সরকারের ৩ বছর-প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ধীরগতি জনমনে হতাশা-ক্ষোভ by শেখ আবু হাসান
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতারা খুলনার উন্নয়নে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও বন্ধ কলকারখানা চালু ও দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে পদ্মা সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়নকাজ সম্পাদনের কথা উল্লেখ করা হয়। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত তিন বছরে ওই সব প্রতিশ্রুতির সামান্যই বাস্তবায়িত হয়েছে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির মহাসচিব শেখ আশরাফ-উজ-জামান প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান মহাজোট সরকার খুলনার উন্নয়নে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে অত্যন্ত ধীরগতি পরিলক্ষিত হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে জটিলতা এ অঞ্চলের উন্নয়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মংলা বন্দর আধুনিকায়ন ও গতিশীল করতে দ্রুত ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা একান্ত প্রয়োজন। বৃহত্তর খুলনার সার্বিক উন্নয়নের দাবিতে উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি শিগগিরই আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে তিনি জানান। খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব ফিরোজ আহমেদ বলেন, এ অঞ্চলের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও তদারকি প্রয়োজন।
উন্নয়নকর্মী শামীমা সুলতানা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে খুলনায় ব্যাপক ও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে—এ বিবেচনায় এ অঞ্চলের মানুষ বিপুল ভোটে তাদের বিজয়ী করেছিল। কিন্তু গত তিন বছরে মহাজোট সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় খুলনার মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
ভৌত অবকাঠামো: গত সাধারণ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও রাজধানীর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য পদ্মা সেতু নির্মাণ, ২০১১ সালের মধ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ, বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা এবং খুলনায় আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এর মধ্যে বাগেরহাটের রামপালের ফয়লা এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কার্যক্রম কয়েক বছর আগে শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে মাটি ভরাটসহ অন্যান্য কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় ধরে ২০০৭ সালে খুলনা রেলস্টেশন আধুনিকায়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় খুলনা-যশোর, খুলনা-সাতক্ষীরা, খুলনা-মংলা মহাসড়ক, খুলনা-পাইকগাছা সড়ক অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খুলনা-মংলা রেললাইন স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। ২০১১ সালের শেষ নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মহাজোট। সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন বসানোর কাজ কেবল শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিকেন্দ্র (আইটি ভিলেজ) স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনো জায়গা নির্ধারিত হয়নি।
শিক্ষা: খুলনায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ ও খালিশপুর মুহসীন কলেজকে সরকারীকরণের বিষয়টি প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।
স্বাস্থ্য: ৫০ শয্যার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার বিষয়টি প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫০০ শয্যায় উন্নীত হলেও শয্যাসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল ও আনুষঙ্গিক সুবিধা বাড়ানো হয়নি।
কলকারখানা চালুর উদ্যোগ: খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস, দৌলতপুর জুট মিলস, পিপলস জুট মিলসসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত সব কলকারখানা চালু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে পিপলস জুট মিলস চালু হয়েছে। খুলনা নিউজপ্রিন্ট ও দৌলতপুর জুট মিলস চালু করার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। বন্ধ থাকা দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি চালুর জন্য সরকার কারখানাটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এটি কবে চালু হবে, তা কেউ বলতে পারছে না।
বন্দরে ড্রেজিংয়ে দরপত্র: মংলা বন্দরে ড্রেজিং, অটোমেশনসহ আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ে না। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, মংলা বন্দরকে গতিশীল ও আধুনিকায়ন করতে ১২০ কোটি টাকার ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
