সিপিডির সংলাপে তথ্যঃ একই সঙ্গে বাড়ছে সংসদ বর্জনের হার আর সাংসদদের বেতন-ভাতা
বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ বর্জনের হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সাংসদদের বেতন-ভাতা। সংসদে ছোট দলগুলোর অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে কমছে। গত নির্বাচন জোটবদ্ধ হওয়ায় ছোট দলগুলোর কোনো কণ্ঠ এখন আর সংসদে নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংসদ সংলাপে মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
সংলাপে সাংসদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, বিরোধপূর্ণ ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির কারণে জাতীয় সংসদ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সহিষ্ণু ও সমঝোতামূলক মনোভাবের অভাবের কারণে দেশে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে।
‘বাংলাদেশের সংসদ: প্রতিনিধিত্ব ও দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এই সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের অন্যতম প্রধান গবেষণা সংস্থা ক্রিস্টিয়ান মিশেলসেন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইনজে এমান্ডসেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।
মূল প্রবন্ধ: সংসদ বর্জনের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়কে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন রওনক জাহান। তিনি উল্লেখ করেন, পঞ্চম সংসদে কার্যদিবসের হিসাবে সংসদ বর্জনের হার ৩৪ শতাংশ, সপ্তমে ৪৩ শতাংশ, অষ্টমে ৬০ শতাংশ এবং নবম সংসদে ৭৪ শতাংশ।
সংসদ বর্জনের হারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাংসদদের বেতন-ভাতা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন রওনক জাহান। তিনি জানান, ১৯৭৩ সালে একজন সাংসদের বেতন ও অন্যান্য ভাতার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা। বর্তমানে একজন সাংসদ বেতন ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে পেয়ে থাকেন ৮৭ হাজার টাকা।
রওনক জাহান তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, সংসদে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব দিন দিন কমছে। পঞ্চম সংসদে নয়টি ছোট দল পেয়েছিল ৬৮টি আসন।
প্রবন্ধে বলা হয়, অষ্টম সংসদে তিনটি ছোট দল পেয়েছিল ছয়টি আসন। নবম সংসদে ছোট দলগুলো বড় দুটি জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। অবশ্য এলডিপি থেকে অলি আহমদ গত নির্বাচনে জিতেছেন।
রওনক জাহান আরও জানান, পঞ্চম থেকে নবম সংসদ পর্যন্ত ২৪ জন হিন্দু সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র একজন। প্রথম সংসদে ব্যবসায়ী সাংসদের সংখ্যা ছিল মোট সাংসদের ২৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৫৬ শতাংশ। প্রথম সংসদে আইনজীবীর হার ছিল ২৭ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ১৫ শতাংশ। ৯০ শতাংশ সাংসদ স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চাকরির তদবির থেকে জমির মামলা নিষ্পত্তির কাজও তাঁরা করে থাকেন।
সুপারিশে রওনক জাহান বলেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান বিরোধপূর্ণ। কিন্তু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তাদের সমঝোতায় আসতে হবে। নির্বাহী বিভাগকে দলনিরপেক্ষ করার ব্যবস্থা তাদেরই গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সংসদ বর্জনের অপসংস্কৃতি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
রওনক জাহান বলেন, অতীতের যেকোনো সংসদের তুলনায় এবারের সংসদের কমিটিগুলো অনেক বেশি সক্রিয়। তবে কমিটিগুলোর ক্ষমতা সীমিত। বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে তলবের ক্ষমতা তাদের নেই। কমিটির কাজ নিয়ে গবেষণা করার মতো লোকও নেই। কমিটিগুলো পরামর্শ নেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানায় না। সংসদ সচিবালয়ের নিজস্ব কোনো জনবল নেই। আমলাদের ওপর নির্ভর করেই তাদের কাজ করতে হয়।
রওনক জাহান বলেন, নির্বাচনে কালোটাকার প্রভাব এবং ব্যয় কমাতে প্রকৃত রাজনৈতিক নেতাদের মনোনয়ন দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে চলছে তার উল্টো। বর্তমানে সংসদ ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে।
গবেষক ইনজে এমান্ডসেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশের সংসদের বিভিন্ন দিকের তুলনা করেন।
আলোচনা: সংলাপের প্রধান অতিথি সংসদের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী বলেন, সাংসদেরা অনেক ক্ষেত্রেই সংসদীয় রীতি অনুসরণ করেন না। তাঁরা পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদের বাইরের বিষয়কে ভেতরে ডেকে আনেন, যা প্রকৃত অর্থে পয়েন্ট অব অর্ডার হয় না।
