বিদ্যুতের স্বার্থ পুনর্বিন্যাস ॥ গ্রাহক স্বার্থ রক্ষা- ০ বিইআরসির নীতিগত সিদ্ধান্ত- ০ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মানুষ যেন কোন অভিযোগ করতে না পারে, হয়রানির শিকার বা বোঝা মনে না করে by রশিদ মামুন
বিদ্যুতের বিল প্রদানে প্রত্যেকটি স্ল্যাবের সুবিধা দেয়া হবে গ্রাহককে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) প্রত্যেকটি স্ল্যাবের সুবিধা গ্রাহককে দেয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন করে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে স্ল্যাব পুনর্বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নিলেও প্রত্যেকটি স্ল্যাবের সুবিধা গ্রাহককে প্রদান করা নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কেটে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুত বিল নিয়ে মানুষ যাতে কোন রকম অভিযোগ না করতে পারে সে বিষয়ে সম্প্রতি সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুত বিভাগ এবং বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এক বৈঠকে জানতে চান হঠাৎ কি এমন হলো যে মানুষের বিদ্যুত বিল দ্বিগুণ তিনগুণ হয়ে যাচ্ছে। বৈঠকে কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়, সযাব সুবিধা প্রত্যাহার করায় বিদ্যুত বিলে এই পরিবর্তন এসেছে। ওই বৈঠকে কমিশনের এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ ভুল ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সযাব প্রথা পুনর্বিন্যাস না করেই কেন সুবিধা প্রত্যাহার করা হলো সংশ্লিষ্টদের কাছে তা জানতে চান। তিনি বলেন, বিদ্যুত বিলের ক্ষেত্রে গ্রাহক যাতে কোনভাবে হয়রানির স্বীকার না হয় এবং মানুষ যেন বিষয়টিকে বোঝা মনে না করে সেদিকে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
কমিশন সূত্র জানায়, বিদ্যুত বিভাগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিদ্যুত বিলের ক্ষেত্রে যে সযাব সুবিধা গ্রাহককে দেয়া হতো তা তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করার প্রেক্ষিতে কমিশন গত মার্চ থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। কিন্তু এখন মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টির পর বিদ্যুত বিভাগ সিদ্ধান্তের দায় চাপাচ্ছে কমিশনের ওপর।
কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, কমিশন সাতটি স্ন্যাব করার বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি দিলেও প্রত্যেকটি স্ন্যাবের সুবিধা এক গ্রাহক পাবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ছিল। তবে এখন কমিশন প্রত্যেক গ্রাহককে এই সুবিধা দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকে লাইফলাইন ট্যারিফ (প্রান্তিক মানুষকে দেয়া অল্প মূল্যের বিদ্যুত) সুবিধা থেকে ধাপে ধাপে বিল হিসেবের সুবিধা পাবেন।
কমিশনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আগে যেভাবে আমাদের ওপর বিভিন্ন বিষয় চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবার আর তা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বিতরণ এবং উৎপাদনকারীর স্বার্থ রক্ষার সঙ্গে গ্রাহকের ভোগান্তিও বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত কর্যকর করা হবে। আগামী এক থেকে দেড় বছর আর যাতে দাম বৃদ্ধির প্রয়োজন না হয় এমনভাবে এবার বিদ্যুতের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
কমিশন জানায়, এখন আরইবির চারটি এবং অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর তিনটি সø্যাব রয়েছে। নতুন করে সকল বিতরণ কোম্পানির জন্য সাতটি সø্যাব করা হবে। সø্যাবগুলো হচ্ছে, এক থেকে ৭৫, ৭৬ থেকে ২০০, ২০১ থেকে ৩০০, ৩০১ থেকে ৪০০, ৪০১ থেকে ৫০০, ৫০১ থেকে ৭০০ এবং ৭০০-এর উর্ধে। তবে পিডিবি এবং ডেসকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের যে প্রিপেইড মিটার রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ছয়টি সøাব রূপান্তর করা যায়। পিডিবিতে ৪৬ হাজার এবং আরইবিতে ১০ হাজার প্রিপেইড মিটার রয়েছে। কমিশনের তরফ থেকে দুই বিতরণ কোম্পানিকে বলা হয়েছে, সাতটি সø্যাব সমন্বয় করা সম্ভব কিনা তা যাচাই বাছাই করে দেখতে।
