শিক্ষার্থী সংকট-কলেজগুলোর বেহাল দশা
এসএসসি পরীক্ষার ফল বেরোনোর পর স্বাভাবিকভাবে চারদিকে একটা খুশির রেশ ছড়িয়ে গেছে। ভালো ফলের কারণে কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ঘরে ঘরে আনন্দ। কিন্তু এত আনন্দ ছাপিয়ে উদ্বেগও কম নয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভাবতে বসেছেন, কৃতকার্য হলেও পছন্দের কলেজে কি ভর্তি হতে পারবে কৃতকার্যরা।
উদ্বেগের পেছনে সহজাত কারণ আছে। দেশে প্রতিবছর যতসংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করে তত আসন মানসম্মত কলেজগুলোতে নেই। কিন্তু এর সঙ্গে এ সত্যটিও উল্লেখ করা দরকার_ দেশের বিপুলসংখ্যক কলেজ শিক্ষার্থীর অভাবে রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটেও ভোগে। সে কলেজগুলোতে আসন সংখ্যার অভাব নেই। বাহারি নামের কলেজগুলোর অল্প হলেও অবকাঠামো আছে। নামমাত্র শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরাও আছেন। কিন্তু শিক্ষার্থী সংখ্যা সামান্য। ফলে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শিক্ষার্থী জোগাড় করতে রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয় তাদের। খবর মিলেছে, বরিশালে এমন ২৫টি কলেজ সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে। কলেজগুলোর প্রতিষ্ঠার পেছনে হয়তো শুভ উদ্দেশ্যই ছিল। ভালো নামও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, প্রয়োজনীয় হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ কলেজগুলো ভালো পরিচালকের হাতে পড়েনি। ফলে সেগুলোকে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুধু বন্ধ হওয়া কলেজগুলোই নয় থানা পর্যায়ে এমনকি জেলা পর্যায়ে এমন অনেক কলেজ আছে, যেগুলোর পড়াশোনার মান অত্যন্ত খারাপ। চালানোর চাইতে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়াই শ্রেয়। কিন্তু দেশে কলেজ সংকটের মধ্যে কলেজ বন্ধ করে দেওয়া ঠিক পদক্ষেপ বলে গণ্য হতে পারে না। তাই দরকার উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা মারফত সেগুলোর মানোন্নয়ন। দেশে চাকরি প্রার্থী মেধাবীদের অভাব নেই। কলেজগুলোতে উপযুক্ত বেতনে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দিলে সেগুলোতে শিক্ষার্থী আসবে। কলেজগুলো লাভবানও হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার, বিশেষ করে মেয়েদের শিক্ষার জন্য কলেজ থাকা জরুরি। তাই আমরা আশা করি, ভর্তির মৌসুমে সরকারের তরফে রুগ্ণ কলেজগুলোর উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ আসুক। কলেজগুলোর মানোন্নয়নে পদক্ষেপ নিলে ক্রমে সেগুলো নাম করতে পারবে, ভালো ফলও হয়তো অধরা থাকবে না। উপযুক্ত তদারকির মাধ্যমে তাই কলেজগুলোর মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
No comments