অপরাজিত ৭৫ by সিরাজুল আযম
যে সমাজে মানুষ নিজের সুবিধার বাইরে এক পা-ও হাঁটতে চায় না, সেই সময়ে কোনো মানুষ যদি নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়, তাহলে তাকে লোকে সন্দেহ করে অথবা ধরে নেয়, মানুষটি নিতান্তই বোকা। কিন্তু গ্রামদেশে সেদিনও ছিল_ শহরেও ছিল, কারও বিপদ মানে সবার বিপদ। আর কারও আনন্দ মানে তা একার নয়।
সে রকমেরই এক মানুষ অঞ্জলি বালা; এই ফরিদপুর শহরের কারও মাসিমা, কারও দিদিমা, বৌদি, কাকি অথবা খালাম্মা। বাষট্টি সালে এসেছিলেন শহরের ঝিলটুলীতে। আদি বাড়ি গোপালগঞ্জের অজপাড়াগাঁ পাটিকেলবাড়ি গ্রামে। কীভাবে তিনি এই শহরে মাসিমা বা দিদিমা হয়ে উঠলেন? সরকারি অথবা বেসরকারি হোক না কেন, সব রকমের সেবামূলক কাজে তিনি পরামর্শদাতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মিছিলে, মানববন্ধনে এবং মঞ্চে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। আজ ২২ মার্চ_ ৮ চৈত্র মানুষটির ৭৫তম জন্মজয়ন্তী। গৃহের কাজ অর্থাৎ সন্তান-সন্ততিদের সভ্য মানুষ হিসেবে সমাজে দাঁড় করিয়ে নতুন কিছু করার কথা ভাবছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। এমনই সময় ওয়াহিদুল হক এসে হাজির হলেন, বললেন_ দিদি, ছোটদের জন্য কিছু করেন। সেই থেকে শুরু শিশুর মনোজগতে ফুল ফোটানোর কাজ। একটি শিশুকে পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সীমিত পরিস্থিতিতে যতটুকু সম্ভব বাড়তে সাহায্য করার কাজে জন্ম নিল 'ফুল্কি'। ওয়াহিদুল হকের সঙ্গে ছিলেন আবুল মোমেন, শিলা মোমেন, মিজানুর রহমান ও বিপ্লব বালা। ১৯৮৭ সালের ৪ জুলাই হলো ফুল্কির পথচলা শুরু। প্রথম বছর দেড়েক নিজ গৃহে এবং পরে শিশুদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয় 'ফুল্কি'। অঞ্জলি বালার সভাপতিত্বে ফুল্কি ইতিমধ্যে জাতীয় পর্যায় পেরিয়েও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুনাম কুড়িয়ে এনেছে, হাজার হাজার শিশু-কিশোর ডানা মেলে উড়তে শিখেছে। এই অসঙ্গতিপূর্ণ সময়েও শহরের কাজের পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত গ্রামের শিশু-কিশোরদের মধ্যে কোমরপুর পারচরে ১৯৯৩ থেকে কাজ শুরু করে 'ফুল্কি'।
আজও ক্লান্তি নেই ৭৫ বছর বয়সী এই মানুষটির। টান টান হয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি এই শহরের অলিগলি, সভা-সমিতি, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে। অজপাড়াগাঁয়ে জন্মে এই মানুষটি কাজের ভিন্ন স্বাদ পেলেন কোথা থেকে? অঞ্জলি বালার শৈশব কেটেছে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত টুঠামান্দ্রার স্কুল হোস্টেলে। বাবা বিরাজমোহন বিশ্বাস অত্যন্ত বিদ্যানুরাগী, কুসংস্কারবিরোধী সমাজহিতৈষী মানুষ ছিলেন। বিগত শতকের প্রথম দিকে তিনি গ্রামে স্কুল গড়ে তুলেছিলেন মেয়েদের জন্য। স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন তখনকার সমাজে অগ্রসর আধুনিক মানুষ হিসেবে ব্রাহ্ম সমাজের শিক্ষকদের হাতে। অঞ্জলি বালা এসব শিক্ষকের সাহচর্যে বাড়ির পাশের গ্রামে ছাত্রী হোস্টেলে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন, নাটক, নাচ ও গানের হাতেখড়িও সেখানে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতার ছাত্রী নিবাসে থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
দেশজুড়ে এমন খালা/মাসিমারা বিলুপ্ত হয়ে না যান_ অঞ্জলি বালার পঞ্চসপ্ততিতম জন্মোৎসবে সেই কামনা করি।
আজও ক্লান্তি নেই ৭৫ বছর বয়সী এই মানুষটির। টান টান হয়ে ঘুরে বেড়ান তিনি এই শহরের অলিগলি, সভা-সমিতি, সেমিনার, সিম্পোজিয়ামে। অজপাড়াগাঁয়ে জন্মে এই মানুষটি কাজের ভিন্ন স্বাদ পেলেন কোথা থেকে? অঞ্জলি বালার শৈশব কেটেছে তার বাবার প্রতিষ্ঠিত টুঠামান্দ্রার স্কুল হোস্টেলে। বাবা বিরাজমোহন বিশ্বাস অত্যন্ত বিদ্যানুরাগী, কুসংস্কারবিরোধী সমাজহিতৈষী মানুষ ছিলেন। বিগত শতকের প্রথম দিকে তিনি গ্রামে স্কুল গড়ে তুলেছিলেন মেয়েদের জন্য। স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন তখনকার সমাজে অগ্রসর আধুনিক মানুষ হিসেবে ব্রাহ্ম সমাজের শিক্ষকদের হাতে। অঞ্জলি বালা এসব শিক্ষকের সাহচর্যে বাড়ির পাশের গ্রামে ছাত্রী হোস্টেলে থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন, নাটক, নাচ ও গানের হাতেখড়িও সেখানে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতার ছাত্রী নিবাসে থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
দেশজুড়ে এমন খালা/মাসিমারা বিলুপ্ত হয়ে না যান_ অঞ্জলি বালার পঞ্চসপ্ততিতম জন্মোৎসবে সেই কামনা করি।
No comments