মন্ত্রী-নেতাদেরও ধৈর্যশীল হতে হবে-সংসদে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের সদ্য সমাপ্ত অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে দেশবাসীর পাশাপাশি তাঁর দলের ও মহাজোটের সাংসদদেরও ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এই আহ্বানের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ কম। ভালো কিছু পেতে হলে আমাদের সবাইকে অবশ্যই ধৈর্য ধারণ করতে হবে।
প্রশ্ন হলো, ধৈর্য ধারণের কথাটি কেন এল? দেশের মানুষ কি অতিশয় অধৈর্যশীল হয়ে উঠেছে? আমাদের তা মনে হয় না। এই যে সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কগুলোর বেহাল অবস্থা, মহানগরে ভয়াবহ যানজট, দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে; তার পরও মানুষ ধৈর্য ধরে আছে—ভালো কিছু হবে, সেই আশায়। মন্ত্রী-নেতাদের চেহারায় জৌলুশ বাড়লেও সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন, সেই আহ্বান সবচেয়ে জরুরি তাঁর দলের নেতা ও মন্ত্রীদের জন্যই। সাধারণ মানুষ বরাবরই রাজনীতিকদের কথায় আস্থা রেখে ভোট দেন, তাঁদের ক্ষমতায় আনেন। ভাবেন, অতীতের পুনরাবৃত্তি হবে না। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, ক্ষমতায় এসে নেতারা, মন্ত্রীরা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভুলে যান।
অতএব, প্রধানমন্ত্রী সাংসদদের ‘খামোশ’ না করে দিয়ে যদি ‘ব্যর্থ’ মন্ত্রীদের কাজের হিসাব নিতেন, তাঁদের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করতেন, তা দেশবাসীর জন্য অধিকতর মঙ্গলজনক হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। সেই পরিশ্রমের ফল কি জনগণের কাছে পৌঁছেছে? না পৌঁছালে তারা কিছুটা ক্ষুব্ধ তো হবেই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাংসদদের কথায় তাঁর প্রতিধ্বনি থাকা অস্বাভাবিক নয়। মন্ত্রীরা যদি এতই সফল ও দক্ষ হবেন, তাহলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট মেরামত পর্যন্ত—সব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয় কেন?
সংসদে প্রধানমন্ত্রী সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে দেশবাসীকে আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাঁরা আশ্বস্ত হবেন কি না, সেটি নির্ভর করবে সরকারের মন্ত্রী, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আচরণের ওপর। তাঁদের কথায় ও কাজে ন্যূনতম ধৈর্যের আলামত নেই, সেটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন কিংবা সংসদে দলীয় সাংসদের সমালোচনার ক্ষেত্রেই হোক।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী সপ্তাহে এক দিন বাজারে যাওয়া বন্ধ রাখতে বলেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী মানুষকে কম খেতে বলেছেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী বিনা পরীক্ষায় ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে বলেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে আদিবাসী নেই বলে ফরমান জারি করেছেন। তাঁরা দেশবাসীকে এত সুপরামর্শ না দিয়ে যদি নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজটি ঠিকমতো করতেন, তাহলে সরকারকে এতটা সমালোচনার মুখে পড়তে হতো না।
দেশবাসী যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। গণমাধ্যমও সাদাকে সাদা ও কালোকে কালোই বলছে। কিন্তু মন্ত্রী ও নেতারা তা মেনে নিতে পারছেন না। সমালোচনা শুনলেই তাঁদের গাত্রদাহ হয়। তবে মন্ত্রীদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার জুতসই জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিকেরা মন্ত্রীদের চাকরি করেন না, অতএব [মন্ত্রীদের] কথা বলার সময় সাবধান থাকতে হবে।’ আমাদের ধারণা, উপদেষ্টা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই কথাগুলো বলেছেন। তাঁর এই উপলব্ধি অন্য উপদেষ্টা ও মন্ত্রীদের মধ্যে সঞ্চারিত হলে সরকার যে সমালোচনা গ্রহণে ধৈর্যশীল নয়, সেই বদনাম কিছুটা হলেও ঘুচবে।
অতএব, প্রধানমন্ত্রী সাংসদদের ‘খামোশ’ না করে দিয়ে যদি ‘ব্যর্থ’ মন্ত্রীদের কাজের হিসাব নিতেন, তাঁদের ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করতেন, তা দেশবাসীর জন্য অধিকতর মঙ্গলজনক হতো। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মন্ত্রীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। সেই পরিশ্রমের ফল কি জনগণের কাছে পৌঁছেছে? না পৌঁছালে তারা কিছুটা ক্ষুব্ধ তো হবেই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে সাংসদদের কথায় তাঁর প্রতিধ্বনি থাকা অস্বাভাবিক নয়। মন্ত্রীরা যদি এতই সফল ও দক্ষ হবেন, তাহলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট মেরামত পর্যন্ত—সব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয় কেন?
সংসদে প্রধানমন্ত্রী সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে দেশবাসীকে আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাঁরা আশ্বস্ত হবেন কি না, সেটি নির্ভর করবে সরকারের মন্ত্রী, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের আচরণের ওপর। তাঁদের কথায় ও কাজে ন্যূনতম ধৈর্যের আলামত নেই, সেটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন কিংবা সংসদে দলীয় সাংসদের সমালোচনার ক্ষেত্রেই হোক।
মাননীয় অর্থমন্ত্রী সপ্তাহে এক দিন বাজারে যাওয়া বন্ধ রাখতে বলেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী মানুষকে কম খেতে বলেছেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী বিনা পরীক্ষায় ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে বলেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশে আদিবাসী নেই বলে ফরমান জারি করেছেন। তাঁরা দেশবাসীকে এত সুপরামর্শ না দিয়ে যদি নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের কাজটি ঠিকমতো করতেন, তাহলে সরকারকে এতটা সমালোচনার মুখে পড়তে হতো না।
দেশবাসী যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। গণমাধ্যমও সাদাকে সাদা ও কালোকে কালোই বলছে। কিন্তু মন্ত্রী ও নেতারা তা মেনে নিতে পারছেন না। সমালোচনা শুনলেই তাঁদের গাত্রদাহ হয়। তবে মন্ত্রীদের এ ধরনের প্রতিক্রিয়ার জুতসই জবাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিকেরা মন্ত্রীদের চাকরি করেন না, অতএব [মন্ত্রীদের] কথা বলার সময় সাবধান থাকতে হবে।’ আমাদের ধারণা, উপদেষ্টা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই কথাগুলো বলেছেন। তাঁর এই উপলব্ধি অন্য উপদেষ্টা ও মন্ত্রীদের মধ্যে সঞ্চারিত হলে সরকার যে সমালোচনা গ্রহণে ধৈর্যশীল নয়, সেই বদনাম কিছুটা হলেও ঘুচবে।
No comments