হাসপাতালে কর্মচারী নিয়োগে কোটা দাবি সাত ট্রাকভর্তি লোক নিয়ে হাসপাতালে চড়াও সংঘর্ষ, অর্ধশত আহত-রংপুর মেডিকেলে সাংসদের তাণ্ডব
কর্মচারী নিয়োগে কোটা বরাদ্দের দাবিতে সাংসদ হোসেন মকবুল শাহরিয়ার (আসিফ শাহরিয়ার) গতকাল শনিবার সাত ট্রাকভর্তি কর্মী-সমর্থক নিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের দপ্তর ঘেরাও করতে যান। কর্মী-সমর্থকদের হাতে ছিল কাঁচা বাঁশের লাঠি। এ সময় হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে জাতীয় পার্টির ওই সাংসদসহ অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রথমে ছবি তুলতে গেলে হাসপাতাল চত্বরে সাতজন সাংবাদিককে বাঁশ দিয়ে পেটান সাংসদের কর্মীরা। সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করে। একপর্যায়ে হাসপাতালের কর্মচারীরা এসে ধাওয়া দেন সাংসদ ও তাঁর লোকদের। হাসপাতালের ভেতরে চলে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ। একপর্যায়ে শাহরিয়ারকে মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটান কয়েকজন ক্ষুব্ধ কর্মচারী।
এ ঘটনায় ১২ পুলিশ, সাত সাংবাদিক, হাসপাতালের কর্মচারী, জাতীয় পার্টির সমর্থকসহ অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বরে হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ১৮১টি কর্মচারী পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৯০০ জন। ২৩ জানুয়ারি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়। কিছুদিন আগে মহানগর আওয়ামী লীগ ও মেডিকেল কলেজের নামধারী ছাত্রলীগের নেতারা ৭০ জন কর্মচারী নিয়োগের কোটা দাবি করেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় কলেজে ধর্মঘটও পালন করে ছাত্রলীগ। পরিচালকসহ হাসপাতালে কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখান ছাত্রলীগ নামধারীরা। এ নিয়ে হাসপাতাল ও কলেজে চলছিল উত্তেজনা।
এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনের সাংসদ ও দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ারও ৪০ জন কর্মচারী নিয়োগে কোটা দাবি করেন। কিন্তু এতে রাজি হননি হাসপাতালের পরিচালক। এতে ক্ষুব্ধ হন সাংসদ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গতকাল বেলা একটার দিকে শাহরিয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ শতাধিক কর্মী-সমর্থক বাঁশের লাঠি হাতে হাসপাতালে ঢুকে পড়েন। তাঁরা কর্মচারী নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ এনে পরিচালকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করতে থাকেন। বেলা সোয়া একটার দিকে বিক্ষোভকারীদের ছবি তুলতে গেলে সাত সাংবাদিককে পেটান শাহরিয়ারের লোকজন। এতে দেশ টিভির সাংবাদিক আবু আসলাম, চ্যানেল আইয়ের জনি, সময় টিভির আরমান, স্থানীয় পত্রিকা রংপুরচিত্র-এর আফতাবুজ্জামান, প্রথম আলোর মঈনুল ইসলাম, করতোয়ার আলী হায়দার, দৈনিক আজ ও আগামীকাল-এর শাকিল আহমেদ আহত হন। তাঁদের মধ্যে আবু আসলামের অবস্থা গুরুতর।
সংঘর্ষ শুরু হলে কর্মচারীদের ধাওয়া খেয়ে সাংসদ শাহরিয়ার হাসপাতালের পাশে অবস্থিত কলেজে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন। খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা তাঁকে সেখান থেকে বের করে মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটান। তখন কয়েকজন সমর্থক তাঁকে জড়িয়ে ধরে রক্ষার চেষ্টা করেন।
পরে পুলিশ এসে রক্তাক্ত অবস্থায় সাংসদকে উদ্ধার করে। গত রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসারত ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানান, শাহরিয়ারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত আছে। মাথা ফেটে গেছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আনিছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কর্মচারী নিয়োগে কোটা বরাদ্দের দাবিতে এভাবে হাসপাতালে ট্রাকে করে লোকজন নিয়ে এসে বিক্ষোভ এটিই প্রথম। তাঁরা লাঠি নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে মিছিল করে ত্রাস সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে প্রবেশের পথে কর্মচারীরা অবস্থান নেন। কিন্তু সাংসদের সমর্থকেরা কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বাধে।
হাসপাতালের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাংসদ শাহরিয়ার ৪০ জন কর্মচারী নিয়োগের কোটা চেয়েছিলেন। এটি দেওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি ট্রাকে করে লোকজন নিয়ে এসে হাসপাতাল জিম্মি করেন এবং হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাণ্ডব চালান।’
হাসপাতালের পরিচালক অভিযোগ করেন, এর আগে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারাও কর্মচারী নিয়োগে কোটা চেয়েছিলেন। অযৌক্তিক কোটা দেওয়া হয়নি বলে তাঁরাও নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু নিয়োগে কোনো অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে আহতাবস্থায় সাংসদ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘হাসপাতালে নিয়োগ-বাণিজ্যের প্রতিবাদে আমি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য লোকবল নিয়ে পরিচালকের কাছে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি ভয়ে পালিয়ে গেলেও রক্ষা পাইনি। তারা আমাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে মারধর করে।’
লাঠিসোঁটা ও ট্রাক নিয়ে কর্মী-সমর্থক এনে হাসপাতালে বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি সাংসদ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘কীভাবে কী হলো, কিছুই জানি না। এখানে তো মূল হোতারা ধরা পড়বে না। এ কারণে আমি মামলাও করব না।’
