জ্বর নিয়ে খেলেও মেসির জোড়া গোল

লিওনেল মেসিকে এই ম্যাচে খেলাতে রাজি ছিলেন না তিনি আগেই। এমনিতে মেসির ওপর ধকলটা যায় সবচেয়ে বেশি। সবগুলো ম্যাচেই ৯০ মিনিট মাঠে থাকেন। ফলে বড়দিনের আগে বাড়তি কদিন ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন। মেসিকে ছুটি দিতে চেয়েছিলেন বড়দিনের পরেও। তারপরও মেসি যথাসময়ে যোগ দিয়েছেন ক্লাবে। বসে থাকতে যে মন চায় না তাঁর! কিন্তু মেসির হয়ে গেল সর্দিজ্বর! ফলে গার্দিওলা ঠিকই করে ফেললেন, বদলি খেলোয়াড়ের তালিকাতেও মেসিকে


রাখা হবে না। বাড়িতেই পাঠিয়ে দেওয়া হলো তাঁকে। কিন্তু ওসাসুনার বিপক্ষে কোপা ডেল রের শেষ ষোলোর প্রথম লেগের ম্যাচটি শুরুর ঘণ্টা কয়েক আগে মেসি জানালেন, তিনি মাঠে নামতে প্রস্তুত। মাঠেই যে স্বস্তি বোধ করেন সবচেয়ে বেশি। অবশেষে মেসির জেদের কাছে হার মেনে ৫৯ মিনিটে বদলি হিসেবে নামানো হলো তাঁকে। জ্বরের সবচেয়ে বড় দাওয়াই হয়তো পেয়ে গেলেন মেসি। ৭৩ মিনিটে নিজের প্রথম আর ম্যাচের শেষ প্রান্তে করলেন দ্বিতীয় গোল। এই মৌসুমে সব মিলিয়ে ২৭ ম্যাচে তাঁর গোল হয়ে গেল ৩১টি। মেসি যেন পণ করেছেন গত মৌসুমের অবিশ্বাস্য গোলের হারটাকেও এবার ছাড়িয়ে যাবেন (৫৫ ম্যাচে ৫৩ গোল)!
সত্যি বলতে কি, মেসিকে মাঠে না নামালেও চলত। ১৪ ও ১৮ মিনিটে সেস ফ্যাব্রিগাসের জোড়া গোলে বার্সা এগিয়ে ছিল ২-০ গোলে। ওসাসুনাকে একবারও মনে হয়নি ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। শেষ পর্যন্ত ৪-০ গোলের জয় দ্বিতীয় লেগটিকে একরকম আনুষ্ঠানিকতা রক্ষার ম্যাচ বানিয়ে ফেলল। আগের দিন রিয়ালের পর পরশু বার্সার জয়ে আরও উজ্জ্বল হলো কোয়ার্টার ফাইনালে ‘এল ক্লাসিকো’ হওয়ার সম্ভাবনা।
এমন একটা ম্যাচের পর আর সব কোচ হলে যা করতেন, পেপ গার্দিওলাও তা-ই করলেন। মেসিকে একরকম স্যালুটই দিলেন, ‘সকালে ও অসুস্থ ছিল। বলছিল পেট ব্যথা করছে। হালকা জ্বরও ছিল। আমরা তাই ওকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। পরে আমি ওকে বললাম, ঘরে বসে না থেকে এসে ম্যাচটা অন্তত দেখুক। আর ভালো বোধ করলে না হয় খেলবে। ম্যাচ শুরুর তিন ঘণ্টা আগে ও আমাকে ফোন করে বলল, সে খেলতেই চায়। তাই ওকে বেঞ্চে রাখা হয়েছিল।’
তার পরও গার্দিওলা ঠিক যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, মেসিকে মাঠে নামানোটা হিতে বিপরীত হয়ে যায় কি না। শেষে হয়তো দেখা গেল, মেসির অসুস্থতা বেড়ে গেল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেসি মাঠে নেমে বুঝিয়ে দিয়েছেন, উভচর প্রাণীরা যেমন ডাঙার চেয়ে জলেই বেশি স্বস্তি বোধ করে, তিনিও মাঠের বাইরে থাকার চেয়ে, বেশি স্বস্তি পান মাঠের ভেতরেই। ওয়েবসাইট।

No comments

Powered by Blogger.