কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষ, হামলা, ১৮৬ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার-হরতালে ব্যাপক যানবাহন ভাঙচুর
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় গতকাল রোববার হরতাল-সমর্থক বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে হরতালবিরোধীদের সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। রাজশাহীতে হরতাল-সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পুলিশের।
কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নেতা ও তাঁর কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। ভাঙচুর করেছেন তাঁর গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল। যানবাহন চলাচলে বাধা দেওয়ায় জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় বিএনপির কার্যালয় এবং কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় হরতাল-সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
হরতাল-সমর্থকেরা গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২৭টি বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। অগ্নিসংযোগ করেছে একটি বাসে। এ ছাড়া হরতালবিরোধীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় গতকাল ও আগের দিন রাতে বিএনপি ও জামায়াতের ১৮৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১১ জনকে কারাদণ্ডাদেশ ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাইখালী গ্রামের গোপালপুর এলাকায় চন্দ্রঘোনা-রাজস্থলী সড়কে সকাল থেকে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। বেলা ১১টার দিকে তাঁদের ধাওয়া দেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ সময় ছাত্রলীগের এক কর্মী উল্টো মারধরের শিকার হন। এর জের ধরে বেলা তিনটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ২৪-২৫ জন রাইখালী গিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রদল-যুবদলের নেতা-কর্মীরা দা-কিরিচ ও হকিস্টিক নিয়ে প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি কোপান। এতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১০ নেতা-কর্মী আহত হন। এ সময় রাঙামাটি বন বিভাগের রাইখালী বনজদ্রব্য পরীক্ষণ ফাঁড়ির বনপ্রহরী রোপনও আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশের ভাষ্যমতে, বেলা পৌনে ১১টার দিকে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের থানা রোডের সামনে আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়েন হরতাল-সমর্থক বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে বিএনপির কার্যালয়ের দরজা ভেঙে আসবাব ও একটি মোটরসাইকেল বাইরে এনে অগ্নিসংযোগ করেন। সংঘর্ষে আহত হন উভয় পক্ষের ১২ জন।
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ: সকাল সাতটার দিকে রাজশাহী জেলা বিএনপি নগরের জাদুঘর এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি লক্ষ্মীপুরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় হরতাল-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে জেলা বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আহত হন।
নারায়ণগঞ্জ শহরে গতকাল বিএনপির মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন পাঁচজন। পুলিশ জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী নুরুন নাহার ও ওলামা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে আটক করেছে।
যানবাহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ: বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ আহমেদ নেতা-কর্মীদের নিয়ে মোটর শোভাযাত্রা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাচ্ছিলেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় গেলে হরতাল-সমর্থক ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে চেয়ারম্যানের গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তাঁদের হামলায় আহত হন উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগের অন্তত ১০ নেতা-কর্মী। আহত ব্যক্তিদের বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচ হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হরতালকারীরা সকালে নেত্রকোনা জেলা শহরের সাতপাই এলাকায় সাত-আটটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। নোয়াখালী জেলা শহর, কবিরহাট উপজেলা সদর ও সেনবাগে দুটি করে পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তোল এলাকায় চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেন যুবদলের কর্মীরা। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যান।
ফরিদপুরের মুন্সিবাজার, রাজবাড়ী রাস্তার মোড় ও বাইপাস সড়কে ভাঙচুর করা হয় তিনটি পিকআপ ভ্যান। ভোর সাড়ে চারটার দিকে হরতাল-সমর্থকেরা নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকায় পদ্মা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার আরামনগর বাজার এলাকায় ভাঙচুর করা হয় একটি ট্রাক। সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের মালসাপাড়া এলাকায় হরতালকারীরা একটি ট্রাক ভাঙচুর করে চালককে মারধর করে। পটুয়াখালীর মহাসড়কের বাঁধঘাট এলাকায় সাকুরা পরিবহনের একটি বাস এবং শহরের স্বনির্ভর সড়কে একটি ট্রাক ভাঙচুর করে হরতাল-সমর্থকেরা।
