ফলোআপ-আঙুল কেটে ফেলা হলেও স্বপ্নের মৃত্যু হতে দেব না’ by মনিরুজ্জামান
‘শুধু স্বামীর অবাধ্য হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার কারণে আঙুল হারাতে হয়েছে। ও (স্বামী) হয়তো ভেবেছিল, আঙুল কেটে নিলে আমার পক্ষে আর লেখাপড়া করা সম্ভব হবে না। পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হারাব। আমি এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করতে চাই। পরীক্ষা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে, আঙুল না থাকা বড় সমস্যা, কিন্তু পরীক্ষা দেওয়া যায়।’ কথাগুলো বলছিলেন হাওয়া আক্তার।পরিবারের আপনজনের কাছে সে জুঁই। সদ্য স্বামীর বর্বরতার শিকার হয়ে ডান
হাতের সব আঙুল হারিয়েছেন। জুঁই এবার নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন। আঙুল হারানোর পরও তিনি পরীক্ষা দিতে ফরম পূরণ করেছেন। বিষয়টিকে কলেজের শিক্ষকেরা দেখছেন বর্বরতার বিরুদ্ধে শিক্ষার শক্তি হিসেবে।
জুঁইয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০০৮ সালের ৩০ জানুয়ারি বাতেন মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ইউনুস মিয়ার মেয়ে জুঁইয়ের বিয়ে হয়। রফিকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নূরজাহানপুর গ্রামে। আর জুঁইয়ের বাড়ি নরসিংদীর ভেলানগরে। ছোটবেলা থেকেই জুঁইয়ের লেখাপড়ার প্রতি ছিল আগ্রহ। বিয়ের পরপরই জুঁইকে তাঁর স্বামী সাফ জানিয়ে দেন, যথেষ্ট হয়েছে, আর লেখাপড়া নয়। পড়া বন্ধ করে দিয়ে রফিক চলে যান দুবাইতে। এরই মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বের হয়। জিপিএ-৪ পান জুঁই। জুঁইয়ের বাবা ইউনুস মিয়া একজন তাঁতশ্রমিক। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে মেয়ের স্বামীকে না জানিয়েই নরসিংদী সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগে ভর্তি করে দেন। কলেজে ভর্তির খবর শুনেই ক্ষিপ্ত হন রফিক। এ ছাড়া শ্বশুরবাড়ির স্বজনেরাও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। এরই মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফল করে সামনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জুঁই। ২৭ নভেম্বর স্বামীর ফোন পান তিনি। মুঠোফোনে জুঁইকে তাঁর স্বামী জানান, বিদেশ থেকে একটি মুঠোফোন, কিছু স্বর্ণালংকার ও কসমেটিকস পাঠানো হয়েছে। বোন নাঈমার বাসায় আছে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জিয়া কলোনিতে নাঈমার বাসা থেকে এসব নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে বলা হয়।
জুঁই বলেন, ‘১ ডিসেম্বর আমি ঢাকায় যাই। ৪ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখি, আমার সামনে দাঁড়িয়ে রফিক। তখন জিজ্ঞেস করি, তুমি কখন আসছ? উত্তরে রফিক বলে, “কিছুক্ষণ আগে। সারপ্রাইজ দেব বলে জানাইনি।” এ কথা বলেই দরজা বন্ধ করে দেয় রফিক। “নিষেধ করা সত্ত্বেও তুমি তাহলে ঠিকই পরীক্ষা দিয়েছো। তোমার জন্য একটা পুরস্কার আছে। চোখ বন্ধ করো।” এ কথা বলেই রফিক ওড়না দিয়ে আমার দুই চোখ শক্ত করে বেঁধে ফেলে। মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে চাপাতি দিয়ে আঙুল কেটে নেয়।’ রফিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ আঙুল কাটার কাজে ব্যবহূত চাপাতিটি ও আঙুল উদ্ধার করেছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জুঁইয়ের বাবা ইউনুস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কেন মেয়েকে কলেজে ভর্তি করেছিলাম। ভর্তি না করালে তো আজ আমার মেয়ের এ অবস্থা হতো না। এখন তো আঙুলও গেল, লেখাপড়াও বন্ধ হলো।’