গতকাল সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলাকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল, এমপি লোকবল নিয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করতে আসবেন। এ কারণে সকাল থেকে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে যা হয়েছে, তা তো আপনারা দেখলেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
এ ঘটনায় ১২ পুলিশ, সাত সাংবাদিক, হাসপাতালের কর্মচারী, জাতীয় পার্টির সমর্থকসহ অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়। আতঙ্কে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন দিগ্বিদিক ছুটতে থাকেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ডিসেম্বরে হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর ১৮১টি কর্মচারী পদের বিপরীতে আবেদন করেন ৯০০ জন। ২৩ জানুয়ারি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়। কিছুদিন আগে মহানগর আওয়ামী লীগ ও মেডিকেল কলেজের নামধারী ছাত্রলীগের নেতারা ৭০ জন কর্মচারী নিয়োগের কোটা দাবি করেন। দাবি পূরণ না হওয়ায় কলেজে ধর্মঘটও পালন করে ছাত্রলীগ। পরিচালকসহ হাসপাতালে কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখান ছাত্রলীগ নামধারীরা। এ নিয়ে হাসপাতাল ও কলেজে চলছিল উত্তেজনা।
এ অবস্থায় জাতীয় পার্টির রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনের সাংসদ ও দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ভাতিজা আসিফ শাহরিয়ারও ৪০ জন কর্মচারী নিয়োগে কোটা দাবি করেন। কিন্তু এতে রাজি হননি হাসপাতালের পরিচালক। এতে ক্ষুব্ধ হন সাংসদ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গতকাল বেলা একটার দিকে শাহরিয়ারের নেতৃত্বে পাঁচ শতাধিক কর্মী-সমর্থক বাঁশের লাঠি হাতে হাসপাতালে ঢুকে পড়েন। তাঁরা কর্মচারী নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ এনে পরিচালকের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ-মিছিল করতে থাকেন। বেলা সোয়া একটার দিকে বিক্ষোভকারীদের ছবি তুলতে গেলে সাত সাংবাদিককে পেটান শাহরিয়ারের লোকজন। এতে দেশ টিভির সাংবাদিক আবু আসলাম, চ্যানেল আইয়ের জনি, সময় টিভির আরমান, স্থানীয় পত্রিকা রংপুরচিত্র-এর আফতাবুজ্জামান, প্রথম আলোর মঈনুল ইসলাম, করতোয়ার আলী হায়দার, দৈনিক আজ ও আগামীকাল-এর শাকিল আহমেদ আহত হন। তাঁদের মধ্যে আবু আসলামের অবস্থা গুরুতর।
সংঘর্ষ শুরু হলে কর্মচারীদের ধাওয়া খেয়ে সাংসদ শাহরিয়ার হাসপাতালের পাশে অবস্থিত কলেজে গিয়ে লুকিয়ে থাকেন। খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ কর্মচারীরা তাঁকে সেখান থেকে বের করে মাটিতে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটান। তখন কয়েকজন সমর্থক তাঁকে জড়িয়ে ধরে রক্ষার চেষ্টা করেন।
পরে পুলিশ এসে রক্তাক্ত অবস্থায় সাংসদকে উদ্ধার করে। গত রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসারত ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানান, শাহরিয়ারের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত আছে। মাথা ফেটে গেছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আনিছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, কর্মচারী নিয়োগে কোটা বরাদ্দের দাবিতে এভাবে হাসপাতালে ট্রাকে করে লোকজন নিয়ে এসে বিক্ষোভ এটিই প্রথম। তাঁরা লাঠি নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে মিছিল করে ত্রাস সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে প্রবেশের পথে কর্মচারীরা অবস্থান নেন। কিন্তু সাংসদের সমর্থকেরা কর্মচারীদের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষ বাধে।
হাসপাতালের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সাংসদ শাহরিয়ার ৪০ জন কর্মচারী নিয়োগের কোটা চেয়েছিলেন। এটি দেওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি ট্রাকে করে লোকজন নিয়ে এসে হাসপাতাল জিম্মি করেন এবং হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাণ্ডব চালান।’
হাসপাতালের পরিচালক অভিযোগ করেন, এর আগে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতারাও কর্মচারী নিয়োগে কোটা চেয়েছিলেন। অযৌক্তিক কোটা দেওয়া হয়নি বলে তাঁরাও নিয়োগ-প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু নিয়োগে কোনো অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে আহতাবস্থায় সাংসদ শাহরিয়ার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘হাসপাতালে নিয়োগ-বাণিজ্যের প্রতিবাদে আমি স্মারকলিপি দেওয়ার জন্য লোকবল নিয়ে পরিচালকের কাছে যাচ্ছিলাম। কিন্তু কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি ভয়ে পালিয়ে গেলেও রক্ষা পাইনি। তারা আমাকে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে মারধর করে।’
লাঠিসোঁটা ও ট্রাক নিয়ে কর্মী-সমর্থক এনে হাসপাতালে বিক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে কোনো জবাব দেননি সাংসদ শাহরিয়ার। তিনি বলেন, ‘কীভাবে কী হলো, কিছুই জানি না। এখানে তো মূল হোতারা ধরা পড়বে না। এ কারণে আমি মামলাও করব না।’
গতকাল সকাল থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলাকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল, এমপি লোকবল নিয়ে হাসপাতাল ঘেরাও করতে আসবেন। এ কারণে সকাল থেকে হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে যা হয়েছে, তা তো আপনারা দেখলেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’
No comments