হরতাল-সমর্থককে গণপিটুনি: হরতাল-সমর্থক বিএনপির নেতা-কর্মীরা সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে কোমল পানীয় বহনকারী একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। রড দিয়ে পেটান চালক মাহিদুল ইসলাম, তাঁর সহকারী জীবন মিয়া ও পণ্য সরবরাহকারী সজল মিয়াকে। খবর পেয়ে কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজন হরতাল-সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে হেলাল মিয়া (২৫) নামের এক পিকেটারকে আটক করে পিটুনি দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে হেলালকে আটক করে।
ক্ষমতাসীনদের হামলা-ভাঙচুর: বিএনপি-যুবদলের নেতা-কর্মীরা গতকাল সকালে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিয়ালা বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। এর জের ধরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা বিয়ালা ও পাশের মাত্রাই বাজারে হরতাল-সমর্থকদের ধাওয়া করেন। পরে তাঁরা মাত্রাই বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালান এবং কার্যালয়ের সামনে থাকা বিএনপি নেতাদের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এর প্রতিবাদে দুপুরের দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি।
গ্রেপ্তার: শনিবার ও গতকাল হরতালের সময় রাজশাহীতে ৩০ জন, ফরিদপুরে ২৪ জন, নোয়াখালীতে ১৮ জন, নেত্রকোনায় ১৪ জন, পাবনায় ১৩ জন, বরগুনায় ১৩ জন, সোনারগাঁয়ে ১০ জন, পটুয়াখালীতে নয়জন, গাইবান্ধায় পাঁচজন, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় চারজন এবং নীলফামারীতে বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
১১ হরতাল-সমর্থককে কারাদণ্ড: বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সাত নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে ১০ দিন এবং দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের সময় পুলিশ তাদের আটক করেছিল।
এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ভাস্কর দেবনাথ চারজনকে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি নাহিদুল ইসলামকে ১৫ দিন, জেলা তাঁতী দলের সভাপতি শাহ আলমকে দুই দিন, ছাত্রদলের কর্মী সোহেল রানাকে তিন দিন ও সেলিমকে দুই দিন করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ককটেল বিস্ফোরণ: দুপুরে রংপুর শহরের গ্রান্ড হোটেল মোড়ে অবস্থিত জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে নাদিম নামের যুবদলের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
হরতাল-সমর্থকেরা গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ২৭টি বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। অগ্নিসংযোগ করেছে একটি বাসে। এ ছাড়া হরতালবিরোধীরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের তিনটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এসব ঘটনায় গতকাল ও আগের দিন রাতে বিএনপি ও জামায়াতের ১৮৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ১১ জনকে কারাদণ্ডাদেশ ও জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাইখালী গ্রামের গোপালপুর এলাকায় চন্দ্রঘোনা-রাজস্থলী সড়কে সকাল থেকে যানবাহন চলাচলে বাধা দেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। বেলা ১১টার দিকে তাঁদের ধাওয়া দেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ সময় ছাত্রলীগের এক কর্মী উল্টো মারধরের শিকার হন। এর জের ধরে বেলা তিনটার দিকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ২৪-২৫ জন রাইখালী গিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দেন। কিছুক্ষণ পর ছাত্রদল-যুবদলের নেতা-কর্মীরা দা-কিরিচ ও হকিস্টিক নিয়ে প্রতিপক্ষের নেতা-কর্মীদের এলোপাতাড়ি কোপান। এতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ১০ নেতা-কর্মী আহত হন। এ সময় রাঙামাটি বন বিভাগের রাইখালী বনজদ্রব্য পরীক্ষণ ফাঁড়ির বনপ্রহরী রোপনও আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও হাজীগঞ্জ থানার পুলিশের ভাষ্যমতে, বেলা পৌনে ১১টার দিকে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের থানা রোডের সামনে আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে ইটপাটকেল ছোড়েন হরতাল-সমর্থক বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা হাজীগঞ্জ পশ্চিম বাজারে বিএনপির কার্যালয়ের দরজা ভেঙে আসবাব ও একটি মোটরসাইকেল বাইরে এনে অগ্নিসংযোগ করেন। সংঘর্ষে আহত হন উভয় পক্ষের ১২ জন।
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ: সকাল সাতটার দিকে রাজশাহী জেলা বিএনপি নগরের জাদুঘর এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি লক্ষ্মীপুরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় হরতাল-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষে জেলা বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আহত হন।
