সিঙ্গাইরে স্কুলছাত্র হত্যা-প্রবাসী পরিবারের নিরাপত্তা সংকট
প্রবাসী পরিবারের নিরাপত্তার ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাধারণত উদাসীন থাকতে দেখা যায়। অথচ এসব পরিবারের নিরাপত্তার ব্যাপারে বাড়তি দৃষ্টি দেওয়া উচিত। কারণ, পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি ভিন দেশে কর্মে নিয়োজিত থাকেন।
সমাজকেও এ ব্যাপারে রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করতে হয়। চোর-ডাকাত-অপহরণকারীরা ওত পেতে থাকে এ ধরনের সহজ শিকারের জন্য। প্রবাসীর বাড়ি ডাকাতি, পরিবারের সদস্যকে খুন বা অপহরণের সংবাদ প্রায়ই মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে প্রবাসী আফজাল হোসেনের শিশুপুত্র স্কুলছাত্র অপহরণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার সংবাদটি এ ধরনের পরিবারগুলোর নিরাপত্তা সংকটকে তুলে ধরে। সমকালে বুধবার এ সংক্রান্ত সংবাদটি পড়ে মনে হয়েছে, হয় অর্থের লোভে বা পারিবারিক কোনো কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডটি ঘটে থাকতে পারে। তবে রাসেল হত্যার মাধ্যমে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নিরূপণে ব্যর্থতা যে প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। পরিবারের সদস্যরা যখন তাদের প্রাণপ্রিয় সন্তানকে সম্ভাব্য অপহরণের বিষয়টি জানান তখনই দায়িত্বরত পুলিশের এ ব্যাপারে ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ছিল। অপহৃত শিশুটি যেহেতু প্রবাসীর সন্তান, তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা এবং শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করা কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। পুলিশ ও প্রশাসনকে এ ব্যাপারে ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বরং অপহরণের পর একদিন অতিবাহিত হলে পুলিশ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে তাদের কর্মর্ সমাধা করতে চেয়েছে। হয়তো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী তৎপর হলে এই করুণ মৃত্যুটি এড়ানো যেত। প্রবাসীরা পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান দেন দেশকে। এ জন্য তাদের জন্য রাষ্ট্রেরও কিছু করণীয় রয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রবাসীদের পরিবার অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকে এবং যেহেতু এই পরিবারগুলোই দুর্বৃত্তদের সহজ টার্গেট, তাই এসব পরিবারের নিরাপত্তায় বাড়তি নজর দেওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করি।
No comments