মোবাইল ফোনের অপব্যবহার-কারাগারে থেকেও সন্ত্রাস!
কারাগারে বসেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হত্যা মিশন বিষয়ে মঙ্গলবার সমকালে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অপরাধীদের চার দেয়ালে বন্দি রাখা হয় সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাদের হাতে যোগাযোগের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পেঁৗছে যাচ্ছে এবং এর ব্যবহারও হচ্ছে যথেচ্ছ।
সমকালের প্রতিবেদনে কাশিমপুর-২ কারাগারে কয়েক দফা অভিযান পরিচালনা করে বন্দিদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন সেট উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পরিচালিত এ অভিযানে উদ্ধার করা মোবাইল সেটের সংখ্যা ১৮। এ অভিযানকে আমরা কারাগার কর্তৃপক্ষের সচেতনতা হিসেবে দেখতে চাই এবং তা প্রতিটি কারাগারে অনুসরণ হওয়া উচিত বলে মনে করি। কাশিমপুর-২ কারাগারের বর্তমান জেলার অবশ্য মোবাইল ফোন সেট উদ্ধারের ঘটনাকে মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে দেখতে পারে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ যদি সঠিক না হয়, তাহলে ভুল স্বীকারে আমাদের আপত্তি থাকবে না। কিন্তু কারাগারের ভেতরে অপরাধকর্ম চাপা দেওয়ার চেষ্টা হলে সেটা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। এমনটি ঘটলে তা হবে ভূত তাড়ানোর সরিষায় ভূতের আছর হওয়ার মতো এবং তা দূর করতেই হবে। অপরাধীরা বাইরে যোগাযোগ করার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও কারারক্ষীদের কাজে লাগায়, এটা একপ্রকার ওপেন সিক্রেট। অপরাধীরা আদালতে হাজিরা দেওয়া এবং জেলের ভেতরে স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ সবসময়ই গ্রহণ করে থাকে। এ সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে গোয়েন্দাদের বাড়তি সতর্কতা প্রত্যাশিত। কিন্তু এর পরিবর্তে বিষয়টি অস্বীকার করার অর্থ কার্যত অপরাধীর পক্ষাবলম্বন। এভাবে অপরাধীদের সহায়ক হিসেবে যারা কাজ করে, তাদেরও অপরাধীদের মতোই চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এ ক্ষেত্রে কোনোরূপ গাফিলতি সহ্য করা উচিত নয়। দেশে খুনখারাবি নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনের সংবাদপত্রে থাকছে খুনের ঘটনা। এ জন্য ভাড়াটে খুনি ব্যবহারের অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। চাঁদা আদায়ের জন্যও কারাগারে বসে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য এসব বিষয়ের প্রতি মনোযোগ প্রদান জরুরি বলে আমরা মনে করি।
No comments