নারায়ণগঞ্জ শহরে গতকাল বিএনপির মিছিলে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। এতে আহত হয়েছেন পাঁচজন। পুলিশ জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী নুরুন নাহার ও ওলামা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে আটক করেছে।
যানবাহন ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ: বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাফিজ আহমেদ নেতা-কর্মীদের নিয়ে মোটর শোভাযাত্রা করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাচ্ছিলেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় গেলে হরতাল-সমর্থক ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে চেয়ারম্যানের গাড়ি ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তাঁদের হামলায় আহত হন উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগের অন্তত ১০ নেতা-কর্মী। আহত ব্যক্তিদের বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পাঁচ হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হরতালকারীরা সকালে নেত্রকোনা জেলা শহরের সাতপাই এলাকায় সাত-আটটি অটোরিকশা ভাঙচুর করে। নোয়াখালী জেলা শহর, কবিরহাট উপজেলা সদর ও সেনবাগে দুটি করে পিকআপ ভ্যান, ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের বস্তোল এলাকায় চারটি গাড়ি ভাঙচুর করেন যুবদলের কর্মীরা। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দিলে তাঁরা পালিয়ে যান।
ফরিদপুরের মুন্সিবাজার, রাজবাড়ী রাস্তার মোড় ও বাইপাস সড়কে ভাঙচুর করা হয় তিনটি পিকআপ ভ্যান। ভোর সাড়ে চারটার দিকে হরতাল-সমর্থকেরা নাটোর শহরের চকরামপুর এলাকায় পদ্মা পরিবহন নামের একটি যাত্রীবাহী বাসে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার আরামনগর বাজার এলাকায় ভাঙচুর করা হয় একটি ট্রাক। সকালে সিরাজগঞ্জ শহরের মালসাপাড়া এলাকায় হরতালকারীরা একটি ট্রাক ভাঙচুর করে চালককে মারধর করে। পটুয়াখালীর মহাসড়কের বাঁধঘাট এলাকায় সাকুরা পরিবহনের একটি বাস এবং শহরের স্বনির্ভর সড়কে একটি ট্রাক ভাঙচুর করে হরতাল-সমর্থকেরা।
হরতাল-সমর্থককে গণপিটুনি: হরতাল-সমর্থক বিএনপির নেতা-কর্মীরা সকাল ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের কুট্টাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে কোমল পানীয় বহনকারী একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। রড দিয়ে পেটান চালক মাহিদুল ইসলাম, তাঁর সহকারী জীবন মিয়া ও পণ্য সরবরাহকারী সজল মিয়াকে। খবর পেয়ে কুট্টাপাড়া গ্রামের লোকজন হরতাল-সমর্থকদের ধাওয়া দিয়ে হেলাল মিয়া (২৫) নামের এক পিকেটারকে আটক করে পিটুনি দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে হেলালকে আটক করে।
ক্ষমতাসীনদের হামলা-ভাঙচুর: বিএনপি-যুবদলের নেতা-কর্মীরা গতকাল সকালে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার বিয়ালা বাজারের দোকানপাট বন্ধ করে দেন। এর জের ধরে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা বিয়ালা ও পাশের মাত্রাই বাজারে হরতাল-সমর্থকদের ধাওয়া করেন। পরে তাঁরা মাত্রাই বাজারে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালান এবং কার্যালয়ের সামনে থাকা বিএনপি নেতাদের দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। এর প্রতিবাদে দুপুরের দিকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিএনপি।
গ্রেপ্তার: শনিবার ও গতকাল হরতালের সময় রাজশাহীতে ৩০ জন, ফরিদপুরে ২৪ জন, নোয়াখালীতে ১৮ জন, নেত্রকোনায় ১৪ জন, পাবনায় ১৩ জন, বরগুনায় ১৩ জন, সোনারগাঁয়ে ১০ জন, পটুয়াখালীতে নয়জন, গাইবান্ধায় পাঁচজন, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলায় চারজন এবং নীলফামারীতে বিএনপি ও জামায়াতের দুই নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
১১ হরতাল-সমর্থককে কারাদণ্ড: বিকেলে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজম ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের সাত নেতা-কর্মীকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে ১০ দিন এবং দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের সময় পুলিশ তাদের আটক করেছিল।
এ ছাড়া টাঙ্গাইলের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী হাকিম ভাস্কর দেবনাথ চারজনকে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি নাহিদুল ইসলামকে ১৫ দিন, জেলা তাঁতী দলের সভাপতি শাহ আলমকে দুই দিন, ছাত্রদলের কর্মী সোহেল রানাকে তিন দিন ও সেলিমকে দুই দিন করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
ককটেল বিস্ফোরণ: দুপুরে রংপুর শহরের গ্রান্ড হোটেল মোড়ে অবস্থিত জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ বিএনপি কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে নাদিম নামের যুবদলের এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করে।
No comments