শালিতের বিনিময়ে সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে

ফিলিস্তিনের কট্টরপন্থী দল হামাসের হাতে বন্দী ইসরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতের মুক্তির বিনিময়ে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল। এ ব্যাপারে উভয়পক্ষ একটি চুক্তি করতে সম্মত হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে হামাসের হাতে বন্দী শালিত মুক্তি পাবেন। ২০০৬ সালের জুন মাসে মূলত গাজাভিত্তিক কট্টরপন্থী দল হামাসের হাতে আটক হওয়ার পর শালিত দেশে জাতীয় আইকনে পরিণত হন। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে তা হবে হামাসের রাজনৈতিক নীতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন। মিসরের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ এ চুক্তির বিষয়ে সম্মত হয়।
ইসরায়েল সরকার গতকাল বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে হামাসের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করেছে। গত মঙ্গলবার রাতে জরুরি বৈঠকে বিষয়টি সরকারের কাছে উপস্থাপন করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘গিলাদ শালিতের মুক্তির ব্যাপারে হামাসের সঙ্গে আলোচনায় একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। কয়েক দিনের মধ্যেই শালিত দেশে ফিরবেন।’ নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সম্ভাব্য সবচেয়ে ভালো চুক্তিতে পৌঁছেছি আমরা। এটা খুবই সম্ভব যে, এই মুহূর্তে সুযোগের যে জানালা খুলে গেছে তা এক দিন চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন আমরা শালিতকে আর ফিরিয়ে আনতে পারব না।’
পাঁচ ঘণ্টা বৈঠকের পর ইসরায়েলের ২৬ জন মন্ত্রী শালিতের মুক্তির স্বার্থে হামাসের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অনুমোদন করেন। তবে জাতীয়তাবাদী তিনজন প্রভাবশালী মন্ত্রী এই চুক্তির বিরোধিতা করেন। তাঁরা হলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আভিগদর লিবারম্যান, অবকাঠামোবিষয়কমন্ত্রী ইউজি ল্যানডাউ ও কৌশলবিষয়কমন্ত্রী মোসে ইয়ালুন।
তবে ইসরায়েলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা শীর্ষ কর্মকর্তাসহ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক, চিফ অব স্টাফ বেন্নি গানটজ ও সিন বেথ এবং মোসাদের প্রধান ইয়োরাম কোহেন ও টামির প্রাডো হামাসের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি সমর্থন করেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হামাস নেতা খালেদ মিশেল। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে নিজের টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি বলেন, ইসরায়েলি এক সেনার মুক্তির বিনিময়ে এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবে। খালেদ মিশেল বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলের হাতে বন্দী এক হাজার ২৭ জন ফিলিস্তিনি মুক্তি পাবেন। তাঁদের মধ্যে ২৭ জন নারীও রয়েছেন। তিনি জানান, প্রথম ধাপে ‘এক সপ্তাহের’ মধ্যে সাড়ে ৪০০ জন মুক্তি পাবেন। দ্বিতীয় ধাপে ‘দুই মাসের’ মধ্যে মুক্তি পাবেন অন্যরা।
তবে ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চুক্তি হলেও দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেবে না ইসরায়েল। তাঁরা হলেন: প্রভাবশালী ফিলিস্তিনি নেতা মারওয়ান বারগুতি ও পিএফএলপির নেতা আহমেদ সাদাত। তবে এর আগে ফিলিস্তিনের একজন কর্মকর্তা জানান, গিলাদ শালিতের মুক্তির বিনিময়ে ওই দুই নেতাও মুক্তি পেতে যাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.