এখন বিদ্যুত ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৪০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুত ব্যবহার করলে তাকে সাত টাকা ৮৯ পয়সা করে বিল দিতে হয়। কিন্তু ৪০০ ইউনিটের নিচে থাকলে বিদ্যুতের দাম চার টাকা ২৯ পয়সা প্রতি ইউনিট। আর এক থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত তিন টাকা ০৫ পয়সা।
গত মার্চে সø্যাব প্রথা তুলে দেয়ার পর দেখা যায়, কেউ ৪০১ ইউনিট বিদ্যুত ব্যবহার করলে তাকে সাত টাকা ৮৯ পয়সা দরে প্রতি ইউনিটের বিল দিতে হয়েছে। তবে মার্চের আগে বিদ্যুত বিল দেয়ার ক্ষেত্রে কেউ ৪০১ ইউনিট ব্যবহার করলে তাদের বিল প্রস্তুত করা হতো শূন্য থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত তিন টাকা ০৫ পয়সা, পরবর্তী ৩০০ ইউনিট চার টাকা ২৯ পয়সা এবং পরের এক ইউনিট সাত টাকা ৮৯ পয়সা দরে। তাতে ৪০১ ইউনিট ব্যবহারকারী কোন একজন গ্রাহকের বিদ্যুত বিল হতো এক হাজার ৫৯৯ টাকা (ভ্যাট, ট্যাক্স বাদে)। কিন্তু সø্যাব তুলে দেয়ায় একই পরিমাণ বিদ্যুত ব্যবহারে বিল গুনতে হয়েছে তিন হাজার ১৬৩ টাকা। অর্থাৎ সø্যাব প্রথা তুলে দেয়ায় মাত্র এক ইউনিট বেশি বিদ্যুত ব্যবহারকারী গ্রাহকেকে এক হাজার ৫৬৪ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।
বিদ্যুত বিলের ক্ষেত্রে গ্রাহক এই বিড়ম্বনায় গত মার্চ থেকেই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। বিষয়টি সরকারের ওপর মহলেও আলোচনা হয়। বিদ্যুত বিভাগের কয়েক শীর্ষ ব্যক্তি ছাড়া অন্য সকলে সø্যাব প্রথা গ্রহককে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষে মত দেন।
কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা হিসাব করে দেখেছি সø্যাব প্রথা পুনর্বিনাস করলে এখন গ্রাহকের যে ভোগান্তি থাকে তা ১৫ থেকে ২০ ভাগ কমবে। কিন্তু তাতে গ্রাহকের পরিপূর্ণ স্বস্তি আসবে না। গ্রাহকের অসন্তোষও রয়ে যাবে। কাজেই গ্রাহককে প্রত্যেকটি সø্যাবের সুবিধাই দিতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের কোন কোন রাষ্ট্রে গ্রাহকে সø্যাব সুবিধা দেয়া হয় না কিন্তু সেখানে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম অনেক কম। কিন্তু আমাদের এখানে এক দিকে বিদ্যুতের দামও বেশি আবার সø্যাব সুবিধাও প্রত্যাহার করা হয়েছে যাতে গ্রাহক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রত। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলেও গ্রাহকের এই বিড়ম্বনার কথা শুনতে হচ্ছে। মার্চে নেয়া সিদ্ধান্তটি আমাদের ভুল ছিল। কাজেই এ সমস্যার সমাধান করবে বিইআরসি। তিনি জানান, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে এসব বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। ইতোমধ্যে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেছে এখন এসে পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর এমন ঘোষণা দিলে গ্রাহকের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে কী না জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বিষয়টি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত জানাব।
কমিশন সূত্র জানায়, শেষ মুহূর্তে এসে পিডিবির দেয়া হিসেবে কিছু গোজামিল থাকায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে সমস্যা হচ্ছে। পিডিবি এবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনবার প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর পরিবর্তন করেছে। প্রথমে ৮০ ভাগ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে বিদ্যুত কেন্দ্র চালানো হবে এমন প্রস্তাব দিলে সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে পিডিবি দু’বার প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর পরিবর্তন করেছে। এছাড়া আগামী বছর যে তেলভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা তার কতভাব আসতে পারবে তাও হিসেব করা হচ্ছে। পিডিবি দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আগামী বছরের এসব কেন্দ্রের জ্বালানি খরচকে অন্তর্ভুক্ত করে হিসেব দেখিয়েছে। কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে না এলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সময় ওই ব্যয় বাদ দেয়া হবে। এ জন্য কমিশনের কারিগরি কমিটি পিডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এছাড়া পিডিবি এবং ডেসকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের ৪৬ হাজার প্রিপেইড মিটার রয়েছে এসব মিটারে বিদ্যুত বিল সমন্বয়ের জন্য বাড়ি বাড়ি যেতে হয়। এক মাসের কম সময়ে এ বিল সমন্বয় করা সম্ভব নয়।
