একুশের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিন- একুশের পদক বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বস্তরে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের মাঝে একুশের চেতনা ছড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার ওসমানী মিলনায়তনে একুশে পদক-২০১০ বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, একুশ বাঙালী জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেৰতা ও অসামপ্রদায়িক চেতনার ধারক-বাহক। যতদিন একুশ আমাদের চেতনায় বেঁচে থাকবে, ততদিন এ দেশে মানুষের হৃদয় থেকে অসামপ্রদায়িকতা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে মুছে ফেলা যাবে না। জঙ্গীবাদ-উগ্রবাদ প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। তিনি বলেন, প্রতিটি নাগরিকের দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের বীরত্বের কথা তুলে ধরা।শনিবার ওসমানী মিলনায়তনে একুশে পদক-২০১০ বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান।
২০১০ সালের একুশে পদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন_ ভাষা সংগ্রামে বিশেষ অবদানের জন্য ড. গোলাম মাওলা, কবি মোহাম্মদ রফিক (সাহিত্য), সাইদ আহমেদ (মরণোত্তর, সাহিত্য), হেলেনা খান (সাহিত্য), ড. মুনতাসীর খান মামুন (গবেষণা), এএসএইচকে সাদেক (মরণোত্তর, সামাজিক উন্নয়ন), সংঘরাজ জ্যোতিপাল মহাথেরো (সমাজসেবা), একেএম হানিফ (হানিফ সংকেত) (সমাজ উন্নয়ন), পার্থ প্রতীম মজুমদার (মূকাভিনয়), নাসির উদ্দিন ইউসুফ (নাট্যকলা), একেএম আবদুর রউফ (মরণোত্তর) চিত্রশিল্পী, ইমদাদ হোসেন (মরণোত্তর) চিত্রশিল্পী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল (সঙ্গীত), লায়লা হাসান (নৃত্য) এবং ফটোসাংবাদিক মোহাম্মদ আলম (মরণোত্তর) সাংবাদিকতা।
পদক বিতরণী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ। বক্তৃতা করেন তথ্য ও সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব এম এ আজিজ।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে একমাত্র বাঙালী জাতিই বুকের রক্ত দিয়ে ভাষার অধিকার রৰা করেছে, আমরা বাঙালী জাতি হিসেবে খুবই ভাগ্যবান। কেননা, বাংলা ভাষা পৃথিবীর অন্যতম ভাষা, যার কথ্য ও লিখিত দু'টি রূপই আছে। আছে লিখিত বর্ণমালা। তিনি বলেন, বিশ্বে বর্তমানে প্রায় সাত হাজার ভাষার প্রচলন রয়েছে। এমন কিছু ভাষা আছে যা শুধু মুখে বলা হয়, লিখিত কোন রূপ নেই। আবার অনেক ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা নেই। খবর বাসস ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় অগ্রগতি, উন্নয়ন, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা_ এসব কিছুরই পূর্বশর্ত হলো উন্নত ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিৰা। আমরা চাই বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিকাশের মাধ্যমে একটি জ্ঞানভিত্তিক, কুসংস্কারমুক্ত, উদার ও সহিষ্ণু সমাজ গড়ে উঠুক।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষা আজ শুধু বাঙালীর জন্য নয়। বিশ্বের বিভিন্ন ৰুদ্র জাতিসত্তার ভাষা, তাদের অসত্মিত্ব, তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রৰার প্রতীক হয়ে উঠেছে আজ একুশে ফেব্রম্নয়ারি।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী গারো আদিবাসী প্রমোদ মানকিন তাঁর মাতৃভাষায় প্রধানমন্ত্রীসহ উপস্থিত সকলকে সম্ভাষণ জানান। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে গারো ভাষায় 'মিত্তেলা, মিত্তেলা' বলে তাঁকে ধন্যবাদ জানান।
No comments