বিরোধী দলের সাংসদ এম কে আনোয়ার বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রপতির শাসন থেকে প্রধানমন্ত্রীর শাসনে ফিরে এসেছে। কিন্তু এতে রাষ্ট্রের গুণগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। সংবিধান সংশোধন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে সবার সঙ্গে পরামর্শ করা হলেও সেসব পরামর্শ আমলে নেওয়া হয়নি। এভাবে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না।
সরকারি দলের সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘অব্যাহত সংঘাত ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শক্তিশালী সংসদ গড়ে উঠতে পারে না। গণতন্ত্রের মূল কথা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। কিন্তু আমাদের দেশের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। সংসদের অবস্থা এক চাকাহীন বাইসাইকেলের মতো। বিরোধী দলবিহীন সংসদ এক অর্থে অকার্যকর। আমরা সবাই মিলে সংসদকে ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হয়েছি; যে কারণে গণতন্ত্রও এখন সংকটে।’
সাংসদ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন আবশ্যক। গণতন্ত্রের বিকাশে অর্থ বিল, জাতীয় নিরাপত্তা, সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়া বাকি সব বিষয়ে সাংসদের ভোটাধিকার থাকা উচিত।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি দোষের নয়। সমস্যা হলো, তাঁরা সংসদে বসেও ব্যবসার কথা ভাবেন।
সাংসদ আলী আশরাফ বলেন, সাংসদেরা সংসদে যান না। কিন্তু বেতন-ভাতা সবই নেন, বিদেশ সফরও করেন। এটি অনৈতিক।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, নির্বাচনে জেতার পর সাংসদদের লক্ষ হয়ে থাকে, পরবর্তী নির্বাচনে কীভাবে জেতা যাবে। সে জন্য তাঁরা টাকা সংগ্রহ করতে শুরু করেন। এসব করতে গিয়ে তাঁরা সংসদের কথা ভুলে যান।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংসদকে কার্যকর করতে হলে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, বিরোধী দলের হেরে যাওয়া প্রার্থীরা দলীয় প্রধানকে সংসদে না যাওয়ার ব্যাপারে প্রভাবিত করেন। এটাই সংসদ বর্জনের অন্যতম কারণ। সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা নির্ধারণের জন্য সংবিধানে আইন প্রণয়নের কথা বলা থাকলেও ৪০ বছরেও আইনটি হয়নি। মন্ত্রী-আমলাদের অনিচ্ছার কারণেই এটি হয়নি; যে কারণে বাংলাদেশের সংসদে কমিটির কোনো ক্ষমতা নেই।
সংলাপে আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মনিরুজ্জামান মিঞা, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাংসদ তারানা হালিম, ফজলুল আজিম, ব্যারিস্টার মনজুর হাসান প্রমুখ।
‘বাংলাদেশের সংসদ: প্রতিনিধিত্ব ও দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক এই সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো অধ্যাপক রওনক জাহান এবং স্ক্যান্ডিনেভিয়ান অঞ্চলের অন্যতম প্রধান গবেষণা সংস্থা ক্রিস্টিয়ান মিশেলসেন ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক ইনজে এমান্ডসেন। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।
মূল প্রবন্ধ: সংসদ বর্জনের হার বেড়ে যাওয়ার বিষয়কে উদ্বেগজনক বলে মনে করেন রওনক জাহান। তিনি উল্লেখ করেন, পঞ্চম সংসদে কার্যদিবসের হিসাবে সংসদ বর্জনের হার ৩৪ শতাংশ, সপ্তমে ৪৩ শতাংশ, অষ্টমে ৬০ শতাংশ এবং নবম সংসদে ৭৪ শতাংশ।
সংসদ বর্জনের হারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাংসদদের বেতন-ভাতা বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন রওনক জাহান। তিনি জানান, ১৯৭৩ সালে একজন সাংসদের বেতন ও অন্যান্য ভাতার পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৫০০ টাকা। বর্তমানে একজন সাংসদ বেতন ও অন্যান্য ভাতা মিলিয়ে পেয়ে থাকেন ৮৭ হাজার টাকা।
রওনক জাহান তাঁর প্রবন্ধে উল্লেখ করেন, সংসদে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব দিন দিন কমছে। পঞ্চম সংসদে নয়টি ছোট দল পেয়েছিল ৬৮টি আসন।
প্রবন্ধে বলা হয়, অষ্টম সংসদে তিনটি ছোট দল পেয়েছিল ছয়টি আসন। নবম সংসদে ছোট দলগুলো বড় দুটি জোটের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়। অবশ্য এলডিপি থেকে অলি আহমদ গত নির্বাচনে জিতেছেন।
রওনক জাহান আরও জানান, পঞ্চম থেকে নবম সংসদ পর্যন্ত ২৪ জন হিন্দু সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র একজন। প্রথম সংসদে ব্যবসায়ী সাংসদের সংখ্যা ছিল মোট সাংসদের ২৪ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ৫৬ শতাংশ। প্রথম সংসদে আইনজীবীর হার ছিল ২৭ শতাংশ। বর্তমানে এ হার ১৫ শতাংশ। ৯০ শতাংশ সাংসদ স্থানীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। চাকরির তদবির থেকে জমির মামলা নিষ্পত্তির কাজও তাঁরা করে থাকেন।