কমিশন সূত্র জানায়, সকল বিষয় সমন্বয় করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদ্যুতের দাম ঘোষণা করা সম্ভব না হলে চলতি মাসে আর দাম বৃদ্ধি হবে না। আর আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে ঘোষণা দিতে হলেও আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সকল হিসাব চূড়ান্ত করতে হবে। কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, এখনও দাম নির্ধারণের কিছু বিষয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
কমিশন সূত্র জানায়, বিদ্যুত বিভাগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিদ্যুত বিলের ক্ষেত্রে যে সযাব সুবিধা গ্রাহককে দেয়া হতো তা তুলে নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করার প্রেক্ষিতে কমিশন গত মার্চ থেকে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। কিন্তু এখন মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টির পর বিদ্যুত বিভাগ সিদ্ধান্তের দায় চাপাচ্ছে কমিশনের ওপর।
কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, কমিশন সাতটি স্ন্যাব করার বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি দিলেও প্রত্যেকটি স্ন্যাবের সুবিধা এক গ্রাহক পাবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ছিল। তবে এখন কমিশন প্রত্যেক গ্রাহককে এই সুবিধা দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অর্থাৎ প্রত্যেকে লাইফলাইন ট্যারিফ (প্রান্তিক মানুষকে দেয়া অল্প মূল্যের বিদ্যুত) সুবিধা থেকে ধাপে ধাপে বিল হিসেবের সুবিধা পাবেন।
কমিশনের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আগে যেভাবে আমাদের ওপর বিভিন্ন বিষয় চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এবার আর তা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, বিতরণ এবং উৎপাদনকারীর স্বার্থ রক্ষার সঙ্গে গ্রাহকের ভোগান্তিও বিবেচনায় নিয়ে এই সিদ্ধান্ত কর্যকর করা হবে। আগামী এক থেকে দেড় বছর আর যাতে দাম বৃদ্ধির প্রয়োজন না হয় এমনভাবে এবার বিদ্যুতের দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
কমিশন জানায়, এখন আরইবির চারটি এবং অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর তিনটি সø্যাব রয়েছে। নতুন করে সকল বিতরণ কোম্পানির জন্য সাতটি সø্যাব করা হবে। সø্যাবগুলো হচ্ছে, এক থেকে ৭৫, ৭৬ থেকে ২০০, ২০১ থেকে ৩০০, ৩০১ থেকে ৪০০, ৪০১ থেকে ৫০০, ৫০১ থেকে ৭০০ এবং ৭০০-এর উর্ধে। তবে পিডিবি এবং ডেসকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের যে প্রিপেইড মিটার রয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ছয়টি সøাব রূপান্তর করা যায়। পিডিবিতে ৪৬ হাজার এবং আরইবিতে ১০ হাজার প্রিপেইড মিটার রয়েছে। কমিশনের তরফ থেকে দুই বিতরণ কোম্পানিকে বলা হয়েছে, সাতটি সø্যাব সমন্বয় করা সম্ভব কিনা তা যাচাই বাছাই করে দেখতে।
এখন বিদ্যুত ব্যবহারের ক্ষেত্রে ৪০০ ইউনিটের ওপরে বিদ্যুত ব্যবহার করলে তাকে সাত টাকা ৮৯ পয়সা করে বিল দিতে হয়। কিন্তু ৪০০ ইউনিটের নিচে থাকলে বিদ্যুতের দাম চার টাকা ২৯ পয়সা প্রতি ইউনিট। আর এক থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত তিন টাকা ০৫ পয়সা।
গত মার্চে সø্যাব প্রথা তুলে দেয়ার পর দেখা যায়, কেউ ৪০১ ইউনিট বিদ্যুত ব্যবহার করলে তাকে সাত টাকা ৮৯ পয়সা দরে প্রতি ইউনিটের বিল দিতে হয়েছে। তবে মার্চের আগে বিদ্যুত বিল দেয়ার ক্ষেত্রে কেউ ৪০১ ইউনিট ব্যবহার করলে তাদের বিল প্রস্তুত করা হতো শূন্য থেকে ১০০ ইউনিট পর্যন্ত তিন টাকা ০৫ পয়সা, পরবর্তী ৩০০ ইউনিট চার টাকা ২৯ পয়সা এবং পরের এক ইউনিট সাত টাকা ৮৯ পয়সা দরে। তাতে ৪০১ ইউনিট ব্যবহারকারী কোন একজন গ্রাহকের বিদ্যুত বিল হতো এক হাজার ৫৯৯ টাকা (ভ্যাট, ট্যাক্স বাদে)। কিন্তু সø্যাব তুলে দেয়ায় একই পরিমাণ বিদ্যুত ব্যবহারে বিল গুনতে হয়েছে তিন হাজার ১৬৩ টাকা। অর্থাৎ সø্যাব প্রথা তুলে দেয়ায় মাত্র এক ইউনিট বেশি বিদ্যুত ব্যবহারকারী গ্রাহকেকে এক হাজার ৫৬৪ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে।
