যকৃতের নতুন চিকিৎসা!

ভাইরাসজনিত সমস্যায় দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল শিশুটির যকৃৎ। একপর্যায়ে তা প্রায় অকেজো হয়ে যায়। এ সময় চিকিৎসকেরা একজন দাতার কাছ থেকে যকৃতের কোষ এনে শিশুটির দেহে স্থাপন করলেন। এতে সজীব হয়ে উঠতে লাগল শিশুটির প্রায় অকেজো যকৃৎ।
এভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে একটি শিশুকে সুস্থ করে তোলার কথা দাবি করেছেন লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। সেরে ওঠা আট মাস বয়সী শিশুর নাম আইয়াদ সৈয়দ। চিকিৎসকদের দাবি, বিশ্বে এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো শিশুকে সুস্থ করে তোলার ঘটনা এটাই প্রথম। ছয় মাস আগে ভাইরাসের সংক্রমণে শিশুটির যকৃতের কাজ বন্ধ হয়ে সে মরতে বসেছিল।
এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা যকৃৎ প্রতিস্থাপনের জন্য অপেক্ষা না করে একজন দাতার কাছ থেকে যকৃতের প্রয়োজনীয় কোষ আহরণ করেন। পরে তা শিশুটির দেহে স্থাপন করেন তাঁরা। এসব কোষ বিশেষ প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত উপাদান থেকে প্রয়োজনীয় আমিষ তৈরি করে। পরে তা যকৃতের কাজ অস্থায়ীভাবে বুঝে নেয়। কোষগুলোর কাজ যাতে ব্যাহত না হয়, এ জন্য শৈবাল থেকে আহরিত এক ধরনের রাসায়নিক উপাদানে আবৃত করা হয়েছে এসব। কোষগুলো এভাবে দুই সপ্তাহ ধরে দায়িত্ব পালন করার পর শিশুটির নিজের যকৃৎ সেরে উঠতে শুরু করে।
কিংস কলেজ হাসপাতালের যকৃৎ বিশেষজ্ঞ অনিল ধাওয়ান বলেন, এ ঘটনায় হাসপাতালের পুরো দল উল্লসিত। তিনি বলেন, ‘যকৃত কাজ করতে অক্ষম—এমন শিশুর ক্ষেত্রে এ ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ ও সাফল্যের ঘটনা এটাই প্রথম। মাত্র কয়েক মাস আগে শিশুটিকে যখন প্রথম দেখি, সে এত অসুস্থ ছিল যে ডায়ালিসিস ও শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। আমরা মনে করি, শিশুটিকে বেঁচে থাকার আরেকটি সুযোগ এনে দিতে পেরেছি। তার যকৃৎ এখন প্রায় স্বাভাবিকভাবে কাজ করছে।’
শিশু আইয়াদ সৈয়দের বাবা জাহাঙ্গীর তাঁর সন্তানের সুস্থ হয়ে ওঠার ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘চিকিৎসা নেওয়ার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সে সুস্থ হয়ে উঠতে শুরু করে। তাকে নিয়ে আশান্বিত হই।’ বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.