ভিক্টোরিয়ার ভিক্টোরি!
নামটা ‘ভিক্টোরিয়া’ কে রেখেছেন? যিনিই রেখে থাকুন, হয়তো তাঁর মনে হয়েছিল, একদিন এই মেয়ে নামটিকে সার্থক করে তুলবে। ভিক্টোরিয়া মানে বিজয়, ভিক্টোরিয়া মানে বিজয়ী। সময়টা তো ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কারই! টানা দ্বিতীয়বার যিনি জয় করলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন।
সময়টা অদ্ভুত কাটছে। নতুন নতুন প্রেম করছেন। নতুন প্রেম সব সময়ই অন্যরকম এক অনুভূতি এনে দেয়। বিচিত্র চুল, তার চেয়েও বিচিত্র চশমাধারী মার্কিন সংগীত তারকা রেডফুও এখন অস্ট্রেলিয়ায়। প্রেমিকাকে উৎসাহ জোগাতে সশরীরে হাজির। গতকালও রড লেভার এরেনার গ্যালারিতে দেখা মিলল রেডফুর। এবার অবশ্য ‘একা’ নন, পাশেই আজারেঙ্কা। দুজন মিলে দেখলেন ছেলেদের ফাইনাল।আগের রাতে ঠিকমতো ঘুম হয়নি। ফাইনাল শেষে নানা আনুষ্ঠানিকতা তো ছিলই। এরপর রাতে প্রেমিককে নিয়ে নিজস্ব, একেবারে ব্যক্তিগত উদ্যাপন। ঘুমিয়েছেন মাত্র চার ঘণ্টা। গতকালও প্রথম ভাগটা কেটেছে ব্যস্ততায়। সদ্য জেতা ট্রফিটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন ছিল। আলোকচিত্রীদের অনুরোধে নানা ভঙ্গিমায় ধরতে হচ্ছে ট্রফিটা। একের পর এক চুমু এঁকে দিচ্ছেন তাতে। অবশ্য তাতে রেডফুর ভাগের চুম্বনসংখ্যার হেরফের হয়েছে কি না, জানা যায়নি।
ফটোসেশনের পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আরেক দফা কথা বলেছেন। পরশু ছিল তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, তাতে আরও একবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জেতার অনুভূতিই ছিল মুখ্য। কাল আবেগের ঢেউ অনেকটা থিতু হয়ে আসার পর আজারেঙ্কা জানালেন, এবার ভবিষ্যৎ নিয়েও ভাবছেন। ক্যারিয়ারের দুটি গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপাই অস্ট্রেলিয়ায়। ২৩ বছর বয়সী এই বেলারুশিয়ানের লক্ষ্য এবার অন্যদিকে। এ বছর কোন গ্র্যান্ড স্লামটি বেশি করে জিততে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে বেশ প্রত্যয় নিয়ে বলেছেন, ‘সবগুলোই।’
এর পরই মেয়েদের টেনিসের এক নম্বর তারকা দিয়েছেন ব্যাখ্যা, ‘আপনি কেবল একটি ট্রফির ওপর জোর দিতে পারেন না। কারণ এর প্রতিটিই আলাদা রকমের, প্রতিটিই স্পেশাল। সবগুলো জেতা তাই সত্যি ভীষণ কঠিন। আমি নিজের সম্ভাবনা মাপি না। আমি এটাকে বাস্তব করতে চাই। আমি কোনোটার মূল্য নির্ধারণ করি না, পরিসংখ্যানের দিকে তাকাই না। আমি শুধু সম্ভাবনাটাকে বাস্তবে রূপ দিই।’
সেমিফাইনালে জিতেও দর্শকদের একাংশের দুয়ো শুনেছেন। বিশ্বজুড়ে অনেকেই সমালোচনাও করেছে স্লোয়ান স্টিভেনসের বিপক্ষে নেওয়া তাঁর ‘কৌশলগত’ ইনজুরি টাইমআউটের। পরশু তিনি ছিলেন অন্য প্রান্তে। চোটগ্রস্ত লি না দুবার শুশ্রূষা নিয়েছেন। কিন্তু তাতে ধৈর্য বা ছন্দ কোনোটাই হারাননি আজারেঙ্কা। ট্রফিটা হাতে নিয়ে কোর্ট ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মুখে তৃপ্ত হাসিটা বলে দিচ্ছিল, সমালোচকদেরও জয় করার আনন্দ খেলে যাচ্ছে তাঁর মনে। আজারেঙ্কা স্বীকারও করেছেন, ‘এটা ছিল উত্থান-পতনময় একটা অভিজ্ঞতা। আমাকে অনেক কিছুর ভেতর দিয়েই যেতে হয়েছে।’
২০১২ সালেই প্রথম গ্র্যান্ড স্লামের স্বাদ পেয়েছেন। সেরেনাকে সরিয়ে দিয়ে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও উঠেছেন। সব মিলিয়ে জিতেছেন ছয়টি শিরোপা। কিন্তু পেছন ফিরে নয়, আজারেঙ্কা তাকিয়ে আছেন সামনে, ‘আমি অবশ্যই এর চেয়েও ভালো করতে চাই। ২০১২ সালের সব স্মৃতিই আমি ফেলে এসেছি। নতুন নতুন স্মৃতির জায়গা করে দেওয়ার জন্য আমার মস্তিষ্ক এখন পুরোপুরি খালি!’ এএফপি।
No comments