তবু আশ্বাস মেয়রের: খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে খুলনার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পিপলস জুট মিলস ও শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। দৌলতপুর জুট মিলস আগামী দু-এক মাসের মধ্যে চালু হবে। নিউজপ্রিন্ট মিলসও চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত খুলনার তিনটি স্কুল ও দুটি কলেজ সরকারীকরণ করা হবে। কৃষি ইনস্টিটিউটেই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। চলতি মাসের মধ্যে খুলনা অঞ্চলের সব সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। তিনি খুলনাবাসীকে হতাশ না হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
উন্নয়নকর্মী শামীমা সুলতানা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে খুলনায় ব্যাপক ও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হবে—এ বিবেচনায় এ অঞ্চলের মানুষ বিপুল ভোটে তাদের বিজয়ী করেছিল। কিন্তু গত তিন বছরে মহাজোট সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অধিকাংশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় খুলনার মানুষ হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
ভৌত অবকাঠামো: গত সাধারণ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও রাজধানীর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগের জন্য পদ্মা সেতু নির্মাণ, ২০১১ সালের মধ্যে পাইপলাইনের মাধ্যমে খুলনায় গ্যাস সরবরাহ, বিমানবন্দরের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করা এবং খুলনায় আধুনিক রেলস্টেশন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেয়।
এর মধ্যে বাগেরহাটের রামপালের ফয়লা এলাকায় বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কার্যক্রম কয়েক বছর আগে শুরু হয়। কিন্তু বর্তমানে মাটি ভরাটসহ অন্যান্য কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা ব্যয় ধরে ২০০৭ সালে খুলনা রেলস্টেশন আধুনিকায়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে।
এ ছাড়া দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় খুলনা-যশোর, খুলনা-সাতক্ষীরা, খুলনা-মংলা মহাসড়ক, খুলনা-পাইকগাছা সড়ক অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খুলনা-মংলা রেললাইন স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এখনো কাজ শুরু হয়নি।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থেকে খুলনায় পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। ২০১১ সালের শেষ নাগাদ এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মহাজোট। সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন বসানোর কাজ কেবল শুরু হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিকেন্দ্র (আইটি ভিলেজ) স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখনো জায়গা নির্ধারিত হয়নি।
শিক্ষা: খুলনায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, তিনটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজ ও খালিশপুর মুহসীন কলেজকে সরকারীকরণের বিষয়টি প্রতিশ্রুতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।
স্বাস্থ্য: ৫০ শয্যার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার বিষয়টি প্রতিশ্রুতিতেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ৫০০ শয্যায় উন্নীত হলেও শয্যাসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল ও আনুষঙ্গিক সুবিধা বাড়ানো হয়নি।
কলকারখানা চালুর উদ্যোগ: খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস, দৌলতপুর জুট মিলস, পিপলস জুট মিলসসহ বন্ধ হয়ে যাওয়া রাষ্ট্রায়ত্ত সব কলকারখানা চালু করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে পিপলস জুট মিলস চালু হয়েছে। খুলনা নিউজপ্রিন্ট ও দৌলতপুর জুট মিলস চালু করার ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। বন্ধ থাকা দাদা ম্যাচ ফ্যাক্টরি চালুর জন্য সরকার কারখানাটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে এটি কবে চালু হবে, তা কেউ বলতে পারছে না।
বন্দরে ড্রেজিংয়ে দরপত্র: মংলা বন্দরে ড্রেজিং, অটোমেশনসহ আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনো তেমন কোনো অগ্রগতি চোখে পড়ে না। খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, মংলা বন্দরকে গতিশীল ও আধুনিকায়ন করতে ১২০ কোটি টাকার ড্রেজিং প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।
তবু আশ্বাস মেয়রের: খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে খুলনার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে পিপলস জুট মিলস ও শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। দৌলতপুর জুট মিলস আগামী দু-এক মাসের মধ্যে চালু হবে। নিউজপ্রিন্ট মিলসও চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মেয়র আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত খুলনার তিনটি স্কুল ও দুটি কলেজ সরকারীকরণ করা হবে। কৃষি ইনস্টিটিউটেই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। চলতি মাসের মধ্যে খুলনা অঞ্চলের সব সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। তিনি খুলনাবাসীকে হতাশ না হয়ে সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
No comments