কথা থামিয়ে দিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে জুঁই বাবাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আঙুল গেলেও লেখাপড়া বন্ধ করব না, বাবা। স্বপ্নের মৃত্যু হলে স্বামীর জয় হবে। তাকে জয়ী হতে দিতে চায় না জুঁই।’
জুঁইয়ের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০০৮ সালের ৩০ জানুয়ারি বাতেন মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ইউনুস মিয়ার মেয়ে জুঁইয়ের বিয়ে হয়। রফিকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নূরজাহানপুর গ্রামে। আর জুঁইয়ের বাড়ি নরসিংদীর ভেলানগরে। ছোটবেলা থেকেই জুঁইয়ের লেখাপড়ার প্রতি ছিল আগ্রহ। বিয়ের পরপরই জুঁইকে তাঁর স্বামী সাফ জানিয়ে দেন, যথেষ্ট হয়েছে, আর লেখাপড়া নয়। পড়া বন্ধ করে দিয়ে রফিক চলে যান দুবাইতে। এরই মধ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল বের হয়। জিপিএ-৪ পান জুঁই। জুঁইয়ের বাবা ইউনুস মিয়া একজন তাঁতশ্রমিক। মেয়ের লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহ দেখে মেয়ের স্বামীকে না জানিয়েই নরসিংদী সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগে ভর্তি করে দেন। কলেজে ভর্তির খবর শুনেই ক্ষিপ্ত হন রফিক। এ ছাড়া শ্বশুরবাড়ির স্বজনেরাও বিষয়টি ভালোভাবে নেননি। এরই মধ্যে নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফল করে সামনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জুঁই। ২৭ নভেম্বর স্বামীর ফোন পান তিনি। মুঠোফোনে জুঁইকে তাঁর স্বামী জানান, বিদেশ থেকে একটি মুঠোফোন, কিছু স্বর্ণালংকার ও কসমেটিকস পাঠানো হয়েছে। বোন নাঈমার বাসায় আছে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার জিয়া কলোনিতে নাঈমার বাসা থেকে এসব নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁকে বলা হয়।
জুঁই বলেন, ‘১ ডিসেম্বর আমি ঢাকায় যাই। ৪ ডিসেম্বর সকালে ঘুম থেকে জেগে দেখি, আমার সামনে দাঁড়িয়ে রফিক। তখন জিজ্ঞেস করি, তুমি কখন আসছ? উত্তরে রফিক বলে, “কিছুক্ষণ আগে। সারপ্রাইজ দেব বলে জানাইনি।” এ কথা বলেই দরজা বন্ধ করে দেয় রফিক। “নিষেধ করা সত্ত্বেও তুমি তাহলে ঠিকই পরীক্ষা দিয়েছো। তোমার জন্য একটা পুরস্কার আছে। চোখ বন্ধ করো।” এ কথা বলেই রফিক ওড়না দিয়ে আমার দুই চোখ শক্ত করে বেঁধে ফেলে। মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে চাপাতি দিয়ে আঙুল কেটে নেয়।’ রফিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। পুলিশ আঙুল কাটার কাজে ব্যবহূত চাপাতিটি ও আঙুল উদ্ধার করেছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জুঁইয়ের বাবা ইউনুস মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কেন মেয়েকে কলেজে ভর্তি করেছিলাম। ভর্তি না করালে তো আজ আমার মেয়ের এ অবস্থা হতো না। এখন তো আঙুলও গেল, লেখাপড়াও বন্ধ হলো।’
কথা থামিয়ে দিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে জুঁই বাবাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আঙুল গেলেও লেখাপড়া বন্ধ করব না, বাবা। স্বপ্নের মৃত্যু হলে স্বামীর জয় হবে। তাকে জয়ী হতে দিতে চায় না জুঁই।’
No comments