মোহামেডান ০: ০ বিজেএমসি; মুক্তিযোদ্ধা ১০: ০ কক্স সিটি-প্রত্যাবর্তনে উজ্জ্বল বিজেএমসি
সেই ১৯৮৩ সালে অবনমনের পর থেকেই অদৃশ্য হয়ে পড়েছিল বিজেএমসি। এককালের ঐতিহ্যবাহী দলটি প্রায় তিন যুগ পর ফিরল ফুটবলে। তা বেশ জোরের সঙ্গেই পুনরাগমনী বার্তা শোনাল বিজেএমসি। কাল গ্রামীণফোন ফেডারেশন কাপের চূড়ান্ত পর্বে মোহামেডানের সঙ্গে করেছে গোলশূন্য ড্র। এমনকি ম্যাচের শেষ ১৬ মিনিটে ১০ জনের দল হয়েও মোহামেডানের সঙ্গে লড়েছে সমানতালে। সারা দিন থেমে থেমে ঝরেছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। এমন বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ছাতা মাথায় হাজির হাজার দুয়েক দর্শক। এদের বেশির ভাগের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল বিজেএমসি। পুরোনো দলটার নতুন ফেরা কেমন হয় সেটাই ছিল দেখার। ফেডারেশন কাপের সবচেয়ে কঠিন গ্রুপে মোহামেডান। কালকের ম্যাচ থেকে তিনটি পয়েন্ট তুলে নেওয়ার তাড়া ছিল নতুন কোচ এমেকা ইউজিগোর। কিন্তু মোহামেডানের সাবেক ফুটবলারের অভিষেকটা জয় দিয়ে অন্তত হলো না। হাসান আল মামুন, মতিউর মুন্না, রজনীকান্তদের মতো অভিজ্ঞদের সতীর্থ নাইজেরিয়ান উইলকক, অ্যান্থনি, চিবুইকদের ওপর আস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু প্রথম ম্যাচে কোচের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি এঁদের কেউই। উল্টো প্রথমার্ধে প্রায় একতরফা খেলল বিজেএমসি। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দারুণ খেললেন বিজেএমসির অধিনায়ক আলফাজ। ১৪ ও ৩৮ মিনিটে গোলের দুটো সুযোগ তৈরি করেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার। কিন্তু প্রথমটি মোহামেডান গোলরক্ষক টিটু কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করলেন, পরেরটি টিটুর হাত ফসকে বেরিয়ে গেলেও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বিজেএমসি। গত মৌসুমে আবাহনীর হয়ে বেশির ভাগ সময়ই বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছে আলফাজকে। কালও পুরো ম্যাচে ছিলেন না। ৫৪ মিনিটে তাঁকে তুলে নেন কোচ জাকারিয়া বাবু।
দ্বিতীয়ার্ধে একটু লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা ছিল মোহামেডানের। কিন্তু তাদের খেলায় ধরা পড়ল ক্লান্তির ছাপ। মাঝমাঠ ছিল এলোমেলো, সঙ্গে দুর্বল ফিনিশিং। কিন্তু শেষ দিকে বিজেএমসি ১০ জনের দল হয়ে পড়াটা তাদের সামনে আসে বড় সুযোগ হিসেবে। মোহামেডানের ওয়াহেদের মুখে ঘুষি মেরে ৭৪ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বিজেএমসির ডিফেন্ডার শরীফ খান। কিন্তু সাদা-কালোরা প্রতিপক্ষের গোলমুখই খুলতে পারেনি!
ম্যাচ শেষে বিষণ্ন এমেকা বললেন, ‘ছেলেদের পারফরম্যান্সে খুবই হতাশ। ম্যাচটি জিততে চেয়েছিলাম। বিদেশিরা নয়, পুরো দলই বাজে খেলেছে। বৃষ্টিতে ছেলেরা স্বাভাবিক খেলতে পারেনি। তবে আমি কোনো অজুহাত দিতে চাই না।’ কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার ব্যাপারে এমেকার কথা, ‘আমরা এখন পরের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। কক্স সিটির বিপক্ষে জিততেই হবে।’ ড্রয়ের জন্য অধিনায়ক হাসান আল মামুনের কাঠগড়ায় কঠিন অনুশীলন, ‘তিন দিন আগেও চার বেলা কঠিন ট্রেনিং করায় ক্লান্তি রয়ে গেছে।’ ওদিকে মোহামেডানকে রুখে দিয়ে দারুণ খুশি কোচ জাকারিয়া বাবু, ‘মোহামেডান অবশ্যই শক্তিশালী দল। এই ড্র তাই জয়ের সমান।’
মুক্তিযোদ্ধার গোল-উৎসব
অন্য ম্যাচে গোল-উৎসব করেছে মুক্তিযোদ্ধা। কমলাপুরে নবাগত কক্স সিটিকে হারিয়েছে ১০-০ গোলে। নতুন ফুটবল মৌসুমের উদ্বোধনী দিনে হ্যাটট্রিক পেয়েছেন মামুনুল ইসলাম। আরিফুল, কাঞ্চন, রাজন, শাকিল, সামির ওমারি, নাসির ও টিটুর গোল ১টি করে। ৬১ মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কক্স সিটির রাজন।
No comments