বিদ্যুত বিলের ক্ষেত্রে গ্রাহক এই বিড়ম্বনায় গত মার্চ থেকেই অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। বিষয়টি সরকারের ওপর মহলেও আলোচনা হয়। বিদ্যুত বিভাগের কয়েক শীর্ষ ব্যক্তি ছাড়া অন্য সকলে সø্যাব প্রথা গ্রহককে পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার পক্ষে মত দেন।
কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা হিসাব করে দেখেছি সø্যাব প্রথা পুনর্বিনাস করলে এখন গ্রাহকের যে ভোগান্তি থাকে তা ১৫ থেকে ২০ ভাগ কমবে। কিন্তু তাতে গ্রাহকের পরিপূর্ণ স্বস্তি আসবে না। গ্রাহকের অসন্তোষও রয়ে যাবে। কাজেই গ্রাহককে প্রত্যেকটি সø্যাবের সুবিধাই দিতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের কোন কোন রাষ্ট্রে গ্রাহকে সø্যাব সুবিধা দেয়া হয় না কিন্তু সেখানে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম অনেক কম। কিন্তু আমাদের এখানে এক দিকে বিদ্যুতের দামও বেশি আবার সø্যাব সুবিধাও প্রত্যাহার করা হয়েছে যাতে গ্রাহক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইউসুফ হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরাও বিব্রত। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলেও গ্রাহকের এই বিড়ম্বনার কথা শুনতে হচ্ছে। মার্চে নেয়া সিদ্ধান্তটি আমাদের ভুল ছিল। কাজেই এ সমস্যার সমাধান করবে বিইআরসি। তিনি জানান, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণার সঙ্গে এসব বিষয়ে নির্দেশনা থাকবে। ইতোমধ্যে মাসের অর্ধেক পেরিয়ে গেছে এখন এসে পহেলা সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর এমন ঘোষণা দিলে গ্রাহকের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে কী না জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বিষয়টি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত জানাব।
কমিশন সূত্র জানায়, শেষ মুহূর্তে এসে পিডিবির দেয়া হিসেবে কিছু গোজামিল থাকায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিতে সমস্যা হচ্ছে। পিডিবি এবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তিনবার প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর পরিবর্তন করেছে। প্রথমে ৮০ ভাগ প্ল্যান্ট ফ্যাক্টরে বিদ্যুত কেন্দ্র চালানো হবে এমন প্রস্তাব দিলে সমালোচনা শুরু হয়। পরবর্তীতে পিডিবি দু’বার প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর পরিবর্তন করেছে। এছাড়া আগামী বছর যে তেলভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র উৎপাদনে আসার কথা তার কতভাব আসতে পারবে তাও হিসেব করা হচ্ছে। পিডিবি দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আগামী বছরের এসব কেন্দ্রের জ্বালানি খরচকে অন্তর্ভুক্ত করে হিসেব দেখিয়েছে। কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে না এলে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির সময় ওই ব্যয় বাদ দেয়া হবে। এ জন্য কমিশনের কারিগরি কমিটি পিডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এছাড়া পিডিবি এবং ডেসকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাদের ৪৬ হাজার প্রিপেইড মিটার রয়েছে এসব মিটারে বিদ্যুত বিল সমন্বয়ের জন্য বাড়ি বাড়ি যেতে হয়। এক মাসের কম সময়ে এ বিল সমন্বয় করা সম্ভব নয়।
কমিশন সূত্র জানায়, সকল বিষয় সমন্বয় করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদ্যুতের দাম ঘোষণা করা সম্ভব না হলে চলতি মাসে আর দাম বৃদ্ধি হবে না। আর আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে ঘোষণা দিতে হলেও আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে সকল হিসাব চূড়ান্ত করতে হবে। কমিশনের একাধিক সূত্র জানায়, এখনও দাম নির্ধারণের কিছু বিষয়ে কাজ করতে হচ্ছে।
No comments