সুপারিশে রওনক জাহান বলেন, প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের অবস্থান বিরোধপূর্ণ। কিন্তু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য তাদের সমঝোতায় আসতে হবে। নির্বাহী বিভাগকে দলনিরপেক্ষ করার ব্যবস্থা তাদেরই গ্রহণ করতে হবে। রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই সংসদ বর্জনের অপসংস্কৃতি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
রওনক জাহান বলেন, অতীতের যেকোনো সংসদের তুলনায় এবারের সংসদের কমিটিগুলো অনেক বেশি সক্রিয়। তবে কমিটিগুলোর ক্ষমতা সীমিত। বিশেষ কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে তলবের ক্ষমতা তাদের নেই। কমিটির কাজ নিয়ে গবেষণা করার মতো লোকও নেই। কমিটিগুলো পরামর্শ নেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের বৈঠকে আমন্ত্রণ জানায় না। সংসদ সচিবালয়ের নিজস্ব কোনো জনবল নেই। আমলাদের ওপর নির্ভর করেই তাদের কাজ করতে হয়।
রওনক জাহান বলেন, নির্বাচনে কালোটাকার প্রভাব এবং ব্যয় কমাতে প্রকৃত রাজনৈতিক নেতাদের মনোনয়ন দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে চলছে তার উল্টো। বর্তমানে সংসদ ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে।
গবেষক ইনজে এমান্ডসেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদের সঙ্গে বাংলাদেশের সংসদের বিভিন্ন দিকের তুলনা করেন।
আলোচনা: সংলাপের প্রধান অতিথি সংসদের ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী বলেন, সাংসদেরা অনেক ক্ষেত্রেই সংসদীয় রীতি অনুসরণ করেন না। তাঁরা পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদের বাইরের বিষয়কে ভেতরে ডেকে আনেন, যা প্রকৃত অর্থে পয়েন্ট অব অর্ডার হয় না।
বিরোধী দলের সাংসদ এম কে আনোয়ার বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রপতির শাসন থেকে প্রধানমন্ত্রীর শাসনে ফিরে এসেছে। কিন্তু এতে রাষ্ট্রের গুণগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। সংবিধান সংশোধন এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের বিষয়ে সবার সঙ্গে পরামর্শ করা হলেও সেসব পরামর্শ আমলে নেওয়া হয়নি। এভাবে গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না।
সরকারি দলের সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘অব্যাহত সংঘাত ও সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে শক্তিশালী সংসদ গড়ে উঠতে পারে না। গণতন্ত্রের মূল কথা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ। কিন্তু আমাদের দেশের সব ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত। সংসদের অবস্থা এক চাকাহীন বাইসাইকেলের মতো। বিরোধী দলবিহীন সংসদ এক অর্থে অকার্যকর। আমরা সবাই মিলে সংসদকে ধ্বংস করার কাজে লিপ্ত হয়েছি; যে কারণে গণতন্ত্রও এখন সংকটে।’
সাংসদ আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সংশোধন আবশ্যক। গণতন্ত্রের বিকাশে অর্থ বিল, জাতীয় নিরাপত্তা, সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ছাড়া বাকি সব বিষয়ে সাংসদের ভোটাধিকার থাকা উচিত।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ব্যবসায়ীদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি দোষের নয়। সমস্যা হলো, তাঁরা সংসদে বসেও ব্যবসার কথা ভাবেন।
সাংসদ আলী আশরাফ বলেন, সাংসদেরা সংসদে যান না। কিন্তু বেতন-ভাতা সবই নেন, বিদেশ সফরও করেন। এটি অনৈতিক।
অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, নির্বাচনে জেতার পর সাংসদদের লক্ষ হয়ে থাকে, পরবর্তী নির্বাচনে কীভাবে জেতা যাবে। সে জন্য তাঁরা টাকা সংগ্রহ করতে শুরু করেন। এসব করতে গিয়ে তাঁরা সংসদের কথা ভুলে যান।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, সংসদকে কার্যকর করতে হলে স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে।
আসিফ নজরুল বলেন, বিরোধী দলের হেরে যাওয়া প্রার্থীরা দলীয় প্রধানকে সংসদে না যাওয়ার ব্যাপারে প্রভাবিত করেন। এটাই সংসদ বর্জনের অন্যতম কারণ। সংসদীয় কমিটির ক্ষমতা নির্ধারণের জন্য সংবিধানে আইন প্রণয়নের কথা বলা থাকলেও ৪০ বছরেও আইনটি হয়নি। মন্ত্রী-আমলাদের অনিচ্ছার কারণেই এটি হয়নি; যে কারণে বাংলাদেশের সংসদে কমিটির কোনো ক্ষমতা নেই।
সংলাপে আরও অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মনিরুজ্জামান মিঞা, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, সাংসদ তারানা হালিম, ফজলুল আজিম, ব্যারিস্টার মনজুর হাসান প্রমুখ।
No comments