বাঁশখালীতে জামায়াতের হামলা- ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত চার-পাঁচ হাজার ব্যক্তি আসামি
বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় গত সোমবার পুলিশের ওপর জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের হামলার ঘটনায় ৯৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচ হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আসামিরা চাম্বল, শেখেরখীল ও গন্ডামারা ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় জামায়াতের ডাকে গতকাল মঙ্গলবার বাঁশখালী উপজেলায় হরতাল পালিত হয়েছে। হরতালের কারণে বাঁশখালীর সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরসহ সর্বত্র সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তবে সীমিত আকারে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করেছে। হরতালের সমর্থনে গতকাল সকালে চাম্বল নতুন বাজার এলাকায় মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির। এরপর সারা দিন তাদের আর দেখা যায়নি। হরতাল-সমর্থকেরা বাঁশখালী প্রান্তে তৈলার দ্বীপ সেতুর কাছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পুড়িয়ে দেন। সাধনপুর এলাকার সাহেবের হাট, বৈলছড়ি, চাম্বল, পুইছড়িসহ বিভিন্ন স্থানে জামায়াতের কর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে আতঙ্ক ছড়ান। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক প্রথম আলোকে বলেন, হরতাল সফল হয়েছে। পুলিশের ওপর জামায়াতের হামলার প্রতিবাদে ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গতকাল বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে সমাবেশ করেছে। বিভক্ত সমাবেশের একাংশের নেতৃত্ব দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এবং অন্য অংশের নেতৃত্ব দেন বাঁশখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুর হোসেন।গ্রামছাড়া: সোমবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর বাঁশখালীর তিনটি ইউনিয়নে যুবকেরা গ্রামছাড়া। ইউনিয়নের বোর্ড এলাকার কৃষক নবাব আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) চাম্বল বাজারে যখন পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের লোকজনের সংঘর্ষ হয়, তখন সেখানে আমার কলেজপড়ুয়া ছেলেটিও ছিল। সংঘর্ষ তুমুল আকার ধারণ করলে সে বাসায় চলে আসে। তাকে বাড়ি থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিয়েছি।’ বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুস সবুর বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। জামায়াত-শিবিরের কৌশল দেখে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’
চট্টগ্রামে শিবিরের মিছিল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ: বাঁশখালীতে হামলার এক দিন পর গতকাল মঙ্গলবার নগরের ডবলমুরিং থানাধীন ঈদগাঁ এলাকায় মিছিল করেছে ছাত্রশিবির। এ সময় দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই শিবিরের কর্মীরা পালিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নগরের ঈদগাঁ এলাকায় গতকাল বেলা একটার দিকে ঝটিকা মিছিল বের করেন শিবিরের কর্মীরা। মিছিলকারীদের সংখ্যা ছিল ৩০-৩২ জনের মতো। তাঁরা ‘যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানি না, মানব না’ স্লোগান দেন। তাঁদের সরকারের বিরুদ্ধেও বিষোদ্গার করে স্লোগান দিতে দেখা গেছে। এ সময় পর পর দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান মিছিলকারীরা।
ডবলমুরিং অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিবিরের কর্মী-সমর্থকেরা ঈদগাঁ এলাকায় আচমকা মিছিল বের করেন। এরপর দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই শিবিরের কর্মীরা পালিয়ে যান।’
এদিকে বাঁশখালী ও চট্টগ্রাম নগরে জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশ বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নগরের বিভিন্ন মোড়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।
No comments