এমপির বয়ান

লীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমে জোট-মহাজোটের স্রোত উপেক্ষা করে মানুষের ভালোবাসায় জিতে আসা তরুণ সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তির জনপ্রিয়তা এখন শূন্যের কোঠায়_এমন কথা মানতে রাজি নন এমপি মুক্তি। তিনি বলেন, 'আমরা তিন পুরুষ ধরে রাজনীতি করছি। মানুষের পাল্স আমরা বুঝি। আগের চেয়ে বরং আমার জনপ্রিয়তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।


যারা নিজেরা জনগণ থেকে দূরে, তারাই জনপ্রিয় ব্যক্তিদের মানহানি করার জন্য এমন ধারণাপ্রসূত কথা বলে।' জনপ্রিয়তা বাড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ১৭টিতেই তাঁর সমর্থিত প্রার্থীরা চেয়ারম্যান হিসেবে জয়লাভ করেছেন। অন্য অভিযোগ সম্পর্কেও তিনি কালের কণ্ঠের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন। অভিযোগগুলোর সব ক'টি তিনি অস্বীকার করেননি, আবার কিছু অভিযোগের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি জানান, দেশের অবহেলিত এলাকার মধ্যে নড়াইল-কালিয়া আসন এলাকাটি রয়েছে। এখানে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। তাই এখানে উন্নয়ন করলেও চোখে পড়তে সময় লাগবে। এখনো দুই বছর মেয়াদ রয়েছে। এর মধ্যে দৃশ্যমান উন্নয়ন সম্ভব হবে। তিনি বলেন, 'মধুমতি নদীর ওপর চাপাইল এলাকায় সেতু নির্মাণ শেষ পর্যায়ে। এ ছাড়া রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে। এই তিন বছরে বিভিন্ন সেক্টরে ৫০০ কোটিরও বেশি টাকার কাজ করা হয়েছে। ভরাট হয়ে যাওয়া খাল পুনঃখনন করা হয়েছে। এতে সংসদীয় আসনের চাচুড়ি ও বাঁশগ্রাম বিলের পানি নিষ্কাশন সহজ হবে। ভাঙনপ্রবণ মধুমতি ও নবগঙ্গা নদীতে ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এই তিন বছরে অন্তত ২৫ হাজার পরিবার প্রত্যক্ষভাবে আমার কাছ থেকে উপকার পেয়েছে। চারটি কলেজকে মডেল করেছি। কলাবাড়িয়া, শেখহাটি, কচুডাঙ্গা, গাছবাড়িয়া, নয়নপুর, বিলধুড়িয়া, পেরলি, সিঙ্গাশোলপুর, খড়লিয়া, ভদ্রবিলা ও মিরাপাড়া এলাকার সড়ক সংস্কার এবং রঘুনাথপুর সেতু নির্মাণ করেছি।'
স্কুল-কলেজে শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'নির্বাচিতদের কাছ থেকে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠান টাকা নিয়ে থাকে। টাকাগুলো ব্যক্তিগতভাবে আমি নেই না।'
তিনি বলেন, 'আমি রাজনীতি করি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ-প্রতিদ্বন্দ্বীরা নানা রকম কথা বলে। কিন্তু সেগুলোর কতটা সত্য, তা দেখতে হবে। তিন পুরুষ ধরে রাজনীতি করছি। আগামীতেও রাজনীতি করে যাবে। চর দখলের মতো দখল করে নেতা হইনি। সংসদ সদস্য হয়েছি_বড় কিছু হয়ে যাইনি। আমি জনতার ছিলাম, এখনো জনতার আছি।'
টিআর-কাবিখার বরাদ্দ আত্মসাৎ প্রসঙ্গে বলেন, 'আগের এমপি চাল-গম বরাদ্দে টনপ্রতি টাকা নিতেন। আমার সময়ে তা হয় না।' ব্যক্তিগত সম্পদ বানানো প্রসঙ্গে বলেন, 'সরকারিভাবে প্রাপ্ত প্লট বাদে কোনো সম্পদই করিনি। আমার বা আমার পরিবারের সদস্যদের কারো নামে-বেনামে কোনো সম্পদ দেখাতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।'
দলকে এক করতে না পারা প্রসঙ্গে বলেন, 'আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছি। যারা মহাজোটের প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন, তাঁদের সঙ্গে মনস্তাত্তি্বক দ্বন্দ্ব তখন থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল। আমি চেষ্টা করেছি দ্বন্দ্ব দূর করার। কিন্তু একটি পক্ষ অনড় অবস্থানে রয়েছে।'

No comments

Powered by Blogger.