর বিশ্বাস অটল রাখতে পারছি না। তাহলে কাজেকর্মে আর কিসের ভয় কাজ করবে? পরকালে জবাবদিহিতার অনুভূতির মূল স্পিরিটই হলো আল্লাহর প্রতি ভয় এবং তাঁর প্রতি অবিচল আস্থা। এটা ইমানের অংশ। আমাদের সমাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির মূলে রয়েছে পরকালের জবাবদিহিতার ভয় না থাকা। পবিত্র কোরআন ওই সব মানুষকে হেদায়েতের আলোকবর্তিকা প্রদর্শন করবে যার অন্তরে তাঁর প্রতি ভীতি রাখে। এর নামই তাকওয়া। আল্লাহ আমার সবকিছু দেখছেন, তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি সবকিছু জানেন, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী_ এর প্রতি বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে রাখতে হবে।
alhuda_wf@yahoo.com
একজন মুমিনের জীবনের বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি তার জীবনকে আর দশটি ধর্মের মানুষের মতো উপভোগ করতে পারেন না। তার সামনে রয়েছে আরও একটি জীবন। একজন মুমিন কখনও জীবন পরিচালনায় উদাসীন হতে পারেন না। পরকালের ভয় এবং আশা তার জীবনে প্রভাব ফেলে। একজন মুমিন বিশ্বাস করেন, একজন পরম সত্তার কাছে তাকে যেতে হবে। তার কাছে এ ইহকালীন জীবনের সবকিছুর হিসাব দিতে হবে।
আমরা নবী রাসূলগণকে বিশ্বাস করি, তাঁদের নীতি-আদর্শকে বিশ্বাস করি, সুতরাং আমরা কখনও এমন উদাসীন হতে পারি না। আমরা কাজেকর্মে আল্লাহকে ভুলে যাব। আমার সব কাজ নিরীক্ষণ করা হচ্ছে, পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং এমন একজন নিরীক্ষক সর্বক্ষণ আছেন যাঁকে ফাঁকি দেওয়া কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সে অবস্থায় যা ইচ্ছা তা কীভাবে করা সম্ভব? পবিত্র কোরআনে এ অবস্থার একটি বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এভাবে_ কিয়ামতের দিন যখন বান্দা তার আমলনামা দেখবে তখন সে বলবে_ 'এটা কেমন কিতাব? যা ছোট থেকে বড় কোনো কিছুই বাদ দেয়নি? সবকিছুই সংরক্ষণ করেছে। তারা যা করেছে তার সবকিছুই সেদিন দেখতে পাবে।' এভাবে একজন মুমিনকে সতর্ক করা হয়েছে, তিনি যেন লাগামহীন জীবনযাপন না করেন।
মানুষ যখন এমন ভয় নিয়ে কাজ করে, তার সবকিছু রেকর্ড হচ্ছে এবং সেখানে ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, সেখানে চলে না কোনো ঘুষের লেনদেন। অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে কোনো কিছুই পরিবর্তন করাও সম্ভব নয়, তখন একজন মানুষ আলোকিত মানুষ না হয়ে পারে না। তার কাজকর্ম সবকিছুই হবে সুশৃঙ্খলিত। সে অন্যের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না, অন্যের ওপর জুলুম করবে না, অন্যায়ভাবে অন্যের হক কুক্ষিগত করবে না। সমাজে যদি এমন অনুভূতি বা মূল্যবোধের অধিকারী লোকের সংখ্যা বেশি হয় তাহলে সে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত না হয়ে পারে না। সমাজ শান্তিময় হওয়ার জন্য এ গুণ থাকা আবশ্যক, আমাকে জবাবদিহি করতে হবে। মানুষের মধ্যে যদি আখেরাতের জবাবদিহিতার ভয় থাকে তাহলে সে দুনিয়াতেও সেভাবেই চলবে।
আজকের সমাজে এ মানসিকতার লোকের অভাবের কারণে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা দেখা যাচ্ছে। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। অথচ আমাদের চরিত্র, আমাদের মনোভাব, আমাদের আচার-আচরণ এত খারাপ, আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা আর বিশ্বাস অটল রাখতে পারছি না। তাহলে কাজেকর্মে আর কিসের ভয় কাজ করবে? পরকালে জবাবদিহিতার অনুভূতির মূল স্পিরিটই হলো আল্লাহর প্রতি ভয় এবং তাঁর প্রতি অবিচল আস্থা। এটা ইমানের অংশ। আমাদের সমাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির মূলে রয়েছে পরকালের জবাবদিহিতার ভয় না থাকা। পবিত্র কোরআন ওই সব মানুষকে হেদায়েতের আলোকবর্তিকা প্রদর্শন করবে যার অন্তরে তাঁর প্রতি ভীতি রাখে। এর নামই তাকওয়া। আল্লাহ আমার সবকিছু দেখছেন, তিনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন, তিনি সবকিছু জানেন, তিনি সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী_ এর প্রতি বিশ্বাস দৃঢ়ভাবে রাখতে হবে।
alhuda_wf@yahoo.com
No comments