আজ পবিত্র ঈদ-এ- মিলাদুন্নবী
আজ শুক্রবার ১২ রবিউল আউয়াল, পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী। মানবতার মুক্তির দূত, সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা.) এই দিনে জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুবরণ করেন।
মুসলিম বিশ্বের কাছে এ দিনটি একই সঙ্গে আনন্দ ও বেদনার দিন। তাই এই দিনে বিশ্বের ১শ’ ৬০ কোটি মুসলমান পরম শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে তাদের প্রিয় নবীকে স্মরণ করবে। তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হবে ইয়া নবী সালাম আ’লায়কা, ইয়া রাসুল সালাম আলায়কা। বালাগাল উলাবেকামালিহি, কাশাফদ্দোজাবেজামালিহি, হাসানাত জামিউ খেসালিহি সাল্লু আলাইহে ওয়া আলিহি। পবিত্র ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিনটি উদযাপনের জন্য বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন রেডিও, টেলিভিশন এ উপলক্ষে বিশেষ কর্মসূচী নিয়েছে এবং সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র।আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আজকের এই দিনে মক্কা নগরীর পবিত্র ভূমিতে মা আমেনার কোলে জন্মগ্রহণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব। তাঁর জন্মের ৬ মাস আগে বাবা আব্দুল্লাহ সিরিয়া থেকে ফেরার পথে মক্কার অদূরে কুফা নগরীতে মৃত্যুবরণ করেন। জন্মের ২ বছর পর্যন্ত প্রিয় নবীকে লালন পালন করেন দুদমাতা হালিমা। এরপর তিনি তাঁর মাতা আমেনার কাছে ফিরে আসেন। তাঁর বয়স যখন ৬ বছর তখন মায়ের সঙ্গে কুফা নগরীতে পিতার কবর জিয়ারত শেষে ফেরার পথে মা আমেনাও একই স্থানে মৃত্যুবরণ করেন। পিতার কবরের পাশেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। পিতামাতা মারা যাওয়ার পর তিনি দাদা আব্দুল মুত্তালিবের কাছে বড় হন। শেষ পর্যন্ত দাদা মারা গেলে চাচা আবু তালিব নবীর কিশোর বয়সে দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন।
নবুওয়াতপ্রাপ্তির পর থেকে তিনি মানবতার কল্যাণে বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান। দীর্ঘ ২২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম এবং জুলুম- নির্যাতন সহ্য করে বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি ইসলামের বাণী পৌঁছে দেন। ইসলাম প্রচারকালে তিনি তায়েফবাসীদের দ্বারা আক্রমণের শিকার হন। তায়েফবাসীরা নবীকে পাথর মেরে রক্তাক্ত করে দিয়েছিল। এ সময় তিনি প্রতিশোধ না নিয়ে তায়েফবাসীর জন্য আল্লাহ্র কাছে প্রার্থনা করেন, ‘এদের জ্ঞান দাও প্রভু, এদের ক্ষমা কর।’
দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঈদ-এ-মিলাদুন্নী উপলক্ষে পৃথক বাণীতে মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং দেশের সার্বিক অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করেন। এদিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ উপলক্ষে পক্ষকালব্যাপী বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হামদ, নাত সেমিনার ও কেরাত মাহফিল। এ ছাড়া বাংলাদেশ মাইজভা-ারী ফোরাম, আজিমপুর দায়রা শরীফ, তমুদ্দিন মজলিস, দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
No comments