ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১২-মজার প্রশ্নে-গানে-শপথে প্রাণবন্ত গণিত উৎসব

মাথার চুল কাটলে কেন ব্যথা পাওয়া যায় না? শিশু বয়সে দাঁত পড়লে তা আবার উঠলেও বড়দের দাঁত পড়লে ওঠে না কেন? গতকাল মঙ্গলবার ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১২ বরিশাল অঞ্চলের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা অতিথিদের কাছে এ রকম চমকপ্রদ প্রশ্ন ছুড়ে দেয়। আর অতিথিদের কাছ থেকে প্রশ্নের জবাব পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ে তারা। বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এই গণিত উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। খুদে ‘গণিতবিদ’দের


পদচারণে সকাল থেকেই মুখরিত ছিল উৎসবস্থল। সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও উৎসবের উদ্বোধন করেন বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. নূরুল আমীন। উৎসবে আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড ও বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের পতাকা উত্তোলন করেন যথাক্রমে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ মজুমদার এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের বরিশাল শাখার ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হুমায়ুন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষক হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনীর হাসান, প্রথম আলোর উপ-ফিচার সম্পাদক পল্লব মোহাইমেন।
সকাল ১০টায় শুরু হয় মূল প্রতিযোগিতা। সোয়া এক ঘণ্টার প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা শেষে বেলা সাড়ে ১১টায় খুদে ‘গণিতবিদ’দের গণিতবিষয়ক নানা প্রশ্ন ও সংগীতানুষ্ঠানে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গণ। উৎসবে শিক্ষার্থীদের দেশকে ভালোবাসার এবং মাদক, মুখস্থ ও মিথ্যাকে ‘না’ বলার অঙ্গীকার করান মুনীর হাসান।
উৎসবে খুদে ‘গণিতবিদ’ শামরী রহমান শুচি নৃত্য পরিবেশন করে। বন্ধুসভার বন্ধুদের সংগীত, গণিত জয়ের গান ‘আয় আয় আয় গণিতের আঙিনায়’ ও ‘গণিত করব জয় একদিন’ এর সঙ্গে কণ্ঠ মেলায় উৎসবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা। উৎসবে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশন করে।
ইভ টিজিংয়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বখাটের হামলায় নিহত বরিশাল এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিতের শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা জিন্নাত আলীর স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। উৎসবে জিন্নাত আলী হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করা হয়।
সমাপনী অনুষ্ঠানে বুয়েটের শিক্ষক হুমায়ুন কবির বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের সম্মান অর্জনে শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশের গণিত শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বেশি উদ্যোগ নিতে হবে।
পল্লব মোহাইমেন বলেন, গণিত উৎসব কেবল প্রথম আলোর নয়, এটি এখন সারা বাংলাদেশের উৎসব।
ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. আলমগীর হুমায়ুন বলেন, ‘আমাদের ব্যাংক প্রথম আলোর সঙ্গে একত্রিত হয়ে সুবিধাবঞ্চিত অবহেলিত ও গ্রামের শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছে।’
উৎসবে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠির ৯৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। উৎসব শেষে চারটি বিভাগে ১৫ জন করে মোট ৬০ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.