স্টুডেন্টস কাউন্সিল-সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নির্বাচন হোক

দেশের ছয়শ' বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা শনিবার সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে। এর ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতন্ত্রের বিধিবিধানের প্রতি আগ্রহ বাড়বে এবং সৃষ্টি হবে সহিষ্ণুতার মনোভাব।


রোববার সমকালে 'হাতে-কলমে গণতন্ত্রের পাঠ' শিরোনামের খবরে বলা হয়, ছাত্রছাত্রীরা বিপুল উৎসাহ নিয়ে ভোট দিয়ে তিনটি শ্রেণীতে ৭ জন করে প্রার্থী নির্বাচন করেছে। এদের মধ্য থেকে একজন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবে এবং নির্বাচিত সদস্যদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। এ উদ্যোগ উৎসাহব্যঞ্জক। ওপরের শ্রেণীগুলোতেও একই চর্চা করা সম্ভব। নির্বাচিতদের যেন তাদের বয়স অনুযায়ী কাজের সুযোগ থাকে, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তবে কর্তৃপক্ষের কাজে যদি গণতন্ত্র অনুশীলন না হয় তা হলে কিন্তু সমস্যা সৃষ্টি হবে। শিশুরা যদি দেখে যে তাদের বিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে তাহলে নিজেদের কাজেও তারা উৎসাহিত হবে। অন্যথায় শুরুতেই এ মহতী উদ্যোগ হোঁচট খাবে। একই সঙ্গে আরেকটি বিষয়ের প্রতিও আমরা দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন কার্যত অনুপস্থিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রয়েছে। কলেজগুলোর চিত্রও অভিন্ন। ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের মধ্যে সহিষ্ণুতার অভাবই এর প্রধান কারণ। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্রের অনুশীলন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিনিধি নির্বাচন করেছে তারা যদি প্রশ্ন করে যে, বড় ভাই ও বোনেরা কেন একই কাজ করছে না, তার কোনো জবাব কারও কাছেই নেই। ছাত্ররাজনীতি চলা উচিত কি উচিত নয়, সে প্রশ্নে তর্ক চলতেই পারে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ থাকাই উচিত এবং তার আয়োজন হতে হবে নিয়মিত। এ নির্বাচন দলগতভাবে হবে নাকি নির্দলীয় হবে, সেটা আলোচনাসাপেক্ষ। কিন্তু যা চলছে, তার যত দ্রুত অবসান ঘটে শিক্ষাঙ্গনের জন্য ততই মঙ্গল। ছাত্র সংগঠনগুলোকেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। বছরের পর বছর যে নির্বাচন হচ্ছে না তার প্রধান দায় কিন্তু তাদের ওপরেই বর্তায়।
 

No comments

Powered by Blogger.